করোনাভাইরাস প্রতিরোধী রাশিয়ার টিকা স্পুৎনিক-ভির মতো চীনের টিকা সিনোভ্যাকের উৎপাদনও হবে বাংলাদেশে।
সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে চীন ও রাশিয়ার প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের কয়েকটি কোম্পানি টিকা তৈরি করবে।
অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বুধবারের বৈঠকে বিষয়টির নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠক শেষে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল।
বাংলাদেশের স্থানীয় কোম্পানির সঙ্গে যৌথভাবে চীন ও রাশিয়া এসব টিকা তৈরি করবে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।
তবে স্থানীয় কোন কোন কোম্পানির সঙ্গে দেশ দুটি টিকা উৎপাদন করবে তা জানাননি মুস্তাফা কামাল।
ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে করোনা টিকার ৩ কোটি ডোজ কিনতে গত বছরের নভেম্বরে চুক্তি করে বাংলাদেশ। এর আওতায় দুই চালানে ৭০ লাখ ডোজ বাংলাদেশ হাতে পেয়েছে।
ভারত সরকারের দুই দফা উপহারের ৩২ লাখ ডোজ মিলে ১ কোটি ২ লাখ ডোজ টিকা আসে দেশে। এ পর্যন্ত প্রায় ৬০ লাখ মানুষ প্রথম ডোজের টিকা পেয়েছে। দ্বিতীয় ডোজ দেয়ার জন্য রাখা হয়েছে ৪২ লাখ টিকা।
বিশ্বব্যাপী করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ভারত নিজস্ব চাহিদার কথা বিবেচনা করে সিরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত অক্সফোর্ডের টিকার রপ্তানি গত ২৪ মার্চ স্থগিত করে। ভারত সরকারের এ সিদ্ধান্তের ফলে আগামী এপ্রিলের শেষ পর্যন্ত টিকা রপ্তানিতে বিলম্ব হতে পারে।
কোভ্যাক্সের আওতায় ১৮০টি দেশও সিরাম উৎপাদিত টিকা পাবে। কিন্তু রপ্তানি স্থগিত হওয়ায় এসব দেশও টিকা পাচ্ছে না। ফলে সিরামের কাছ থেকে টিকার নতুন চালান পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
এই সংকট কাটাতে টিকার বিকল্প উৎস খুঁজছে বাংলাদেশ। এর অংশ হিসেবে রাশিয়ার পাশাপাশি চীন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও যোগাযোগ করছে সরকার।
রাশিয়া ও চীন সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে টিকা তৈরির প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ সরকারকে। এর অংশ হিসেবে বুধবার অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ সংক্রান্ত দর প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. শাহিদা আকতার সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাংলাদেশের কোন কোম্পানি এসব টিকা তৈরি করবে সে বিষয়ে আলোচনা হয়নি। তবে যেসব কোম্পানি এ ধরনের টিকা উৎপাদনে সক্ষম, তাদের সঙ্গে চুক্তি করা হবে।’
তিনি জানান, প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশ চীন ও রাশিয়াকে কত টাকা দেবে সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আলোচনা চলছে। শিগগিরই এসব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এর আগে মঙ্গলবার স্পুৎনিক-ভি টিকা জরুরি ব্যবহারে অনুমোদনের সুপারিশের এক ঘণ্টা মধ্যে চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।
ওই দিন দুপুর দেড়টায় সংবাদ সম্মেলনে ঔষধ প্রশাসনের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘টেকনিক্যাল কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে জরুরি প্রয়োজনে এই টিকা ব্যবহারের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।’
এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জরুরি বৈঠকে স্পুৎনিক-ভি টিকার প্রয়োগের বিষয়ে সুপারিশ করে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের টেকনিক্যাল কমিটি।
এই টিকা বাংলাদেশেই উৎপাদন হবে। ফর্মুলা গোপন রাখার শর্তে রাশিয়া ও বাংলাদেশ এ বিষয়ে আগেই সমঝোতা চুক্তি করেছে।