বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন বা ব্যালেন্স শিট চূড়ান্ত করতে এবারও ৩০ জুন পর্যন্ত সময় পাচ্ছে ব্যাংকগুলো।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে চলমান লকডাউনে সীমিত পরিসরে চলছে ব্যাংকিং কার্যক্রম। এ কারণে বার্ষিক আর্থিক লাভ-ক্ষতির প্রতিবেদন চূড়ান্ত করতে জুন পর্যন্ত সময় পেল ব্যাংকগুলো। সরকারের সঙ্গে পরামর্শ করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বুধবার এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠিয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকারের সঙ্গে পরামর্শ করে এপ্রিলের মধ্যে বার্ষিক প্রতিবেদন জমা দেয়ার বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০২০ সালের বার্ষিক নিরীক্ষা প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত সময় দেয়া হলো।
আইন অনুযায়ী, এক বছরের আর্থিক চূড়ান্ত প্রতিবেদন পরের বছরের এপ্রিলের মধ্যে চূড়ান্ত করতে হয়। এর বেশি সময় প্রয়োজন হলে আদালত থেকে অনুমোদন নিতে হয়। এবার সময় বাড়ানোয় ব্যাংকগুলো বাড়তি আরও দুই মাস সময় পেল।
সময় বাড়ানোয় শেয়ারধারীদের লভ্যাংশ বিতরণও পেছাবে।
ব্যাংক কোম্পানি আইনে উল্লেখ আছে, ব্যাংকগুলোর নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন বছর শেষ হওয়ার দুই মাসের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দিতে হয়।
তবে শর্ত থাকে যে, বাংলাদেশ ব্যাংক বিবরণী জমার সময়সীমা অনধিক দুই মাস পর্যন্ত বাড়াতে পারবে। ব্যাংক কোম্পানি আইনের এই ধারার কারণে সাধারণভাবে বাংলাদেশ ব্যাংক এপ্রিলের পর আর সময় বাড়াতে পারে না।
এবার করোনা সংক্রমণ হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় ব্যাংকিং কার্যক্রম সীমিত করা হয়েছে। আগের হিসাবে প্রতিবেদন জমা দিতে হলে ব্যাংকগুলো আর দুই দিন বাকি। কিন্তু ব্যাংকগুলো এখনও প্রতিবেদন তৈরি করতে পারেনি।
এ কারণে প্রতিবেদন তৈরির সময় বৃদ্ধির সুপারিশ জানিয়ে ২২ এপ্রিল অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে চিঠি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
চিঠিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, করোনাভাইরাসজনিত রোগ প্রতিরোধে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ২০ এপ্রিল সীমিত আকারে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করতে বলেছে। ব্যাংকগুলো সে অনুযায়ীই পরিচালিত হচ্ছে। সরকারঘোষিত বিধিনিষেধের কারণে অধিকাংশ ব্যাংকের পক্ষে বার্ষিক নিরীক্ষা প্রতিবেদন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেয়া সম্ভব হবে না।
বাংলাদেশ ব্যাংক আরও বলেছে, প্রতিবেদন জমার জন্য ব্যাংকগুলোকে ৩০ জুন পর্যন্ত সময় দেয়ার প্রয়োজনীয়। এরপর আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সম্মতির চিঠি পেয়ে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
জানা গেছে, একটি ব্যাংকের আর্থিক প্রতিবেদন চূড়ান্তে বাংলাদেশ ব্যাংক, নিরীক্ষক ও সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের অনুমোদন প্রয়োজন হয়, ত্রিপক্ষীয় সভাও অনুষ্ঠিত হয়। করোনার কারণে বেশির ভাগ ব্যাংকের সেই অনুমোদন হয়নি, বাংলাদেশ ব্যাংকও তাদের পরিদর্শন কার্যক্রম শেষ করতে পারেনি। এ কারণেই প্রতিবেদন চূড়ান্তে সময় বাড়ানো হয়েছে।