করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ সামলাতে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে আরোপ করা বিধিনিষেধের মধ্যে বিশেষ বিবেচনায় ফ্লাইটের অনুমতি পেল দেশি তিনটি এয়ারলাইন্স।
মঙ্গলবার রাতে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) সার্কুলারে এ অনুমতি দেয়া হয়।
এতে বলা হয়, ২৯ এপ্রিল থেকে দেশি তিন এয়ারলাইন্স বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ইউএস বাংলা এয়ার এবং নভো এয়ার বিশেষ পরিস্থিতিতে ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারবে। এই অবস্থা ৫ মে পর্যন্ত চলবে।
এর আগে, করোনার কারণে জারি করা আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে বিধিনিষেধ ৫ মে পর্যন্ত বৃদ্ধি করে আরও একটি সার্কুলার জারি করে বেবিচক। এতে বলা হয়, ঢাকা থেকে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, কাতার, চীন, সিঙ্গাপুর, কুয়েত ও বাহরাইনে বিশেষ ব্যবস্থায় ফ্লাইট চলাচল করবে। অবশ্য ওমান সরকার বাংলাদেশ থেকে দেশটির সঙ্গে আকাশপথ বন্ধ করায় দেশটিতে আপাতত ঢাকা থেকে কোনো ফ্লাইট চলাচল করছে না।
দেশি তিন এয়ারলাইন্সের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার ফলে এখন মোট ১৬টি দেশি-বিদেশি এয়ারলাইন্স ঢাকা থেকে যাত্রী পরিবহন করার সুযোগ পাবে।
এগুলো হলো বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস, নভো এয়ার, সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইনস, ওমান এয়ার, সালাম এয়ার, কাতার এয়ারওয়েজ, এমিরেটস, ইতিহাদ, জাজিরা এয়ার, চায়না ইস্টার্ন, চায়না সাউদার্ন, এয়ার অ্যারাবিয়া, এয়ার অ্যারাবিয়া আবুধাবি ও ফ্লাই দুবাই।
সন্ধ্যায় বেবিচক চেয়ারম্যান এম মফিদুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা ফ্লাইট চালুর বিষয়টি নিয়ে এখনও আলোচনা করছি। তবে আমাদের সিদ্ধান্ত হচ্ছে লকডাউন যেহতু সাতদিন বৃদ্ধি করা হয়েছে, এ জন্য ফ্লাইট চলাচলের বিধিনিষেধও পরবর্তী সাত দিনের জন্য অব্যাহত থাকবে।’
করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সরকার শুরুতে ৫ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত নানা বিধিনিষেধ আরোপ করে। সেই সময় অন্যান্য আন্তজেলা পরিবহনগুলোর মতো বন্ধ করা হয় আভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চলাচল। পরে এ নিষেধাজ্ঞা আরও দুই দিন বাড়িয়ে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়। তবে সরকারি-বেসরকারি অফিস, শিল্পকারখানা, গণপরিবহন চালু থাকায় তা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে খুব একটা কাজে আসেনি।
এই প্রেক্ষাপটে ১৪ এপ্রিল থেকে কঠোর বিধিনিষেধের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। প্রথমে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত এই অবস্থা চলার কথা থাকলেও পরে তা বৃদ্ধি করা হয় ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত। এতেও সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে না আসায় ‘সর্বাত্মক লকডাউনের’ মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে ৫ মে পর্যন্ত।
কঠোর বিধিনিষেধের কারণে ১৪ এপ্রিল থেকেই আন্তর্জাতিক সব যাত্রীবাহী ফ্লাইট বন্ধ। তবে চিকিৎসা, পণ্যবাহী ও বিশেষ ফ্লাইটকে নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। অবশ্য পরে প্রবাসী শ্রমিকদের কথা বিবেচনায় রেখে এর আগে আটটি দেশে শতাধিক বিশেষ ফ্লাইট অনুমোদন দেয় সরকার। আর ২১ এপ্রিল থেকে সীমিত পরিসরে আভ্যন্তরীণ রুটেও ফ্লাইট চলাচলের অনুমতি দেয় বেবিচক।