বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মার্জিন ঋণের সুদ কমছে না চলতি বছর

  •    
  • ২৭ এপ্রিল, ২০২১ ২০:৫৭

বিএসইসি মার্জিন ঋণের সুদহার ১২ শতাংশ বেঁধে দিয়ে যে নির্দেশনা দিয়েছিল, সেটি আগামী ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে। গত ১৪ জানুয়ারি সুদহার কমিয়ে দেয়ার আদেশ দেয়ার পর থেকে পুঁজিবাজারে দেখা দেয় নেতিবাচক প্রবণতা।  

ব্রোকারেজ হাউজ থেকে বিনিয়োগকারীদের ঋণের সুদহার চলতি বছর আর কমছে না। সর্বোচ্চ সুদহার ১২ শতাংশ নির্ধারণ করে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি যে নির্দেশনা দিয়েছিল, সেটি কার্যকরের তারিখ দ্বিতীয়বারের মতো পিছিয়ে ২০২২ সালের আগামী ১ জানুয়ারি করা হয়েছে।

গত ১৪ জানুয়ারি এক নির্দেশনায় বিএসইসি মার্জিন ঋণের সুদহার বেঁধে দেয়ার পাশাপাশি আমানত ও ঋণের সুদহারের মধ্যে সর্বোচ্চ ব্যবধান তিন শতাংশ বেঁধে দেয়। কথা ছিল এটি কার্যকর হবে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে।

তবে মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোজারেজ হাউজগুলোর আপত্তির পর ৭ মার্চ আরেক নির্দেশনায় জানানো হয় এই সুদহার কার্যকর হবে ১ জুলাই থেকে।

তবে বতর্মান করোনা মহামারি অবস্থায় আর্থিক খাতের ঝুঁকি ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা কমে আসতে পারে এমন বিষয়টি সামনে এসে তা আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

বিএসইসির এই সিদ্ধান্তে বিনিয়োগকারীরা খুশি হলেও পুঁজিবাজারে এর প্রভাব পড়ে নেতিবাচক।

মার্জিন ঋণের সুদহার কমানোর সিদ্ধান্তের দিন ১৪ জানুয়ারি পুঁজিবাজারে সূচক ছিল ৫ হাজার ৯০৯ পয়েন্ট। লেনদেন ছিল দুই হাজার কোটি টাকার বেশি। এরপর থেকে সূচক ও লেনদেন কমতে শুরু করে।

গত ১৪ জানুয়ারি মার্জিন ঋণের সুদহার কমানোর নির্দেশনা দেয়ার পর থেকেই পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রবণতা দেখা দেয়

এর কারণ, যারা বেশি সুদে ঋণ নেন, তাদের জুলাইয়ের মধ্যে সমন্বয় করতে হতো। এই অবস্থায় তারা হয় শেয়ার বিক্রি করছেন, নয় পকেট থেকে টাকা দিচ্ছেন। কিন্তু বেশির ভাগেরই নতুন করে টাকা দেয়ার সুযোগ কম। তাই তারা শেয়ার বিক্রি করছেন। এটাও সূচক কমার একটি কারণ ছিল বলেই মনে করেন পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা।

আবার বহু প্রতিষ্ঠান নতুন করে ঋণ দেয়া বন্ধ করে দেয়। পরে বিএসইসি মার্জিন ঋণের সীমা বাড়ানোর পরে অবশ্য পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়।

গত ৪ এপ্রিল বিএসইসি জানায়, পুঁজিবাজারের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৭ হাজার পয়েন্ট পর্যন্ত ১:০.৮ অনুপাতে ঋণ পাবেন বিনিয়োগাকরীরা। অর্থাৎ বিনিয়োগকারীর বিনিয়োগ ১০০ টাকা হলে তাকে শেয়ার কেনার জন্য ৮০ টাকা পর্যন্ত ঋণ দিতে পারবে সংশ্লিষ্ট ব্রোকারেজ হাউজ বা মার্চেন্ট ব্যাংক।

এর আগে প্রতি ১০০ টাকার বিপরীতে ৫০ টাকা করে ঋণ নিতে পারত ব্রোকারেজ হাউজগুলো। ঋণের সীমা বাড়ায় বহু বিনিয়োগকারীর পোর্টফোলিওতে নতুন করে ক্রয়াদেশ দেয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। ফলে বাড়তে থাকে লেনদেন।

মার্জিন ঋণ নিয়ে সিদ্ধান্ত পুঁজিবাজারে লেনদেনে কিছুটা প্রভাব ফেলেছে বলে সে সময় স্বীকার করেন মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর সিমিতি বাংলাদেশ মাচেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ছাইদুর রহমান।

সিদ্ধান্ত পালটাতে চাপ দিতে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো মার্জিন ঋণ দেয়া কমিয়ে দিয়েছে বা নিজেরা শেয়ার কেনা বন্ধ রেখেছে কি না, গত ১৯ মার্চ এমন প্রশ্ন ছিল তার কাছে।

জবাবে সেদিন তিনি বলেন, ‘সবকিছুরই ইতিবাচক-নেতিবাচক দিক আছে। যারা নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে উচ্চ সুদে ঋণ নিয়েছেন তারা কম করে কীভাবে ঋণ দেবে? এটা সমন্বয়ের সুযোগ রয়েছে।’

সুদহার কমানো নিয়ে মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের আপত্তির বিষয়ে সংগঠনের সভাপতি বলেন, ‘বিএসইসির যে নির্দেশনা দিয়েছে সেটি পরিপালনে আমাদের কোনো অনীহা নেই। আমাদের ১২ শতাংশ সুদে ঋণ দিতে হলে কম সুদের ফান্ড প্রয়োজন হবে। যখনই আমরা কম সুদের ঋণ নিতে পারব তখনই কেবল সর্বোচ্চ ১২ শতাংশের শর্তানুযায়ী ঋণ দেয়া সম্ভব হবে। এখনও অনেক প্রতিষ্ঠানের ১১ শতাংশের বেশি হারে ঋণ নেয়া আছে। সেটি এখন চাইলেই সমন্বয় করা সম্ভব নয়।’

তবে মার্চেন্ট ব্যাংক ব্র্যাক ইপিএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সাবেক গবেষণা কমর্কতা দেবব্রত কুমার সরকার মনে করেন, এটি প্রকৃত কারণ নয়। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দেশে বড় বড় যে কয়টি মার্চেন্ট ব্যাংক আছে তার সবকটিই কোনো না কোনো ব্যাংকের। ফলে তাদের জন্য ৯ শতাংশ বা তার কমে ঋণ পাওয়া অস্বাভাবিক কিছু না। ’

তবে আগের ঋণ সমন্বয়ন করতে এখন মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো প্রায় আটমাস সময় পাবে বলে বাজারে অস্থিরতা কমে আসবে বলে মনে করেন তিনি।

দেবব্রত বলেন, ‘বিনিয়োগকারীদের এখন মার্জিন ঋণের সুদ সমন্বয় করতে গিয়ে দ্রুত শেয়ার বিক্রি করতে হবে না। ফলে বিক্রয়ের চাপ কমবে।’

এ বিভাগের আরো খবর