বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ঈদ কেনাকাটায় প্রস্তুত দোকান, শঙ্কা মুভমেন্ট পাস

  •    
  • ২৪ এপ্রিল, ২০২১ ২১:৫৯

‘কাল থেইক্যা দোকান খুলব। আপনি ভালো কিছু লেখেন। দুই বছর আমরা ব্যবসায় ধরা খাইছি। এখানে অনেক ব্যবসায়ী আছে যারা এবার নতুন মাল তুলতে পারবে না। এই অবস্থায় আমরা নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে ব্যবসা করব। আপনারা এটা প্রচার করবেন। মানুষ যাতে মালপত্র কিনতে আসে।’

নয় দিন ধরে বন্ধ দোকানপাট, দোকানে জমেছে ধুলা। আবার করোনাভাইরাসের জীবাণু আছে কি না, সেই সংশয়।

অবশেষে দোকান খোলার অনুমতি মিলেছে। রোববার সকাল ১০টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত চালু থাকবে বিপণিবিতান।

আগের দিন বেলা ১১টার দিকে নিউমার্কেট গিয়ে দেখা গেল ব্যবসায়ীদের প্রস্তুতি। বলাকা সিনেমা হলের উল্টোপাশের গেট গিয়ে ভেতরে ঢুকতেই দেখা গেল শত শত মানুষের কর্মযজ্ঞ।

জীবাণুনাশক দিয়ে ধোয়া হচ্ছে মেঝে, দোকানের শাটার বা দরজার হাতলসহ চার দিকেই ছিটানো হচ্ছে নানা ‍উপকরণ।

দোকান মালিক, কর্মচারী, নিরাপত্তাকর্মী-সবাই হাত লাগাচ্ছন এই কাজে। জীবিকার প্রশ্ন সবারই।

একজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘কাল থেইক্যা দোকান খুলব। আপনি ভালো কিছু লেখেন। দুই বছর আমরা ব্যবসায় ধরা খাইছি। এখানে অনেক ব্যবসায়ী আছে যারা এবার নতুন মাল তুলতে পারবে না। এই অবস্থায় আমরা নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে ব্যবসা করব। আপনারা এটা প্রচার করবেন। মানুষ যাতে মালপত্র কিনতে আসে।’

সর্বাত্মক লকডাউনের কারণে গত ১৪ এপ্রিল থেকে নিত্যপণ্যের দোকান ছাড়া বন্ধ সব বিপণিবিতান। ঈদুল ফিতরের আগে ব্যবসার সবচেয়ে বড় মৌসুমে ক্ষতির মুখে ব্যবসায়ীরা। তাদের কথা চিন্তা করে নানা শর্ত যুক্ত করে রোববার থেকে দোকান খোলা রাখার সুযোগ করে দিয়েছে সরকার।

ব্যবসায়ীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরলেও তারা হতে পারছেন না শঙ্কামুক্তও। কারণ, গণপরিবহন বন্ধ থাকবে আগের মতোই। আবার মার্কেটমুখী যাতায়াতে ক্রেতাদের জন্য পুলিশের মুভমেন্ট পাস রাখার বাধ্যবাধকতা প্রত্যাহার হয়নি। শ্রমিক বা ব্যবসায়ীরাও কীভাবে যাতায়াত করবে, সেই প্রশ্নও আছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, শুধু দোকান খোলা রাখলেই তো হবে না। কেনাকাটা সারতে ক্রেতাদের নির্বিঘ্নে মার্কেটমুখী হওয়াও লাগবে। কিন্তু মুভমেন্ট পাসের বাধ্যবাধকতা থাকলে অবাধ যাতায়াতে বাধা আসবে। তখন প্রত্যাশিত বেচাকেনা নাও হতে পারে।

বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির তথ্য বলছে, বর্তমানে দেশে ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৫৩ লাখ ৭২ হাজার ৭১৬টি। প্রতি প্রতিষ্ঠানে গড়ে দুই জন কর্মচারী ধরা হলে সংখ্যাটা দাঁড়ায় এক কোটি সাত লাখ। অর্থাৎ দোকানপাট খোলার ওপর সরকারের বিধি-নিষেধ ওঠে যাওয়ায় ঘর থেকে এই পরিমাণ লোক মার্কেটমুখী হবেন। আর প্রতিদিন কেনাকাটায় অংশ নেবেন কয়েক কোটি ক্রেতা।

আবার দোকান নির্দিষ্ট সময়ের জন্য খোলা থাকলে সেটি ঝুঁকি তৈরি করে বলেই মনে করেন নিউমার্কেটের এক ব্যবসায়ীল। তিনি বলেন, ‘সময় নির্দিষ্ট করলে সমস্যা। তখন ভিড় বেশি হইব। সময়টা বাড়িয়ে দিলে ভিড় কম হইব। বেচাকেনাও ভালো হইব। তাই বিকাল না রাইত পর্যন্ত খোলা রাখলেই সবার সুবিধা।’

দাবির মুখে দোকানপাট খোলে দেয়া হচ্ছে, স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনের নিশ্চয়তা কতটুকু জানতে চাইলে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সরকারের নির্দেশনা তো আছেই। দোকান মালিক সমিতিও প্রত্যেক ব্যবসায়ী, মার্কেট ও শপিংমল কর্তৃপক্ষকে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন সাপেক্ষেই ব্যবসা চালিয়ে যেতে বলেছে।’

কেউ অমান্য করলে দায় কার জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নির্দেশনার ব্যত্যয় ঘটলে সংশ্লিষ্ট মার্কেট কর্তৃপক্ষ এর জন্য দায়ী থাকবে। আইন অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট দোকানি ও মার্কেট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যাবে। দোকান মালিক সমিতি কাউকে সুরক্ষার কোনো রকম চেষ্টা করবে না। বরং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকেও সহায়তা দেবে।’

মুভমেন্ট পাস সম্পর্কে জানতে চাইলে হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘এটি কতদিন বহাল থাকে তা ২৮ এপ্রিলের পর আমরা পরিষ্কার হতে পারব। সেক্ষেত্রে পরিস্থিতি বুঝে পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।’

তার মতে, মুভমেন্ট পাস কোনো বাধা হবে না। এটা লকডাউনের শুরুতেও ছিল। এখনও আছে। তা সত্বেও মানুষ কিন্তু প্রয়োজনে ঘর থেকে বেরিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘এখন আপনি রাস্তার দিকে তাকান। দেখবেন হাজার হাজার গাড়ি। লাখ লাখ লোকও রাস্তায় আছে। গন্তব্যে আসছে-যাচ্ছে। এক্ষেত্রে মুভমেন্ট পাস খুব একটা বাধা হচ্ছে না।’

গত শুক্রবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ঈদকে সামনে রেখে দেশের অর্থনীতি সচল রাখতে এবং ক্ষুদ্র ব্যবসাযী ও নিম্ন আয়ের মানুষের জীবন-জীবিকার বিষয়টি গুরত্ব দিয়ে চলমান লকডাউনে দোকাপাট, শপিংমল ও মার্কেট খোলার ওপর বিধিনিষেধ তুলে নেয়া হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সকাল ১০টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত কঠোর স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন সাপেক্ষে দোকানপাটও শপিং মল খোলা রাখা যাবে।

স্বাস্থ্যবিধি মানা না হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ারও হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।

এ বিভাগের আরো খবর