আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধের মধ্যে বিশেষ বিবেচনায় এবার কুয়েত ও বাহরাইনের সঙ্গে আকাশপথ খুলল বাংলাদেশ।
শুক্রবার বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) এ-সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে।
এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশি যাত্রীদের প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করে কুয়েতের জাজিরা এয়ারকে ঢাকা থেকে ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দেয়া হয়েছে। অবশ্য এ জন্য বেশ কিছু শর্তও দিয়েছে বেবিচক।
শর্ত অনুযায়ী, শুধু পয়েন্ট টু পয়েন্ট যাত্রী বহন করা যাবে। করোনার টিকা নেয়া থাকলেও যাত্রীদের যাত্রার নির্ধারিত সময়ের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কোভিড পরীক্ষা সম্পন্ন করে নেগেটিভ সনদ নিতে হবে। এ ছাড়া বিশেষ বিবেচনায় বাংলাদেশে আসা যাত্রীদের ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে হবে।
কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থাপনা সম্বন্ধে নিশ্চিত হয়ে এয়ারলাইনসগুলোকে যাত্রীদের বোর্ডিং পাস ইস্যু করতে নির্দেশ দিয়েছে বেবিচক। ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া মাঝারি আকারের উড়োজাহাজে যাত্রী বহনে কোনো সংখ্যা নির্দিষ্ট করা না হলেও সুপরিসর উড়োজাহাজে সর্বোচ্চ নেয়া যাবে ২৮০ যাত্রী।
আর বোয়িং ট্রিপল সেভেন বা সেভেন ফোর সেভেন উড়োজাহাজের ক্ষেত্রে এ সংখ্যা সর্বোচ্চ ৩২০ জন। আর ঢাকায় আসা মাঝারি আকারের উড়োজাহাজে ১০০ জন যাত্রী বহন করা যাবে। আর সুপরিসর উড়োজাহাজে এ সংখ্যা ১৫০।
এ ছাড়া উড়োজাহাজের ইকোনমি ক্লাসে একটি সারি ও বিজনেস ক্লাসে একটি কেবিন সন্দেহভাজন করোনা আক্রান্ত যাত্রীর জন্য রাখতে বলা হয়েছে। এই অবস্থা ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত বলবৎ থাকবে বলে জানানো হয়েছে চিঠিতে।
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সরকার প্রথমে ৫ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত নানা বিধিনিষেধ আরোপ করে। পরে এ নিষেধাজ্ঞা আরও দুই দিন বাড়িয়ে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়। তবে সরকারি-বেসরকারি অফিস, শিল্পকারখানা, গণপরিবহন চালু থাকায় তা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে খুব একটা কাজে আসেনি।
এই প্রেক্ষাপটে ১৪ এপ্রিল থেকে কঠোর বিধিনিষেধের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। প্রথমে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত এই অবস্থা চলার কথা থাকলেও সোমবার বিধিনিষেধ ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত বৃদ্ধি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
কঠোর বিধিনিষেধের কারণে ১৪ এপ্রিল থেকেই বন্ধ রয়েছে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক সব যাত্রীবাহী ফ্লাইট। তবে চিকিৎসা, পণ্যবাহী ও বিশেষ ফ্লাইটকে নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে রাখা হয়েছে।
অবশ্য পরে প্রবাসী কর্মীদের কথা বিবেচনায় রেখে এর আগে ছয়টি দেশে শতাধিক বিশেষ ফ্লাইট অনুমোদন দেয় সরকার। দেশগুলো হলো সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, কাতার, চীন ও সিঙ্গাপুর। সর্বশেষ এ তালিকায় কুয়েত ও বাহরাইন যুক্ত হওয়ায় ঢাকা থেকে আটটি দেশে ফ্লাইট চলাচলে বাঁধা কাটল।
অবশ্য ওমান সরকার বাংলাদেশ থেকে দেশটির সঙ্গে আকাশপথ বন্ধ করায় দেশটিতে আপাতত ঢাকা থেকে কোনো ফ্লাইট চলাচল করছে না। রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমানসহ বেশ কয়েকটি দেশি-বিদেশি এয়ারলাইনস যাত্রী বহনের সুযোগ পাচ্ছে।
এগুলো হলো ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস, সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইনস, ওমান এয়ার, সালাম এয়ার, কাতার এয়ারওয়েজ, এমিরেটস, ইতিহাদ, চায়না ইস্টার্ন, চায়না সাউদার্ন, এয়ার অ্যারাবিয়া, এয়ার অ্যারাবিয়া আবুধাবি ও ফ্লাই দুবাই।