করোনাভাইরাস মহামারিতে বিভিন্ন পেশায় নিযুক্তদের সুরক্ষায় বাংলাদেশকে আরও ২৫ কোটি ডলার (২ হাজার ১০০ কোটি টাকা) ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক।
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার সংস্থাটির সঙ্গে একটি চুক্তি সই হয়েছে।
সরকারের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন ও বিশ্বব্যাংকের পক্ষে সংস্থাটির কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন চুক্তিতে সই করেন বলে জানিয়েছে ইআরডি।
এর আগে গত বছরের ২৬ জুন ওয়াশিংটনভিত্তিক বহুজাতিক ঋণদানকারী সংস্থাটির বোর্ড সভায় এ ঋণ অনুমোদন করা হয়।
চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়, উপার্জনক্ষম মানুষের চাকরি যেন সরকার সুরক্ষা দিতে পারে এবং করোনাকালীন সংকটেও সরকার যেন কর্মজীবী মানুষকে নিয়মিত বেতন দিতে পারে, মূলত সে উদ্দেশ্যেই ঋণ দেয়া হচ্ছে। এ ঋণের সুফল পাবেন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারাও।
বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, এ ঋণ ব্যবসা ও বিনিয়োগ নীতি আধুনিকীকরণ, শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং তরুণ, নারী ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে কাজে প্রবেশের সুযোগ করে দেবে। সব মিলিয়ে ৫০ লাখের বেশি মানুষের চাকরির সুরক্ষায় ঋণটি সরকারকে সহায়তা করবে।
ইআরডি জানিয়েছে, তৃতীয় জবস ডেভেলপমেন্ট পলিসি ক্রেডিটের (জব-ডিবিসি) আওতায় বাংলাদেশকে এ ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। এর আগে দুই কিস্তিতে ঋণ দেয়া হয়েছে।
২০১৮-১৯ ও ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রথম দুই কিস্তিতে ২৫ কোটি ডলার করে ৫০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
ইআরডি সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন বলেন, ‘সরকার করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগণকে রক্ষায় দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে এবং প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক ব্যবসায় সুরক্ষার উদ্যোগ নিয়েছে। এ কর্মসূচি মানুষের চাকরি রক্ষা ও দরিদ্রের আয় অব্যাহত রাখায় সরকারের কর্মসূচিকে সহায়তা করবে। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঝুঁকি মোকাবিলার ভিত তৈরি করতে সাহায্য করবে।’
বাংলাদেশ ও ভুটানে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন বলেন, ‘করোনা মহামারি দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ মানুষের জীবনে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এ মহামারি কর্মসংস্থান হারানোর ঝুঁকি বাড়িয়েছে। এ ঋণ করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের রক্ষায় সরকারের গৃহীত নীতিকে সহায়তা করবে এবং অধিক ও শোভন চাকরির পথ তৈরি করবে, যা বাংলাদেশের উচ্চ-মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যকে এগিয়ে নেবে।’
বিশ্বব্যাংকের সহযোগী সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আইডিএ) এ ঋণ ৩০ বছর মেয়াদি। এর গ্রেস পিরিয়ড পাঁচ বছর (এ সময় কোনো ঋণের কিস্তি বা সুদ পরিশোধ করতে হবে না)। ঋণের সুদ হার হবে ১ দশমিক ২৫ শতাংশ। সঙ্গে ব্যবহৃত ঋণের ওপর সার্ভিস চার্জ থাকবে শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ। পুরো অর্থ উত্তোলন করতে না পারলে অনুত্তোলিত অর্থের ওপর শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ হারে কমিটমেন্ট চার্জ প্রযোজ্য হবে।