মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোনের ২৪ তম বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) ২৭৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
সোমবার দেশের সবচেয়ে বড় এ মোবাইল অপারেটরের ২৪ তম এজিএমে এ সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়।
করোনাভাইরাস মহামারি পরিস্থিতিতে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী এবং উপস্থিত শেয়ারহোল্ডার, কর্মী ও অন্য সদস্যদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি বিবেচনা করে গত বছরের মতো এবারও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
গ্রামীণফোনের কোম্পানি সচিব এস এম ইমদাদুল হকের পরিচালনায় ভার্চুয়াল এজিএমে অংশ নেন গ্রামীণফোনের বোর্ড চেয়ারম্যান ইয়র্গেন সি. অ্যারেন্টজ রোস্ট্রাপকে, প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমানসহ বোর্ডের সদস্য এবং প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
জিপির প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান বলেন, ‘কোভিড-১৯ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আমাদের কর্মী ও সাপ্লাই চেইন পার্টনারদের সুরক্ষা নিশ্চিতের পাশাপাশি ২০২০ সালে দক্ষতার সাথে আমরা কার্যক্রম পরিচালনা করেছি।
‘সম্মুখসারির স্বাস্থ্যকর্মীদের সহায়তায়, সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ানো, লকডাউনে আমাদের নেটওয়ার্ক সক্রিয় রাখার ক্ষেত্রে সহযোগী হওয়ার জন্য আমরা সরকার, নিয়ন্ত্রক সংস্থা, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতি কৃতজ্ঞ।’
প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান অ্যারেন্টজ রোস্ট্রাপকে বলেন, ‘এ বছর আমাদের লক্ষ্য গ্রামীণফোনের দীর্ঘমেয়াদী টেকসই ব্যবসায়িক ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করা।
‘আমরা কোভিড উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রতিকূলতার সাথে মানিয়ে নিয়ে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের বিশ্বাস, যেসব বিষয়ের ওপর প্রতিষ্ঠান কাজ করছে তা উন্নত নেটওয়ার্ক অভিজ্ঞতা দান, প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত, উদ্ভাবন, আধুনিকীকরণ, সমাজের পাশে দাঁড়ানো এবং দায়িত্বশীল উপায়ে ব্যবসা পরিচালনায় সহায়তা করবে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বাধীনতার ৫০ বছর উদযাপন করছে এবং এর লক্ষ্য উচ্চ আয়ের দেশে পরিণত হওয়া। নিউ নরমালে গ্রাহকদের প্রয়োজন মেটানোর মাধ্যমে কানেক্টিভিটি পার্টনার হিসেবে বাংলাদেশের ভবিষ্যত সম্ভাবনা উন্মোচনে গ্রামীণফোন অবদান রাখতে প্রত্যাশী। গ্রামীণফোন এ ব্যাপারে সবসময়ই অঙ্গীকারবদ্ধ এবং একই সাথে শেয়ারহোল্ডার ও গ্রাহকদের ভ্যালু প্রদানেও আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
গ্রামীণফোনের পরিচালনা পর্ষদ ২০২০ সালের জন্য পরিশোধিত মূলধনের ১৪৫ শতাংশ হারে (১০ টাকার শেয়ারে ১৪.৫ টাকা প্রতি শেয়ার) চূড়ান্ত আর্থিক লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এ নগদ লভ্যাংশের পর পরিশোধিত মূলধনের মোট চূড়ান্ত লভ্যাংশের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৭৫ শতাংশ, যার মধ্যে রয়েছে পূর্ববর্তী ১৩০ শতাংশ অন্তর্বর্তীকালীন নগদ লভ্যাংশ। এ হিসাবে ২০২০ সালে কর পরবর্তী মুনাফা দাঁড়ায় ৯৮.৮৬ শতাংশ।
প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘চলতি বছর উন্নত কাভারেজ ও গ্রাহকদের প্রয়োজন মেটাতে গ্রামীণফোন তার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে দক্ষতা এবং সঠিক কৌশল নির্ধারণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এজন্য গ্রামীণফোন এ বছর স্পেক্ট্রাম অকশনে অংশগ্রহণ করে এবং অতিরিক্ত ১০.৪ মেগাহার্টজ স্পেক্ট্রাম অধিগ্রহণ করে।
এ ছাড়াও গ্রামীণফোন দেশজুড়ে ১৫,৫০০ ফোরজিসক্ষম টাওয়ারের ঘোষণা দেয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের ৫০ বছর উদযাপন করে। এর মাধ্যমে গ্রামীণফোন বাংলাদেশের ডিজিটাল যাত্রায় অবদান রাখার পাশাপাশি শহর ও গ্রামাঞ্চলে উচ্চগতির ইন্টারনেটের চাহিদা পূরণে আরও উন্নত অবস্থানে আরোহন করেছে।