১৭ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণার দিন গত ২৫ মার্চ প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সের দাম ছিল ৭৫ টাকা ৭০ পয়সা। সেই দাম এখন উঠেছে ১৩৯ টাকা ৩০ পয়সায়।
রেকর্ড ডেট বলে সোমবার কোম্পানিটির লেনদেন বন্ধ ছিল। তাই দাম কত হতো, সেটা বলার সুযোগ নেই। এদিন এই খাতের ৫০টি কোম্পানির মধ্যে দাম কমেছে কেবল ১টির। বাকিগুলোর মধ্যে ৫টির লেনদেন হয়নি। বাকি সবগুলোর দামই বেড়েছে।
এদিন সর্বাধিক দাম বাড়া ২২টি কোম্পানির মধ্যে বিমা খাতেরই ছিল ১৯টি।
গত বছর করোনা সংক্রমণের পর পুঁজিবাজারে লেনদেন স্থগিত করার পর যখন বাজার চালু হয় তখন এই চিত্র দেখা যায়। বিভিন্ন বিমা কোম্পানির শেয়ারমূল্য ৩ থেকে ৮ গুণ পর্যন্ত বেড়ে যায়।
তবে গত ফেব্রুয়ারি থেকে কমতে কমতে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারমূল্য ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কমতে দেখা গেছে।
করোনা পরিস্থিতিতে এবারও ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, খাদ্য, ওষুধ, প্রকৌশল খাতগুলো নিয়ে যখন বিনিয়োগকারীদের অনাগ্রহ স্পষ্ট তখন আবার বিমা খাতের এই চিত্র দেখা যাচ্ছে।
বিমায় ভর করেই চলতি সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস আর সব মিলিয়ে টানা পাঁচ দিন বাড়ল সূচক।
লকডাউনের আগে পতন হওয়া সূচক ফেরত
৮ এপ্রিল পুঁজিবাজারে সূচকের পতন হয়েছিল ৮২ পয়েন্ট। আর লডকাউন শুরুর আগে ১১ এপ্রিলও সূচকের পতন হয় ৯০ পয়েন্ট। ফলে দুদিনে পুঁজিবাজারে সূচকের পতন হয়েছিল ১৭২ পয়েন্ট।
এরপর প্রতিদিনই বাড়ছে সূচক। এই পাঁচ কার্যদিবসে পুঁজিবাজারের সূচক বেড়েছে মোট ১৮৩ পয়েন্ট।১২ এপ্রিল সূচক বাড়ে ২৩ পয়েন্ট, পরদিন ৭০ পয়েন্ট। ১৪ এপ্রিল পয়লা বৈশাখে সরকারি ছুটি শেষে ১৫ এপ্রিল সূচক বাড়ে ৫১ পয়েন্টে, ১৮ এপ্রিল বাড়ে ২১ পয়েন্ট। আজ সূচকে যোগ হলো ১৮ পয়েন্ট।
সর্বাধিক দর বৃদ্ধি পাওয়া ২২টি কোম্পানির মধ্যে বিমা খাতেরই ১৯টি।
আগ্রহ বিমায়
সোমবার লেনদেন এই সময়ে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ দেখা গেছে তালিকাভুক্ত বিমা খাতে। এ সময়ে বিমা খাতের ৫০টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৪৬টির। দর কমেছে মাত্র একটির। আর লেনদেন হয়নি ৪টি কোম্পানির।এক দিনে যতটা দাম বাড়া সম্ভব ততটাই বেড়েছে ইস্টার্ন, বিএনআইসিএল, এশিয়া, এশিয়া প্যাসিফিক, দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের।
ইসলামিক ইন্স্যুরেন্স, সোনারবাংলা ইন্স্যুরেন্স, ইউনাইটেড, এক্সপ্রেস, প্রগতি, ঢাকা, অগ্রতি, পাইওনিয়ার, পিপলস, ইস্টল্যান্ড, ফিনিক্স, প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের দামও বেড়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে।
এগুলোর মধ্যে শতকরা হিসাবে সবচেয়ে কম বেড়েছে প্রাইম; ৬ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
গত দুই কার্যদিবসে আগ্রহের তালিকায় থাকা মিউচ্যুয়াল ফান্ডের প্রতি আগ্রহ দেখা গেছে এদিনও। লেনদেন হওয়া ফান্ডগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১৫টির। দর কমেছে ১৬টির। আর পাল্টায়নি ৬টির। ব্যাংক খাতেও বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দর কমেছে। লেনদেন হওয়া ব্যাংকগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ৩টির। দর কমেছে ২০টির। দর পাল্টায়নি ৮টির।
বিশেষজ্ঞদের মন্তব্যলকডাউনের মধ্যেও পুঁজিবাজারের লেনদেন সন্তোষজনক উল্লেখ করে আবু আহমেদ বলেন, এ সময়ে বিনিয়োগকারীরা যে আতঙ্কে শেয়ার বিক্রি করেনি এটিই পুঁজিবাজারের প্রতি আস্থার প্রতিফলন। এ ধারা পুঁজিবাজারের লেনদেন হলে সব শ্রেণির বিনিয়োগকারী মুনাফা পাবেন।
তিনি বলেন, সরকার আবার লকডাউনে যাচ্ছে। বর্তমানেও লকডাউনের মধ্যেই লেনদেন চলছে। পুঁজিবাজারে বাংলাদেশ ব্যাংকের ওপর ভিত্তি করে লেনদেন পরিচালিত হচ্ছে। ভবিষ্যতে যে লকডাউন আসছে সেখানেও বাংলাদেশ ব্যাংক যে সিদ্ধান্ত নেবে তার ওপর ভিত্তি করেই পুঁজিবাজারের লেনদেন হবে। লেনদেন চললে বা বন্ধ হয়ে গেলে এতে আতঙ্কের কিছু নেই।
দিনের লেনদেন
সোমবার লেনদেনে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৮ দশমিক ৪৮ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৩৪৯ পয়েন্টে।
শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস ৪ দশমিক ৬৫ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২১৬ পয়েন্ট। বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক বেড়েছে ৬ দশমিক ৪৩ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১২৬টির, কমেছে ১৫২টির। দর পাল্টায়নি ৬৮টির। লেনদেন হয়েছে মোট ৬৯৭ কোটি টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৬০২ কোটি টাকা। এক দিনের ব্যবধানে লেনদেন বেড়েছে ৯৫ কোটি টাকা।চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৬৪ দশমিক ৫০ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৪৭৮ পয়েন্টে।লেনদেন হওয়া কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১০৮টির, কমেছে ১০৩টির। দর পাল্টায়নি ২৯টির। লেনদেন হয়েছে মোট ৩৪ কোটি টাকা।