বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্ভার ক্রটির কারণে টানা পাঁচদিন বন্ধ থাকার পর আন্তব্যাংক চেক লেনদেন নিষ্পত্তি হয়েছে। এ দিন রেকর্ড এক লাখ ৪৬ হাজার চেক নিষ্পত্তি হয়েছে।
তবে ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফারের (ইএফটি) মাধ্যমে টাকা আন্তব্যাংক ইলেকট্রনিক তহবিল স্থানান্তর করা যায়নি।
১৩ এপ্রিল থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বয়ংক্রিয় চেক প্রক্রিয়াকরণ ব্যবস্থা-বিএসিপিএস এবং ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে তহবিল স্থানান্তর নেটওয়ার্ক বা ইএফটিএন সার্ভারে ত্রুটির কারণে লেনদেন বাধাগ্রস্ত হয়ে ভোগান্তিতে পড়েন গ্রাহকরা।
করোনার কারণে বিধিনিষেধের মধ্যে এই বিষয়টি ভোগান্তি তৈরি করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকে আইটি বিপর্যয়ের কারণে ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফারের (ইএফটি) ও আন্তঃব্যাংক চেক লেনদেনে সমস্যা তৈরি হয়েছিল। রোববার থেকে চালু হয়েছে, এখন পুরোদমে কাজ চলছে।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘রোববার সকাল থেকেই আন্তব্যাংক চেক লেনদেন নিষ্পত্তি হয়েছে। তবে, ইএফটিএন সার্ভারে লেনদেন করা যায়নি। সোমবার থেকে ইএফটিএনের সমস্যাও ঠিক হবে।’
একাধিক ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোববার শুধু চেক ক্লিয়ারিং হয়েছে। অন্যান্য দিনের তুলনায় এদিন বেশি চেক নিষ্পত্তি হয়েছে। কারণ, ১৩ এপ্রিলের পর চেক নিষ্পত্তি বন্ধ রয়েছে। কিন্তু চেক নিষ্পত্তি হলেও আন্তব্যাংক লেনদেন করা যায়নি।
১৩ এপ্রিল বিটিসিএলের মতিঝিল এলাকার লাইন কাটা পড়ার পর থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের দুটি সার্ভারে ত্রুটি দেখা দেয়। প্রথম দিন উচ্চ মূল্যমানের বা পাঁচ লাখ টাকার বেশি চেক লেনদেন বন্ধ ছিল।
আর গত বৃহস্পতিবার আন্তব্যাংক কোনো চেকই লেনদেন হয়নি। ফলে এক ব্যাংক থেকে আরেক ব্যাংকের গ্রাহকের চেক জমা দেয়া হলেও তা নিষ্পত্তি হয়নি।
বিএসিপিএস ও ইএফটিএন ব্যবহার করে দৈনিক গড়ে ১২ হাজার কোটি টাকার মতো লেনদেন হয়। এরমধ্যে আন্তব্যাংক চেক নিষ্পত্তি হয় প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা।
আর ইএফটিএনের মাধ্যমে এক ব্যাংক থেকে আরেক ব্যাংকে গ্রাহকের দৈনিক গড়ে দুই হাজার কোটি টাকার মতো পরিশোধ হয়ে থাকে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, গত ১৩ এপ্রিল বাংলাদেশ ব্যাংকের দুটি ডাটা সেন্টারের মধ্যে সংযোগকারী ফাইবার অপটিক্যাল কেবল বিচ্ছিন্ন হওয়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
এরপর মাইক্রোসফট ও ভিএমওয়্যার-এই দুইটি প্রযুক্তি টিম এই সমস্যা সমাধানে কাজ করছে।
আন্তব্যাংক চেক লেনদেন ও ইএফটিএন- এই দুটিই ব্যাংকিং সেক্টরের আর্থিক খাতে লেনদেনের অন্যতম বড় দুটি মাধ্যম। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংকে আইটি বিপর্যয়ের কারণে সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা ভোগান্তিতে পড়েন।