বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পদ্মা সেতুর রেলে করোনার বাধা

  •    
  • ১৮ এপ্রিল, ২০২১ ২১:১৬

প্রকল্প পরিচালনার সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তা এবং সাইটের শ্রম ব্যবস্থাপনা ক্রমাগত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এখন দুই দেশের মধ্যে বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় প্রকল্পের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

করোনাভাইরাস মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ে চীন ও ঢাকার মধ্যে বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো প্রকল্প পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ স্থাপনের কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রকল্পটির ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান।

চীন সরকারের ঋণের অর্থে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পটি জি টু জি পদ্ধতিতে বাস্তবায়ন করছে চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড (সিআরইসি)।

শনিবার ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প চীন ও বাংলাদেশ সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ যৌথ প্রকল্প। বর্তমানে পুরোদমে চলছে এই প্রকল্পের কাজ। আর এ কাজের জন্য প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের চীন এবং বাংলাদেশের মধ্যে প্রায়ই ভ্রমণ করতে হচ্ছে।

প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত প্রায় ৩০ জন ব্যক্তিকে প্রতি সপ্তাহে চীন ও বাংলাদেশে আসা-যাওয়া করতে হয়; যাদের মধ্যে রয়েছেন প্রকল্প পরিচালক, সুরক্ষা ও মান যাচাই এবং কারিগরি নির্মাণ কর্মকর্তাদের মতো মুখ্য পদে থাকা ব্যক্তিবর্গ।

‘কোভিড-১৯ মহামারির প্রাদুর্ভাবের কারণে প্রকল্প পরিচালনার সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তা এবং সাইটের শ্রম ব্যবস্থাপনা ক্রমাগত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আর এখন দুই দেশের মধ্যে বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় প্রকল্পের অগ্রগতিকে আরও বাধাগ্রস্ত করছে।

‘সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যদি চীন থেকে নির্মাণস্থানে সময়মতো ফিরতে না পারেন, তবে বেশ কয়েকটি কাজের প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন কঠিন হয়ে পড়বে। কিছু কাজ বাধ্য হয়ে স্থগিত করতে হবে। এটি নির্মাণের অগ্রগতিতে সরাসরি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।’

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘মহামারি থাকা সত্ত্বেও চলতি বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুারিতে চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যসহ অন্যান্য কার্যক্রম বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে চীনে মহামারি পরিস্থিতি কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। চীন থেকে যেসব কর্মী বাংলাদেশে এসেছেন, তারা সবাই দুই ডোজ টিকা গ্রহণ করেছেন। তাই তারা বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণের ক্ষেত্রে ঝুঁকি তৈরি করবেন না।

‘একই সঙ্গে মুখ্য পদে থাকা ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সরকার যদি ভবিষ্যতে বাংলাদেশে ফিরে আসা চীনা কর্মীদের জন্য নির্ধারিত স্থানে সেন্ট্রালাইজড কোয়ারান্টাইনের নীতিমালা তৈরি করে, তবে তারা আর বাংলাদেশে আসতে চাইবেন না। এই বিষয়গুলো প্রকল্পের অগ্রগতিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে।’

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে অতিমারি পরিস্থিতি অবনতির ফলে বিমান চলাচল স্থগিত করার কারণে চট্টগ্রামে প্রকল্পের জন্য অর্ডারকৃত ইস্পাত বিম, ইস্পাত বার ও ভূ-প্রযুক্তিগত সামগ্রী বহনকারী নৌযানের জট দেখা দিয়েছে উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উচ্চ পোর্ট ড্যামারেজ ফি, অতিরিক্ত পোর্ট স্টোরেজ চার্জ ও জ্বালানি চার্জ প্রকল্পটির মারাত্মক আর্থিক ক্ষতিসাধন করছে। ইস্পাত বিম, রেল এবং আরও জিনিসপত্র আসতে বিলম্ব হচ্ছে, যা প্রকল্পের সরঞ্জাম সরবরাহের ক্ষেত্রে একটি চ্যালেঞ্জ।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিআরইসি বাংলাদেশে চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধি হিসেবে বাংলাদেশ সরকারকে চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে বিমান চলাচল আবার চালু করার আবেদন জানিয়েছে।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প (পিবিআরএলপি) সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্পের একটি। এই প্রকল্পের অধীনে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা।

চীন সরকারের অর্থায়নে জি টু জি পদ্ধতিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। এর ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান হচ্ছে চীনের চায়না রেলওয়ে গ্রুপ।

ব্যয়ের দিক থেকে রেলের সবচেয়ে বড় এই প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয় ২০১৬ সালে। প্রথমে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩৪ হাজার ৯৮৯ কোটি টাকা। কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের জুলাইয়ে। এরপর ব্যয় বেড়ে ৪০ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। পদ্মা সেতু খুলে দেয়ার দিন থেকেই সেতু দিয়ে ট্রেন চালু করার সিদ্ধান্ত আছে সরকারের।

গত জানুয়ারি পর্যন্ত প্রকল্পের মোট অগ্রগতি ৩৯ শতাংশ। মাওয়া থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ভাঙ্গা পর্যন্ত অংশকে অগ্রাধিকার দিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। এই অংশের কাজ হয়েছে ৬৫ শতাংশ।

এ বিভাগের আরো খবর