বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মহামন্দায় কৃষিভিত্তিক শিল্পায়নে জোর দেয়ার পরামর্শ

  •    
  • ১৭ এপ্রিল, ২০২১ ২৩:৩২

কৃষিভিত্তিক শিল্পায়নের সুবিধাগুলো উল্লেখ করে এক ওয়েবিনারে অর্থনীতিবিদেরা বলেন, এতে কৃষিপণ্যের দাম বাড়বে। কৃষক আরও টাকা পাবে। কৃষকের ক্রয়ক্ষমতা বাড়বে।

করোনাভাইরাস মহামারির ধাক্কায় মহামন্দার কবলে পড়া বিশ্ব অর্থনীতির উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে কৃষিভিত্তিক শিল্পায়নে জোর দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের তিন অর্থনীতিবিদ।

শনিবার ‘শিল্পায়ন: শোভন বাংলাদেশের সন্ধানে’ শিরোনামে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি আয়োজিত এক ওয়েবিনারে অংশ নিয়ে এ আহ্বান জানান তারা।

সমিতির সাধারণ সম্পাদক জামালউদ্দিন আহমেদের সঞ্চালনায় এতে আলোচক হিসেবে অংশ নেন ঢাকা স্কুল অব ইকনোমিকসের চেয়ারম্যান এবং পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক শফিক-উজ জামান এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মোয়াজ্জেম হোসেন খান।

অর্থনীতি সমিতির সভাপতি অধ্যাপক আবুল বারকাতের সদ্য প্রকাশিত ‘বড় পর্দায় সমাজ-অর্থনীতি-রাষ্ট্র: ভাইরাসের মহাবিপর্যয় থেকে শোভন বাংলাদেশের সন্ধানে’ গবেষণা গ্রন্থটির বিষয়বস্তু ঘিরে ১৩ সিরিজের আলোচনা সভার ষষ্ঠ পর্বটি অনুষ্ঠিত হয় শনিবার।

আলোচনায় খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, ‘এক সময় বাংলাদেশের ময়মনসিংহ থেকে কলকাতা পর্যন্ত রেললাইন করা হয়েছিল কেবল পাট পরিবহনের জন্য, মানুষের জন্য নয়। আবুল বারকাত তার বইয়ে যে কথাটা বলেছেন আমি তার সঙ্গে একমত যে, প্রাকৃতিক সম্পদে সবারই সমান মালিকানা থাকবে। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ পরিস্থিতি এড়াতে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় কৃষিভিত্তিক শিল্পায়নে আমাদের ফিরে যেতে হবে।’

স্বাধীনতার আগে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানের শিল্পায়নের বৈষম্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘ওই সময়ের মিল মালিকেরা ছিলেন সবাই পশ্চিম পাকিস্তানের। আমাদের পাটচাষীরা দাম পেত কম। এই শোষণ ও সম্পদ বণ্টনে বৈষম্য আবুল বারকাতের বইয়ে উল্লেখ আছে।’

শফিক-উজ জামান বলেন, ‘প্রকৃতির বিরূপ প্রতিক্রিয়া নিয়ে কার্ল মার্ক্সের একটা কথা আছে এমন যে, আমরা কখনও প্রকৃতিকে জয় করতে পারব না। প্রকৃতিকে জয় করলে তার ক্ষতি হবে বরং প্রকৃতির সঙ্গে সহাবস্থান করতে হবে। আজ করোনাভাইরাসের প্রকোপে আমরা যখন ঘরবন্দি, তখন মার্ক্সের এ কথাটা অনেক প্রাসঙ্গিক।

‘আগে পাট ছিল আমাদের শিল্পায়নের মাধ্যম, কিন্তু আশির দশকের শেষ দিক থেকে পোশাকশিল্প হয়ে গেল আমাদের শিল্পায়নের মূল মাধ্যম। এটা সঠিক যে, এ খাতটি নারীদের জন্য ব্যাপক কর্মসংস্থান তৈরি করেছে। কিন্তু আজ নদী দূষণের পেছনে শিল্পকারখানা ও তার বর্জ্য ভূমিকা রাখছে। মিঠা পানি ও উর্বর ভূমি ধ্বংস হচ্ছে প্লাস্টিকে।’

কৃষিভিত্তিক শিল্পায়নের সুবিধাগুলো উল্লেখ করে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘এতে কৃষিপণ্যের দাম বাড়বে। কৃষক আরও টাকা পাবে। কৃষকের ক্রয়ক্ষমতা বাড়বে। মনে রাখতে হবে, কৃষক একই সঙ্গে উৎপাদক ও শিল্পপণ্যের ক্রেতা।

‘উচ্চ প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান এক সঙ্গে চলে না। শ্রমিক ছাঁটাই না করে কীভাবে উৎপাদন বাড়ানো যায়, তা ভাবতে হবে। আভ্যন্তরীণ বাজার সম্প্রসারণ, বৈচিত্র্যপূর্ণ কৃষিপণ্য তৈরি ও কৃষি গবেষণা খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।’

মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘অধ্যাপক আবুল বারকাতের এই বইটি একটি টাইটানিক গ্রন্থ। এ বইয়ে মুক্তিযোদ্ধা বারকাত তার নিজস্ব ভূমি-উত্থিত চিন্তাভাবনা গ্রন্থিত করেছেন। তিনি দেশের বর্তমান শিল্পায়নকে “বিপর্যয়কর শিল্পায়ন” বলেছেন ও “কল্যাণ শিল্পায়ন” গঠনের কথা বলেছেন। এর জন্য ১৫টি সুপারিশ করেছেন তিনি। এর মধ্যে প্রথম সুপারিশ হলো মানবায়ন, যা মানুষকে তার বাস্তু থেকে কখনও উৎখাত করবে না।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আবুল বারকাতের ৭১৬ পৃষ্ঠার এই বইটি যৌথভাবে প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি ও মুক্তবুদ্ধি প্রকাশনা।

বইটি নিয়ে ১৩টি ভার্চুয়াল আলোচনায় এর আগের পাঁচটি সেমিনারের বিষয়বস্তু ছিল: শোভন সমাজ ধারণা, বৈষম্য-অসমতা, দারিদ্র্য, শ্রেণি ও কোভিড-১৯ উদ্ভূত পরিবর্তন, নারীর ক্ষমতায়ন ও শিশুর বিকাশ, ভূমি ও কৃষি এবং শিক্ষা, বিজ্ঞান, প্রকৃতি।

বাকি সাতটি আলোচনার বিষয়বস্তুগুলো হচ্ছে: শোভন সমাজ ও মূলধারার সামাজিক বিজ্ঞান, জনগণের স্বাস্থ্য, ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িকতা-মৌলবাদ-জঙ্গিবাদ, সামষ্টিক ও ব্যষ্টিক অর্থনীতি, বিশ্বায়ন, শোভন সমাজ নির্মাণে রাষ্ট্র টাকা পাবে কোথায়; কালো টাকা, অর্থপাচার এবং শোভন সমাজের লক্ষ্যে জাতীয় বাজেট।

এ বিভাগের আরো খবর