প্রবাসী কর্মীদের কথা মাথায় রেখে পাঁচ দেশে বিশেষ ফ্লাইট চালুর শুরুর দিন নানা জটিলতায় বাতিল হয়েছ সাতটি ফ্লাইট। এর মধ্যে রয়েছে সৌদি আরবের তিনটি ও সংযুক্ত আরব আমিরাতগামী চারটি ফ্লাইট।
শনিবার ভোর সাড়ে ছয়টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সৌদি আরবের রিয়াদের জন্য নির্ধারিত বিশেষ ফ্লাইটটি যাত্রীদের নিয়ে ছেড়ে যেতে পারেনি। এছাড়া পর্যাপ্ত যাত্রী না পাওয়ার কারণে বিমান কর্তৃপক্ষ বাতিল করেছে সৌদি আরবের দাম্মামের আরও একটি ও দুবাইয়ের দুটি ফ্লাইট।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ বিভাগের উপ মহাপরিচালক তাহেরা খন্দকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভোর সাড়ে ছয়টায় রিয়াদগামী ফ্লাইটটির সৌদি আরবে ল্যান্ডিং অনুমতি না পাওয়ায় এটি ঢাকা ছাড়তে পারেনি। সৌদি আরবের নিয়মে প্রতিটি বিশেষ ফ্লাইটের জন্য আলাদা ল্যান্ডিং অনুমতি প্রয়োজন হয়।
‘ভোর পর্যন্ত এই ফ্লাইটে ২০১ জন যাত্রী চেক ইন করেছিলেন। আমরা তাদের সকলকে বিমানের খরচে হোটেলে রেখেছি। ল্যান্ডিং অনুমতির চেষ্টা চলছে। এটি পেলেই ফ্লাইটটি যাত্রীদের নিয়ে রিয়াদ রওনা হবে।’
তিনি জানান, সন্ধ্যা ৬টায় সৌদি আরবের আরেক শহর জেদ্দার উদ্দেশে আরও একটি ফ্লাইট ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক তৌহিদ উল আহসান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সারাদিনে পাঁচটি দেশে ১৪ টি বিশেষ ফ্লাইটের স্লট নির্ধারিত ছিল। কিন্তু নানা কারণে সাতটি ফ্লাইটই বাতিল হয়েছে। এর মধ্যে বিমানের পাঁচটি ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাজেট এয়ারলাইন্স ফ্লাই দুবাইয়ের দুটি ফ্লাইট রয়েছে।
‘সকাল থেকে শুধু মাত্র সালাম এয়ারের একটি ফ্লাইট যাত্রীদের নিয়ে ওমানের মাস্কাট রওনা হয়েছে। সন্ধ্যায় বিমানের একটি ফ্লাইট জেদ্দা যাওয়ার কথা রয়েছে।’
ফ্লাইট নিষেধাজ্ঞার মধ্যে আটকে পড়া প্রবাসী কর্মীদের কর্মস্থলে ফেরাতে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ শ্রমবাজারে শনিবার থেকে শতাধিক বিশেষ ফ্লাইট অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এই পাঁচ দেশ হলো- সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, কাতার ও সিঙ্গাপুর।
রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমানসহ মোট ১২টি দেশি-বিদেশি এয়ারলাইন্স যাত্রী পরিবহনের সুযোগ পাচ্ছে। এগুলো হলো ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স, সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্স, ওমান এয়ার, সালাম এয়ার, কাতার এয়ারওয়েজ, এমিরেটস, ইতিহাদ, এয়ার অ্যারাবিয়া, এয়ার অ্যারাবিয়া আবুধাবি ও ফ্লাই দুবাই।
এরই মধ্যে দেশি এয়ারলাইন্সগুলোর মধ্যে এই পাঁচ দেশের আট গন্তব্যে বিমান ও চার দেশের চার গন্তব্যে ফ্লাইট ঘোষণা করেছে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স।
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সরকার প্রথমে ৫ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত নানা বিধিনিষেধ আরোপ করে। পরে এ নিষেধাজ্ঞা আরও দুই দিন বাড়িয়ে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়। তবে সরকারি-বেসরকারি অফিস, শিল্পকারখানা, গণপরিবহন চালু থাকায় তা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে খুব একটা কাজে আসেনি।
এর মধ্যে কঠোর বিধিনিষেধের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। বুধবার সকাল থেকে শুরু হয় এই বিধিনিষেধ বাস্তবায়ন। প্রাথমিকভাবে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত এই অবস্থা চলবে।
কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে ১৪ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত সব অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ। তবে চিকিৎসা, পণ্যবাহী ও বিশেষ ফ্লাইটকে নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। হঠাৎ ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অন্তত ২০ হাজার প্রবাসী কর্মীর কর্মস্থলে পৌঁছানো অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। বেশি দামে টিকিট কিনেও তারা কাজে যোগ দিতে পারছেন না।