মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট কাঁচাবাজারে সবজি কিনতে এসেছেন মো. রায়হান। পাশের জেনেভা ক্যাম্পের এই ব্যক্তি বললেন, সব সবজির দামই আগের চেয়ে বেশি। এর মধ্যে শসার দাম দ্বিগুণ হয়েছে। আগে ৪০ টাকা কেজি থাকলেও এখন তার ৮০ টাকার বেশি।
তার এই কথার আঁচ পাওয়া গেল শুক্রবার মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেট ও টাউন হল কাঁচাবাজার ঘুরে।
মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেট সবজি বাজারে রাস্তার পাশে সবজি বিক্রি করেন ইকবাল হোসেন। সবজির দাম নিয়ে বললেন, রোজার মাসের প্রথম কয়েকটি দিন সবজির দাম একটু বেশি থাকবে। এরপর কমবে।
তার কথাতেই স্পষ্ট, সবজির মূল্য বাড়তির দিকে।
কেন বেশি জানতে চাইলে বলেন, ‘এখন তো লকডাউন, তাই সবজি আসতে পারতেছে না। আর এই মৌসুমে এমনিতেই সবজির দাম একটু বাড়ে।’
মোহাম্মদপুর টাউন হল কাঁচাবাজারের সবজি ব্যবসায়ী কবির হোসেনের দোকানে শসা বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজিতে। পটোল ১২০ টাকা।
কেন দাম বাড়তি জানতে চাইলে তিনিও লকডাউনের কথাই জানালেন। বলেন, ‘এখন তো দোকানই খুলতে দিচ্ছিল না। অনেক কষ্ট করে খুলছি। আর রমজানে দাম একটু বেশিই হয়।’
তবে বাজারভেদে সবজির দামে পাথর্ক্য রয়েছে। মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেট কাঁচাবাজারে যে শসার মূল্য ৮০ টাকা, মোহাম্মদপুর টাউন হলে একই শসা ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এখানে বেগুন ও কাঁচা মরিচের দাম আগের চেয়ে বেড়েছে দ্বিগুনের বেশি। গত সপ্তাহে যে বেগুন বিক্রি হচ্ছিল ৪০ টাকা সেটি এখন ৮০-৯০ টাকা। আর মরিচ এক সপ্তাহ আগেও বিক্রি হয়েছে ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজি।
কাঁচাবাজারে বাড়েনি আলুর দাম। কৃষি মার্কেটে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়।
কৃষি মার্কেটে কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ৮০ টাকা, শিম ৪০ টাকা, টমেটো ৩০-৫০ টাকা, গাজর ৪০-৫০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৫০ টাকা, পটোল ৫০ টাকা, ঝিঙ্গা ৬০ টাকা ও প্রতিটি লাউ ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তবে এর চেয়ে ১০ থেকে ২০ টাকা বেশিতে সবজি বিক্রি হচ্ছে মোহাম্মদপুর টাউন হল কাঁচাবাজারে। একই অবস্থা আদাবর কাঁচাবাজারেও।
মোহাম্মদপুর টাউন হল কাঁচাবাজারের সবজি ব্যবসায়ী মোহাম্মদ হৃদয় বলেন, ‘আমরা যেই দামে কিনে আনি, তার চেয়ে একটু তো বেশি লাভ করবই। না হলে ব্যবসা কেন করব।’
সবজির দাম বাড়লেও মাছ ও মাংসের দাম তেমন বাড়েনি বলেই জানালেন ব্যবসায়ীরা।
মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে গরুর মাংস বিক্রেতা মোহাম্মদ চাঁদ বলেন, গরুর মাংসের দাম বাড়েনি, বরং কমেছে। এখন প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫২০ টাকায়।
তবে পাশের দোকানের জহির জানালেন, এর চেয়েও ১০ থেকে ২০ টাকা কমেও গরুর মাংস মিলছে।
টাউন হল কাঁচাবাজারে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫২০-৫৫০ টাকায়। আর খাসির মাংস ৮৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে মাছের দামও অপরিবর্তিত রয়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। প্রতি কেজি রুই আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ২৫০-৩৫০ টাকায়। আর প্রতি কেজি টেংরা মাছ আকারভেদে ৫০০-৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কৃষি মার্কেট থেকে মাংস কিনেছেন আরিফ হোসেন। তিনি জানান, গরুর মাংসের দাম আগের মতোই আছে।
মোহাম্মাদপুর টাউন হল, কৃষি মার্কেট ও আদাবরের বাজার ঘুরে মুরগির দাম কিছুটা বেড়েছে বলে জানা গেছে।
এর কারণ হিসেবে মুরগির সরবরাহে ঘাটতির কথা জানান ব্যবসায়ীরা। সে জন্য ব্রয়লারে কেজিতে ৫-১০ টাকা, লেয়ার, সোনালিতেও একই রকম দাম বাড়ার কথা জানান তারা।
এ ছাড়া বাজারে ডিমের দামও কোথাও হালিতে ৪-৫ টাকা বাড়তি আবার কোথাও আগের দামেই বিক্রি হতে দেখা গেছে।