খাদ্যশস্যে বাংলাদেশ স্বাবলম্বী কি না কিংবা কখন স্বাবলম্বী দাবি করা হবে তার সুস্পষ্ট ব্যাখা দিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
তিনি বলেন, ‘আমরা দাবি করি, খাদ্যশস্যে আমরা স্বাবলম্বী। ধান, চাল ও গম প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল। খাদ্যশস্যে আমরা স্বাবলম্বী হতে পারি সেই বছর, যে বছর আমাদের প্রকৃতি স্বাভাবিক থাকে। আমাদের এখানে যে পরিমাণ জমি, দক্ষতা ও সক্ষমতা আছে তা যথাযথ কাজে লাগাতে পারলে আমরা সফল সেই বছর।
‘যদি প্রকৃতিক কোনো দুর্যোগ আসে, তাহলে খাদ্যশস্য উৎপাদনের ধারাবাহিকতা আমরা ধরে রাখতে পারি না।’
বৃহস্পতিবার এক প্রাক-বাজেট আলোচনা শেষে ব্রিফিংয়ে তিনি সাংবাদিকদের কাছে এই ব্যাখ্যা তুলে ধরেন।
সাংবাদিকেরা জানতে চান, দেশে ৮-১০ লাখ টন চাল আমদানির অনুমতির পরও বাজারে চালের দাম বেশি কেন?
জবাবে অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল বলেন, ‘দুর্যোগপূর্ণ প্রকৃতির কারণে গত বছর আমাদের অনেক বোরো ফসল নষ্ট হয়েছে। কৃষকরাও কৃষিকাজ ঠিকমতো করতে পারেননি। করোনার কারণে স্বাভাবিক কাজ যেমন ব্যাহত হয়েছে, তেমনি কৃষিও ব্যাহত হয়েছে। এ কারণে সরবরাহ কমে গেছে, ফলে চালের দামটা বেশি।’
প্রাক-বাজেট আলোচনায় দ্য ডেইলি স্টার-এর সম্পাদক মাহফুজ আনাম, চ্যানেল আই-এর বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ, বাংলাদেশ প্রতিদিন-এর সম্পাদক নঈম নিজাম, দৈনিক অর্থনীতি-এর সম্পাদক নাইমুল ইসলাম খান প্রমুখ অংশ নেন।
এ সময় তারা অর্থমন্ত্রীর প্রতি খাদ্য নিরাপত্তা জোরদার, কৃষিতে ভর্তুকি বাড়ানো এবং পোল্ট্রি শিল্পে নজর দেয়ার পরামর্শ দেন। নিউজপ্রিন্টের ওপর আরোপিত কর এবং করপোরেট ট্যাক্স হারও কমানোর প্রস্তাব রাখেন। পাশাপাশি সরকারের অপচয় রোধ করারও পরামর্শ দেন।
অর্থমন্ত্রী জানান, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বদের এসব সুপারিশ ও প্রস্তাব গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় নেয়া হবে।
কৃষিতে এখনও যান্ত্রিকতার সমস্যা রয়েছে উল্লেখ করে মুস্তফা কামাল বলেন, ‘আমরা পুরো চাষাবাদ পদ্ধতিকেই যান্ত্রিকতায় রূপান্তর করব। সেখানে বাজেটে ভর্তুকিসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা অব্যাহত রাখা হবে। আমাদের কৃষি ভালো করছে। আমি মনে করি আরও ভালো করার সুযোগ রয়েছে। এ জন্য সব ধরনের কৃষিজাত প্রোডাক্টে আমরা আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করব। কারণ ভষিতের কৃষি হবে সম্পূর্ণ প্রযুক্তিনির্ভর। সে লক্ষ্যে কাজ শুরু হয়েছে। গতবার বাজেটেও এ বিষয়ে আমাদের বক্তব্য ছিল, কিছু অর্থও আমরা সেই খাতে রেখেছিলাম। কৃষিকে আরও গতিশীল, বেগবান ও শক্তিশালী করার জন্য যা যা প্রয়োজন সরকার তা করবে।’
শিক্ষিত তরুণরাও এখন কৃষিতে আসছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের শিক্ষিত যারা কৃষিতে আসতে চায়, তাদের উৎসাহিত করার জন্য কিছু কিছু প্রণোদনা রাখার চেষ্টা করব।’