মুভমেন্ট পাস নিয়ে পুলিশের সঙ্গে কর্মচারীদের ঝামেলার জেরে চট্টগ্রাম বন্দরে জেনারেল কার্গো বার্থে (জিসিবি) কয়েক ঘণ্টা পণ্য উঠানামা বন্ধ ছিল।
বুধবার রাত ৮টা থেকে ৯টা ৫৫ মিনিট পর্যন্ত পণ্য উঠানামা বন্ধ রাখে বার্থের উইসম্যান শ্রমিকরা।
তবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক বলেন, কর্মচারীদের সঙ্গে পুলিশের ঝামেলার জেরে শুধু জিসিবিতে ঘণ্টাখানেক পণ্য উঠানামা বন্ধ ছিল। বিষয়টি এখন সুরাহা হয়ে গেছে।
বন্দরের উইসম্যান বহুমুখী কল্যাণ সমবায় সমিতির সভাপতি বেলাল উদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দুই ঘণ্টা কাজ বন্ধ ছিল। পুলিশ ও বন্দর কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বিষয়টি সুরাহা শেষে রাত ১০টা থেকে ফের কাজ শুরু হয়েছে।’
ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ডিউটি শেষে বিকেল পাঁচটার দিকে ১৯ নম্বর বার্থের ক্রেন অপারেটর হারুনুর রশিদ সোহাগ ইপিজেড হয়ে বাসায় যাচ্ছিলেন। এই সময় ইপিজেড মোড়ে মুভমেন্ট পাসের জন্য তাকে ট্রাফিক পুলিশ আটকে নাজেহাল করে।
‘৯ নম্বর বার্থের ক্রেন অপারেটর সেলিম উদ্দিন কাজ শেষে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে বিশ্বরোড হয়ে বাসায় ফিরছিলেন। পথে বিশ্বরোড মোড়ে তাকেও হয়রানি করে ট্রাফিক পুলিশ। আটকে রাখা হয় মোটরসাইকেল।’
লকডাউনে ঘরের বাইরে যাওয়া ব্যক্তিদের আইডি কার্ড ও মুভমেন্ট পাস নিয়ে সারা দেশেই কঠোর ছিল পুলিশ
দ্বিতীয় ঢেউয়ে করোনাভাইরাস ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি নির্দেশনায় বুধবার থেকে এক সপ্তাহের জন্য জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। যারা বাইরে যেতে চান, তাদেরকে পুলিশের কাছ থেকে মুভমেন্ট পাস নিতে হচ্ছে।
বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। তবে জরুরি সেবাদানকারী, আমদানি-রপ্তানিতে জড়িত প্রতিষ্ঠান চালু রাখা হয়েছে। এই হিসাবে বন্দরের কর্মচারীদের পরিচয়পত্র দেখালেই হতো।
তবে প্রথম দিন ঢাকায় পাস না থাকায় এক চিকিৎসককে জরিমানা করার ঘটনায় সমালোচনা তৈরি হয়েছে। আরও বেশ কিছু ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে উঠেছে বাড়াবাড়ির অভিযোগ।
বন্দরের উইসম্যান বহুমুখী কল্যাণ সমবায় সমিতির সভাপতি বেলাল উদ্দিন বলেন, ‘দুইজন অপারেটরকে নাজেহাল ও হয়রানির প্রতিবাদে পণ্য উঠানামা বন্ধ রেখে কর্মবিরতি পালন করে উইসম্যান শ্রমিকরা। পরে বন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) এনামুল করিম স্যার ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে কথা বলেন।
‘ট্রাফিক পুলিশের বন্দর জোনের অতিরিক্ত কমিশনার মিজানুর রহমান বৃহস্পতিবার জব্দ করা মোটরসাইকেলটি ছেড়ে দিবেন বলে জানান। এরপর আন্দোলনকারী শ্রমিকরা কাজে ফিরে যান।’
‘অর্থনীতি সচলে মহামারির কারণে লকডাউনের মধ্যে বন্দর সচল রাখা হয়েছে। বন্দরে কর্মরতরা ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছে। সড়কে গাড়ি না থাকলেও কষ্ট করে তারা বন্দরে আসা যাওয়া করছে। তার মধ্যে পুলিশের এই ধরনের আচরণ কাম্য নয়’- বলেন বেলাল উদ্দিন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কয়েকজন উইসম্যানের সঙ্গে ট্রাফিকের পুলিশের ঝামেলা হয়েছে। এজন্য তারা কাজ বন্ধ করে দেয়। পরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে এই বিষয়ে আলাপ হয়। বিষয়টি সমাধান হয়ে গেছে। বন্দরে কার্যক্রম এখন স্বাভাবিক রয়েছে।’