রমজানে চাহিদা বাড়ে এমন সবজির দাম বাড়ল বিধিনিষেধের কারণে ক্রেতা স্বল্পতার মধ্যেও।
রোজার প্রথম দিন এবার রাজধানীর বাজারগুলোতে অন্য চিত্র। করোনা মোকাবিলায় প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে যাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এক সপ্তাহের জন্য আরোপ করা হয়েছে কড়াকড়ি।
এসব কারণে বাজারে রোজার প্রথম দিন যে ভিড় থাকার কথা, দেখা যায়নি তার ছিটেফোঁটাও।
এর মধ্যেও রোজায় বহুল ব্যবহৃত হয় এমন কয়েকটি সবজির দাম বেড়েছে। তবে কমেছে পেঁয়াজের দাম।
মঙ্গলবার ৫০ টাকা দরে বিক্রি হওয়া লম্বা বেগুন বুধবার বিক্রি হয়েছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। তবে ৫৫ থেকে ৬০ টাকার গোল বেগুনের দাম কমে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় নেমেছে।
ইফতারে সালাদ তৈরিতে বহুল ব্যবহৃত শসা কিনতেও বাড়তি গুনতে হয়েছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা। আগের দিন ৩৮ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হওয়া শসা বুধবার বিক্রি হয়েছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়।
পাঁচ টাকা বেড়ে টমেটো বিক্রি হয়েছে ৪০ টাকায়। কেজিতে দুই টাকা বেড়ে আলুও বিক্রি হয়েছে ২২ থেকে ২৪ টাকায়।
রোজায় ব্যবহৃত অন্যান্য সবজি মরিচ, গাজর ও ধনে পাতার দামের তেমন হেরফের নেই।
মানভেদে প্রতি কেজি মরিচ সর্বোচ্চ ৪৫ থেকে ৬০ টাকা, ধনে পাতা ৪৫ থেকে ৫০ টাকা এবং গাজর ৩৮ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
আগে থেকেই চড়া বাজারে মাঝারি আকারের লেবুর হালি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা এবং বড় লেবু ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকার ঘোষিত আট দিনের লকডাউনে ১৩ দফা কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এতে নির্দিষ্ট সময় কাঁচাবাজার ও নিত্যপণ্যের দোকান খোলা রাখার কথা বলা হয়েছে। পণ্য পরিবহনও চলবে।
সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, কাঁচাবাজার এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে। বাজার কর্তৃপক্ষ বা স্থানীয় প্রশাসনকে বিষয়টি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
নির্দেশনা থাকলেও কিছু বাজার আগের জায়গায়ই বসেছে। তেমন একটি বাজার বিজয় সরণির কলমিলতা বাজার।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এ বাজারের বিক্রেতা রিয়াজ বলেন, ‘সরকারের নির্দেশনায় মানুষ ঘর থেকে তেমন বের হচ্ছে না। যাদের একান্ত প্রয়োজন তারাই বের হচ্ছেন। এতে সকাল থেকেই ক্রেতার দেখা তেমন নেই বললেই চলে।’
দুপুর পর্যন্ত পাঁচ ঘণ্টায় ১৫ জনের মতো ক্রেতা পেয়েছেন বলেও জানান তিনি।
সবজির দাম বাড়ার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘পাইকারি বাজারে আগের দিনের চেয়েও রোজার কয়েকটি জিনিসের দাম বেড়েছে। এমনিতেই রোজায় বেগুনি বানানোর জন্য সবজিটির চাহিদা বেশি থাকে। তার উপর লকডাউন শুরু হয়েছে। এতে পাইকারি বাজারে মাল কম ছিল।
‘আগের দিনের চেয়ে পাইকারিতেও কেজিতে ২০ ট্যাকা বেশি ধিয়া আনতে হইছে। বেশি দামে কিনতে হইছে শসাও। টমেটোর ক্যারেটেও (২২ থেকে ২৫ কেজি) ১০০ ট্যাকা বেশি দিতে হইছে।’
এ বাজারের ক্রেতা মামুন হোসেন বলেন, ‘সরকার তো কোনো পণ্য পরিবহন বন্ধ রাখেনি। তাহলে দাম কেন বেড়েছে?’
পেঁয়াজে স্বস্তি
রোজার আগের দিন দাম বাড়া পেঁয়াজ এক দিনের ব্যবধানে আবারও কিছুটা দাম কমেছে।
কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা কমে দেশি পেঁয়াজ ৩৮ থেকে ৪০ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ৩৬ থেকে ৩৬ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
আগের দামেই দেশি রসুন ৭৫ থেকে ৮০ টাকা এবং আমদানি করা রসুন ১২০ থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
ব্রয়লার মুরগি ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা এবং সোনালী মুরগি বিক্রি হয়েছে ৩১০ থেকে ৩২০ টাকায়।
ডিম পাড়া লাল ও সাদা লেয়ার মুরগি ২১০ থেকে ২২০ টাকায় এবং দেশি মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকায়।
গরুর মাংস ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা এবং ছাগলের মাংস ৭৫০ থেকে ৮৫০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হয়েছে।