বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

টিসিবির ট্রাক: পেঁয়াজ না নিলে কিছু নেই

  •    
  • ১৪ এপ্রিল, ২০২১ ২১:৫৬

তেল, মসুর ডাল, ছোলা, চিনি, পেঁয়াজ ও খেঁজুর বিক্রি হয় টিসিবির ট্রাকে। ক্রেতাদের অভিযোগ, সবগুলো পণ্য মিলিয়ে এক হাজার ১০০ টাকার একটি প্যাকেজ করা হয়েছে। নিলে সবগুলো একসঙ্গে নিতে হয়। কিন্তু নিম্ন আয়ের মানুষদের এত টাকা থাকে না।

তেল, মসুর ডাল, ছোলা, চিনি, পেঁয়াজ ও খেজুর- এই ছয়টি পণ্যের কোনো একটি না কিনলে অন্যটি পাওয়া যাবে না, এমন কোনো শর্ত কখনও দেয়নি বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারি প্রতিষ্ঠান টিসিবি। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, পেঁয়াজ না নিলে অন্য পণ্য দিচ্ছেন না বিক্রেতারা।

করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে বাইরে যেতে কঠোর বিধিনিষেধের কারণে নিম্ন আয়ের মানুষের কাজ বন্ধপ্রায়। বাজার দরের চেয়ে কিছুটা কম দামে পণ্য কিনতে তারা ভিড় করছেন টিসিবির ট্রাকে।

তবে তাদের অভিযোগ, পেঁয়াজ না কিনলে কোনো পণ্যই বিক্রি করছে না বিক্রেতারা। এমনকি প্যাকেজ করে বিক্রেতারা এক সঙ্গে সব পণ্য কিনতে বাধ্য করছে।

বিক্রেতারা বলছেন, টিসিবি তেল, মসুর ডাল, ছোলা, চিনি, পেঁয়াজ ও খেঁজুর এ ছয়টি পণ্য সরবরাহ করলেও ক্রেতার চাহিদা বেশি থাকে তেল ও ডালের। কিন্তু সব পণ্য বিক্রি না হলে ডিলারকে লোকসান গুণতে হবে। তখন ট্রাকের সংখ্যা কমে যাবে। মানুষ পণ্যও পাবে না। এ জন্য ক্রেতাদের সব পণ্য কিনতে বলা হয়।

বাজারে ১৪০ টাকায় তেল বিক্রি হলেও টিসিবিতে দাম ১০০ টাকা, ৪০ টাকার পেঁয়াজ ২০ টাকা, ৮০ টাকার মসুর ডাল ও ছোলা ৫৫ টাকা, ৭০ টাকার চিনিও ৫৫ টাকা এবং খেজুর বিক্রি হয় ৮০ টাকায় যার সাধারণ দাম প্রায় ২০০ টাকা।

তবে টিসিবির পেঁয়াজ নিতে অনাগ্রহের কারণে এর আকার একটু বড়, ঝাঁঝও কম।

রমজানের প্রথম দিন বুধবার দুপুরে বিজয়সরণির ফুট ওভারব্রিজের নিচে টিসিবির ট্রাকে দেখা যায়, কড়া রোদেও প্রায় ৩০ থেকে ৪০ জন মানুষের লাইন। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ক্রেতা ট্রাকের বিক্রয়কর্মীদের সঙ্গে তর্ক করছেন।

পাশে ট্রাকের এক বিক্রয়কর্মী বস্তা থেকে পেঁয়াজ বাছাই করে প্যাকেটে পুরতেও দেখা গেছে। যেখানে তিনি বেশ কিছু নষ্ট পেঁয়াজ আলাদা বস্তায় রাখছিলেন।

তর্কের কারণ, হিসাবে ক্রেতারা টাকা থেকে কাউকে নিজেদের প্রয়োজন মতো পণ্য দিচ্ছে না। বরং তারা প্যাকেজ করে ১১০০ টাকার পণ্য ঠিক করেছেন। কারও প্রয়োজন না হলেও সব নিতে হবে। না নিলে চলে যেতে হবে।

এক প্যাকেজে এক কেজি খেজুর, তিন কেজি চিনি, দুই কেজি মসুর ডাল, পাঁচ লিটার তেল, চার কেজি পেঁয়াজ এবং দুই কেজি ছোলা রয়েছে।

লাইনের শুরুতে দাঁড়ানো ক্রেতা জাহাঙ্গীর জানান, শুধু কিছু টাকা কম পাওয়ার আশায় তিনি রোদের মধ্যেও লাইনে দাঁড়িয়েছেন। শুধু তেল ও খেঁজুর প্রয়োজন হলেও তাকে ছয়টি পণ্যই কিনতে হচ্ছে। আলাদা একটা বা দুইটা পণ্য দেয়া হচ্ছে না। এতে প্রত্যেককে ১১০০ টাকা দিতে হচ্ছে।

পেঁয়াজ নিয়ে অনাগ্রহের কারণ কী, জানতে চাইলে তিনি বলেন, টিসিবির পেঁয়াজের আকার অনেক বড়। এগুলো তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায়। ছোট আকারের দেশি পেঁয়াজ একমাস থাকে।

অপর ক্রেতা হান্নান জানান, বাজারে তেলের দাম বেশি হওয়ায় তিনি পাঁচ লিটার তেল, দুই কেজি ছোলা ও দুই কেজি মসুর ডাল কিনতে চাচ্ছেন। কিন্তু ট্রাক থেকে দিচ্ছে না। এখন প্রয়োজন না হলেও খেজুর, চিনি, পেঁয়াজ কিনতে হবে, ছোলাও কিনতে হবে এক কেজি বেশি।

লাইনের বাইরে দাঁড়ানো রায়হান বলেন, তিনি শুধু তেল নিতে ৫০০ টাকা নিয়ে এসেছিলেন। এখন সব নিতে বলছে ট্রাক থেকে না নিলে তেলও পাওয়া যাবে না। তাই দাঁড়িয়ে রয়েছেন, যদি শেষ মুহূর্তে শুধু তেল পাওয়া যায়।

জানতে চাইলে ট্রাকের বিক্রয় কর্মী আলমগীর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিকালে তিনটার মধ্যেই বিক্রি শেষ করতে হবে। না হলে পণ্য থেকে যাবে। সময় কম হওয়ায় প্যাকেজ হিসাবে বিক্রি করছি। একটি একটি করে বিক্রি করলে শেষ করা যাবে না।

‘তাছাড়া সবাই শুধু তেল চায়। আকারে বড় তাই, পেঁয়াজ নিতে চায় না। শুধু তেল বিক্রি করলে পেঁয়াজ- চিনির কী হবে?

‘সারা দিন মাল বেচলেই তো হবে না। মালিককে লাভও দিতে হবে। তাই সময় বাঁচানো ও সব পণ্য শেষ করতে প্যাকেজ করা হয়েছে। প্যাকেজ শেষে থাকলে বাকিগুলো আলাদা করে বিক্রি করা হবে।’

এ বিষয়ে টিসিবির মুখপাত্র হুমায়ুন কবির নিউজবাংলাকে বলেন, ‘টিসিবি কখনোই ক্রেতাকে কিনতে বাধ্য করার পক্ষে নয়। কিছু সময় বিক্রেতারা এমনটি করে থাকতে পারে। প্যাকেজ বা কোন পণ্য না নিলে অন্যগুলো পাওয়া যাবে না এমন করতে নিষেধ করা হয়েছে।’

এ বিভাগের আরো খবর