করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্য খাতে চলমান প্রকল্পের আওতায় টিকা কিনতে বাংলাদেশকে আরও অতিরিক্ত ৫০ কোটি ডলার সহজ শর্তে ঋণ দিচ্ছে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা বিশ্ব ব্যাংক। এ বিষয়ে সংস্থাটির সঙ্গে একটি ঋণ চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়েছে বলে জানিয়েছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)।
ইআরডি থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘কোভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড প্যানডেমিক প্রিপারেন্ডেন্স’ প্রকল্পের আওতায় বিশ্বব্যাংক এ অতিরিক্ত ৫০ কোটি ডলার দেবে। (প্রতি ডলার সমান ৮৫ টাকা ধরে বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৪ হাজার ২৫০ কোটি টাকা)। ঋণের বিষয়ে বিষয়ে রোববার বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে একটি ঋণচুক্তি সই হয়েছে। সরকারের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন ও বিশ্বব্যাংকের পক্ষে সংস্থাটির কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন চুক্তিতে সই করেন।
এর আগে, গত ১৮ মার্চ বিশ্বব্যাংকের বোর্ড সভায় এ ঋণ অনুমোদন হয়। তখন সংস্থাটি বলেছিল, এই অর্থায়নের ফলে বাংলাদেশের এক-তৃতীয়াংশ জনগণের জন্য অবিলম্বে টিকা সরবরাহ নিশ্চিত হবে। সংস্থাটি বলছে, এর মাধ্যমে দেশের প্রায় ২০ শতাংশ মানুষ টিকার আওতায় আসবে। সরকারের অগ্রাধিকার পরিকল্পনায় নেয়া অধীনে ৩১ শতাংশ মানুষকে টিকা দিতে সহায়তা করবে। এটি নিরাপদ ও কার্যকরী টিকা সংগ্রহ, সংরক্ষণ সুবিধা সম্প্রসারণ এবং বিতরণে সরকারকে সহায়তা করবে।
বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন বলেন, জাতীয় টিকাদান কর্মসূচি চালু করে বাংলাদেশ করোনা প্রতিরোধে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে। এ কর্মসূচির লক্ষ্য অর্জনে দ্রুত এবং ন্যায়সঙ্গতভাবে জনগণের টিকা প্রাপ্তি গুরুত্বপূর্ণ। এই অর্থায়নের ফলে জাতীয় ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে বাংলাদেশের এক-তৃতীয়াংশ জনগণের জন্য অবিলম্বে টিকা সরবরাহ নিশ্চিত করবে।
চুক্তি স্বাক্ষর প্রসঙ্গে ইআরডি বলছে, এই প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যে ২০২০ সালের ১০ এপ্রিল ১০ কোটি ডলার ঋণ সহায়তা দিয়েঠে সংস্থাটি। একই প্রকল্পের আওতায় এশিয়ান ইনফ্রাস্টাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের (এআইআইবি) কাছ থেকেও ১০ কোটি ডলার ঋণ পাওয়া গেছে। এর ধারাবাহিকতায় টিকা কেনার জন্য চলমান প্রকল্পের আওতায় অতিরিক্ত ঋণ দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। চলতি সময় থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে টিকা কেনা ও সরবরাহ করা। এর মাধ্যমে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদিত তিনটি টিকা বা কোভ্যাক্স থেকে অগ্রিম টিকা কেনার মাধ্যমে দেশের মোট জনসংখ্যার ৩১ শতাংশকে টিকা দেয়ায় লক্ষ্য পূরণ হবে। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ভ্যাকসিন টেস্টিং ল্যাব স্থাপনের মাধ্যমে সক্ষমতা বাড়ানো হবে এবং টিকা সংরক্ষণ ও বিতরণে কোল্ড চেইন সিস্টেম অক্ষুন্ন রাখার মাধ্যমে টিকার গুণগত মান নিশ্চিত করা হবে।
বিশ্বব্যাংকের এই অতিরিক্ত অর্থায়নের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংকের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (আইডিএ) তহবিলের সাধারণ শর্ত প্রযোজ্য হবে। ঋণটি ৫ বছরের গ্রস পিরিয়ডসহ (এ সময় কোন ঋণ বা ঋণের কিস্তি শোধ করতে হবে না) ৩০ বছরের পরিশোধযোগ্য। ঋণের সুদ হার হবে ১ দশমিক ২৫ শতাংশ। সঙ্গে সার্ভিস চার্জ থাকবে ০ দশমিক ৭৫ শতাংশ। পুরো অর্থ উত্তোলন করতে না পারলে অনুত্তোলিত অর্থের ওপর কমিটমেন্ট চার্জ হবে ০ দশমিক ৫০ শতাংশ।