বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বন্ধের আগে শেয়ার বিক্রি করলে ‘লাভ নেই’

  •    
  • ১২ এপ্রিল, ২০২১ ২৩:৫৯

‘পুঁজিবাজার বন্ধ হচ্ছে এতে আতঙ্কের কিছু নেই। আবার যখন খোলবে তখন বাজার আরও ভালো হতে পারে। প্রথম পর্যায়ে পুঁজিবাজার বন্ধ থাকার পর আমরা দেখেছি সূচক প্রায় ছয় হাজারের কাছাকাছি উঠেছিল। ফলে আতঙ্কিত না হয়ে অপেক্ষা করা উচিত।’ 

নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি চেয়েছিল পুঁজিবাজারে লেনদেন চালু থাকবে। কিন্তু সরকার নির্দেশ দিয়েছে বন্ধ রাখতে হবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান। অনন্যোপায় হয়ে পুঁজিবাজারে লেনদেনও স্থগিত রাখতে হচ্ছে।

লেনদেন বন্ধ হয়ে যেতে পারে, এমন গুজবে গত ৪ এপ্রিল এবং পরে ১১ এপ্রিল দুই দিন বড় দরপতন দেখেছে পুঁজিবাজার। ৪ এপ্রিল সূচক পড়ে ১৮১ পয়েন্ট, তার রোববার পড়ে ৯০ পয়েন্ট।

দুই দিনই বিএসইসি জানায়, পুঁজিবাজার বন্ধ হবে না। আর তাদের এই বক্তব্যের পর পতনের পর দিন সূচক বাড়ে দুইবারই। তবে এবার যেহেতু বন্ধ হয়েই যাচ্ছে, তাই মঙ্গলবার লেনদেন নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শঙ্কা স্পষ্ট।

ভারত, পাকিস্তানসহ প্রতিবেশী দেশগুলোতে করোনাকালে পুঁজিবাজারে উল্লম্ফন হলেও বাংলাদেশে উল্টোচিত্র। এখানে বিনিয়োগকারীরা সহজেই আতঙ্কিত হয়। আর গুজবে শেয়ার বিক্রি করে ক্ষতির মুখে পড়ে।

তবে মঙ্গলবারের লেনদেনে শেয়ার বিক্রি করে লোকসান কমানোর চিন্তা থেকে সরে আসার পরামর্শ দিয়েছেন পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা।

সাত দিনে পুঁজিবাজার বন্ধ থাকবে এমন ধারণা করে শেয়ার বিক্রির করলেও তাতে কোনো উপকার আসবে বলে বিনিয়োগকারীদের। মঙ্গলবার শেয়ার বিক্রি করলে সেই টাকা পাওয়া যাবে পরবর্তীতে পুঁজিবাজার খোলার অন্তত একদিন পর। ফলে পুঁজিবাজার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এমন আতঙ্কে শেয়ার বিক্রি করা বোকামি হবে বলেও মন্তব্য তাদের।

কী বলছেন বিশ্লেষজ্ঞরা

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমদে বলেন, ‘পুঁজিবাজার বন্ধ হচ্ছে, তাহলে তো আতঙ্ক বাড়বেই।’

এই আতঙ্কের যৌক্তিকতা কী- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আতঙ্কিত হয়ে শেয়ার বিক্রি করার জন্য কোনো কারণ প্রয়োজন নেই। ...আমাদের বিনিয়োগকারীরাই একমাত্র না জেনে না বোঝে, শেয়ার বিনিয়োগ করে। আবার লোকসানে থাকলেও লোকসান কমাতে শেয়ার বিক্রি করে।

‘তবে পুঁজিবাজার বন্ধ হচ্ছে এতে আতঙ্কের কিছু নেই। আবার যখন খোলবে তখন বাজার আরও ভালো হতে পারে। প্রথম পর্যায়ে পুঁজিবাজার বন্ধ থাকার পর আমরা দেখেছি সূচক প্রায় ছয় হাজারের কাছাকাছি উঠেছিল। ফলে আতঙ্কিত না হয়ে অপেক্ষা করা উচিত।’

ব্র্যাক ইপিএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সাবেক প্রধান গবেষণা কর্মকর্তা দেবব্রত কুমার সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সাত দিনের জন্য বা বেশি হতে পারে, পুঁজিবাজার বন্ধ হচ্ছে এতে আতঙ্কের কিছু নেই। এখন যারা শেয়ার বিক্রি করবেন তারা হয়ত লোকসান কমানো জন্য বিক্রি করবেন নয়ত পুঁজিবাজার খারাপ যাচ্ছে এজন্য শেয়ার বিক্রি করে ঝুঁকিমুক্ত থাকবেন চাইবেন।

‘যারা শেয়ার বিক্রি করবেন তারা সেই টাকা পাওয়ার জন্য একদিন সেটেলমেন্ট সময় দিতে হবে। কিন্ত সেটি হচ্ছে না। মঙ্গলবারের পর বুধবার থেকে বন্ধ হচ্ছে পুঁজিবাজার। পরবর্তীতে পুঁজিবাজার যখন খোলবে তখন সেই টাকা পাবেন। ফলে এ সময়ে শেয়ার বিক্রি না করে অপেক্ষা করা উচিত।’

ভিআইপিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিদুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সাতদিনে যারা শেয়ার কিনত তারা কাল কিনবে। আর যাদের লাভ হয়েছে বলে শেয়ার বিক্রি করতে চাচ্ছিলেন তারা মঙ্গলবার শেয়ার বিক্রি করবেন। ফলে সার্বিকভাবে মঙ্গলবার লেনদেন বাড়ার সম্ভাবনা বেশি।’

তিনি বলেন, ‘এটি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের ক্ষেত্রে বেশি প্রযোজ্য হলেও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের লাভে শেয়ার থাকলে বিক্রি করা উচিত। নয়ত বিক্রি করা উচিত নয়।’

কী হবে মার্জিন ঋণধারীদের

পুঁজিবাজারে যারা মার্জিন ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করেছেন তাদের ক্ষেত্রে এ সময়ে কি হবে জানতে চাইলে দেবব্রত কুমার সরকার বলেন, ‘মার্জিন ঋণধারীরা যদি মনে করে মঙ্গলবার শেয়ার বিক্রি করে সমন্বয় করবেন তাহলে সেটি ভুল হবে। কারণ শেয়ার বিক্রির পর সেলেটমেন্ট হওয়ার পরই কেবল ঋণ সমন্বয় হয়।’

‘ফলে শেয়ার বিক্রি করলেও সাতদিনে সুদ দিতে হবে। তাই এই সময়ে শেয়ার বিক্রি করে মার্জিন ঋণ সমন্বয়ের ভাবনা ভুল হবে।’

একই বিষয় বলেন শাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার শেয়ার বিক্রি করে মার্জিন ঋণ সমন্বয়ের সুযোগ নেই।’

বাংলাদেশে মার্জিন ঋণের সুদের হার অনেক বেশি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটি হওয়া উচিত ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের যে কোনো সুদের তুলনায় কম। কারণ, এটি ঝুঁকিপূর্ণ ঋণ। তাই পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে মার্জিন ঋণ পরিহার করাই শ্রেয়।’

এর আগে গত বছরের করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহতায় ২৬ মার্চ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত বন্ধ ছিল পুঁজিবাজারের লেনদেন। এরপর বাজার আবার চালু হলে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত চাঙ্গা ছিল পুঁজিবাজার।

এ বিভাগের আরো খবর