ব্যাংক খোলা থাকবে না বলে আগামী ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন বিএসইসি।
গত ৫ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের লকডাউনে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো আড়াই ঘণ্টার জন্য খোলা থাকলেও এবার কঠোর লকডাউনে কেবল বন্দর এলাকার ব্যাংক খোলা রাখার সিদ্ধান্ত এসেছে।
বিএসইসি আগেই জানিয়েছিল, ব্যাংক খোলা থাকলে পুঁজিবাজারে লেনদেন চালু থাকবে। কিন্তু যেহেতু ব্যাংক বন্ধ থাকলে, তাই পুঁজিবাজার চালু রাখা সম্ভব নয় বলছে বিএসইসি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বুধবার থেকে শুরু হওয়া লকডাউনে বন্ধ থাকবে ব্যাংকের কার্যক্রম। তবে বিমানবন্দর, নৌবন্দর ও স্থলবন্দর এলাকায় যেসব ব্যাংক রয়েছে সেগুলো সীমিত আকারে খোলা থাকবে।’
এমন অবস্থায় পুঁজিবাজারের লেনেদন সম্ভব কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, পুঁজিবাজার নিয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না।
পরে বিএসইসির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে একজন বলেন, ‘আমরা আগেই বলেছিলাম ব্যাংকের কার্যক্রম চালু থাকলে পুঁজিবাজারের লেনদেন চালু থাকবে। যেহেতু ব্যাংক বন্ধ থাকছে সেহেতু লেনদেন চালানো সম্ভব নয়। তবে বিষয়টি আমাদের মুখপাত্র আরও স্পষ্ট করবেন।’
- আরও পড়ুন: লকডাউনে ব্যাংক খোলা কেবল বন্দরে
যোগাযোগ করা হলে বিএসইসি কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা মনে প্রাণে চাই পুঁজিবাজার খোলা থাকুক। আমাদের এখানে যে লেনদেন হয় সেটি কম নয়। প্রতিদিন চারশ-পাঁচশ কোাটি টাকার লেনদেন হচ্ছে। ফলে এটি সেলেমেন্টর জন্য অব্যশই ব্যাংক খোলা থাকতে হবে। আমরা এখনও বলব, ব্যাংক খোলা থাকলে পুঁজিবাজার খোলা থাকবে।’
গত ৫ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া এক সপ্তাহের লকডাউনে সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত লেনদেন চলে। এই লকডাউন শেষ হওয়ার আগেই সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেয়া হয়, ১৪ এপ্রিল থেকে আরও কড়াকড়ি থাকবে। এবার জরুরি সেবা ছাড়া সরকারি-বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে না।
তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ব্যাংক হচ্ছে অত্যাবশ্যকীয় সেবা। এ সেবা দিতে আমরা বাধ্য এবং এটা চলমান রাখতে হবে।… ‘এ সংকটের মধ্যেও ব্যাংক খোলা রাখতে হবে। কারণ, মানুষ ব্যাংকিং লেনদেন না করতে পারলে অন্যান্য সংকটে পড়বে। চিকিৎসার জন্যও ব্যাংকের টাকা দরকার। সরকারের নির্দেশনার সঙ্গে সমন্বয় করে কীভাবে, কোন কৌশলে ব্যাংকিং সেবা দেয়া যায় সেটা সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
এর মধ্যে সোমবার সরকারের পক্ষ থেকে যে প্রজ্ঞাপন আসে, তাতে স্পষ্টতই উল্লেখ ছিল আর্থিক প্রতিষ্ঠানও বন্ধ থাকবে।
তবে এর আগে কখনও ব্যাংক বন্ধ থাকেনি আর বিকালে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে এই বিষয়টি নিয়ে চলে দীর্ঘ বৈঠক। এরপর এক সার্কুলারে জানানো হয়, বন্দরকেন্দ্রীক ব্যাংকের শাখা ছাড়া বাকি সবগুলো বন্ধ থাকবে এই এক সপ্তাহ। ফলে পুঁজিবাজার বন্ধ রাখা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকছে না।
তবে মঙ্গলবার পুঁজিবাজারে লেনদেন সকাল ১০টা থেকে বেলা একটা পর্যন্ত চলবে।