চলতি সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঘুরে দাঁড়িয়েছে পুঁজিবাজার। টানা তিন দিন উত্থানের পর দুদিন সূচক কমেছিল। তখন নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিএসইসির পক্ষ থেকে ৬৬ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে দেয়াকে কারণ হিসাবে দেখানো হয়।
কিন্তু সোমবার লেনদেনের শুরুতে সূচকের উত্থানে সেই আতঙ্ক অনেকটাই কমে গেছে।
এদিকে সোম ও মঙ্গলবার আধা ঘণ্টা বেশি লেনদেন হবে পুঁজিবাজারে। চলমান করোনা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় সরকার ১৮ দফা নির্দেশনা দিয়ে গত সপ্তাহের সোমবার থেকে সাত দিনের লকডাউন ঘোষণা করে।
লকডাউনের শেষ দিন ছিল রোববার। তবে সেদিনই সরকার জানায়, সাত দিনের লকডাউন সোম ও মঙ্গলবারও অব্যাহত থাকছে। এমন সিদ্ধান্ত আসার পর বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, এই দুদিন ব্যাংকের কার্যক্রম আধা ঘণ্টা বেশি চলবে।
এতে আগের ঘোষণা করা সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টার পরিবর্তে বেলা ১টা পর্যন্ত চলবে ব্যাংকের লেনদেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) আগের লেনদেন সময়সীমা দুই ঘণ্টা থেকে বাড়িয়ে আড়াই ঘণ্টা করেছে। ফলে পুঁজিবাজারের লেনদেন চলবে সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত।
পতনে ছড়ায় আতঙ্ক
লকডাউনের মধ্যে চলমান লেনদেনে বুধবার বিএসসির কমিশন সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয় ৬৬ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে দেয়ার। তার পরের দিন লেনদেনে সূচকের পতন হয় ৮২ পয়েন্ট।
পুঁজিবাজারে পতন ঠেকানো, বিনিয়োগকারীদের লোকসান থেকে রক্ষা করতে শনিবার আবারও জানানো হয় ৬৬ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস ওঠানো হলেও সার্কিট ব্রেকারে থাকবে বিশেষ সুবিধা। ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে দেয়া কোম্পানিগুলো দিনে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ দর বাড়লেও কমবে ২ শতাংশ।
এমন সিদ্ধান্তের পর প্রথম লেনদেনে রোববারও আশ্বস্ত হয়নি বিনিয়োগকারীরা, ফলে সূচক কমে ৯০ পয়েন্ট।
সোমবারের লেনদেনেও ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে দেয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দর কমেছে। তবে বেড়েছে অন্যান্য খাতের কোম্পানির শেয়ারদর। এর প্রভাবে বেড়েছে সূচক।
বিশ্লেষকের বক্তব্য
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তিনদিন টানা সূচক বাড়ার পর দুদিন সূচক কমেছিল। ফলে সে সময়টিকে স্বাভাবিকভাবে বলা যায় মূল্য সংশোধন হয়েছে। এখন আবার বাড়ছে।
‘ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে দেয়ার কারণে সূচক কমেছিল এটা যারা বলেছেন, তারা মূলত আতঙ্কে বলেছেন। যদি তাই হতো, তাহলে সোমবারও সূচকের বড় পতনে লেনদেন শুরু হওয়ার কথা।’
তিনি বলেন, ‘আতঙ্কের কিছু নেই। শেয়ারের দর বাড়বে, কমবে এটাই পুঁজিবাজারের স্বাভাবিক অবস্থা।’
সূচক ও লেনদেন
লেনদেন শুরুর ৫ মিনিটে সূচকের উত্থান হয় ১৩ পয়েন্ট। ক্রমেই বাড়তে থাকে সূচকের উত্থান। ৩০ মিনিটে ডিএসই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫৬ দশমিক ২৩ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়ায় ৫ হাজার ২২০ পয়েন্টে।
শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস ১৩ দশমিক ৫০ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ১৯১ পয়েন্টে। বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক ২৯ দশমিক ২৫ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৯৮২ পয়েন্টে।
এ সময়ে লেনদেন হওয়া কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৬৬টির, কমেছে ৬১টির। দর পাল্টায়নি ৪৩টির। মোট লেনদেন হয়েছে ৮৬ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই ১০৯ দশমিক ৭৬ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৯৩ পয়েন্টে। লেনদেন হওয়া কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৪০টির, কমেছে ১৪টির। দর পাল্টায়নি ১৪টির। লেনদেন হয়েছে মোট ১ কোটি টাকা।