বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

খুলেছে বিপণিবিতান, তবু শঙ্কায় ব্যবসায়ীরা

  •    
  • ৯ এপ্রিল, ২০২১ ১৪:৪১

নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ডা. দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন বলেন, ‘যে স্বাস্থ্যবিধি মানবে না, তার দোকান বন্ধ করে দেয়া হবে।’

টানা চার দিন বন্ধ থাকার পর লকডাউনের পঞ্চম দিন শুক্রবার খুলেছে ঢাকার বিপণিবিতানগুলো। করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়তির দিকে থাকায় ক্রেতার সংখ্যা খুবই কম। ফলে মার্কেট খুললেও ব্যবসা নিয়ে শঙ্কায় আছেন ব্যবসায়ীরা।

রাজধানীর নিউমার্কেট, চাঁদনী চক, মালিবাগ, মৌচাক, শান্তিনগর এলাকায় দেখা যায় বিপণিবিতানগুলো সকালেই খুলেছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন থাকলেও ক্রেতাসমাগম কম। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকানগুলোতে বসেছেন বিক্রয়কর্মীরা।

এর আগে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ায় সরকার সারা দেশে কঠোর বিধিনিষেধ জারি করে ৪ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের লকডাউন দেয়। ১১ দফা বিধিনিষেধের মধ্যে গণপরিবহন ও শপিং মল বন্ধ থাকার কথা বলা হয়।

নির্দেশনা অনুযায়ী গত চার দিন শপিং মল, দোকানপাট ও বিপণিবিতান বন্ধ থাকলেও অলিগলির দোকানপাটই খোলা ছিল। কোথাও স্বাস্থ্যবিধির মানার প্রবণতা দেখা যায়নি।

লকডাউনের মধ্যেই বুধবার থেকে নগরীতে গণপরিবহন চলাচল উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। শপিং মল ও দোকানপাট খুলে দেয়ার দাবিতে রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ করেন ব্যবসায়ীরা। বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করে মার্কেট খুলে দেয়ার ঘোষণা দেয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ৯ এপ্রিল থেকে ১৩ এপ্রিল স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকবে শপিং মল ও দোকানপাট। তবে স্বাস্থ্যবিধি না মানলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।

মার্কেট খুলে দেয়া হলেও বিক্রি নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তারা জানান, করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় দোকানে ক্রেতার আগমন আগের মতো হবে না। তবে অনেকের ধারণা, সরকার যদি স্বাভাবিক নিয়মে স্বাস্থ্যবিধি মানার দিকে নজর দেয়, তবে মার্কেট আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসবে।

লকডাউনে টানা চার দিন বন্ধ রাখার পর খুলেছে রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেট। ছবিটি শুক্রবার সকালে নিউমার্কেট থেকে তোলা। ছবি: সাইফুল ইসলাম

ঢাকার মধ্যবিত্তদের প্রাণ নিউমার্কেট খুলে দেয়ায় ব্যবসায়ীরা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন। এবার ঈদ সামনে রেখে লাভের মুখ দেখতে পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন বিক্রেতারা।

নিউমার্কেটের বিক্রেতা জাহিদুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্লিজ ভাই আপনারা নেগেটিভ নিউজ কইরেন না। আমরা দুই ঈদে লোকসান খাইছি। এইবার একটু ঘুরে দাঁড়াইতে চাই। ক্রেতারা যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে তবে আমাদের ব্যবসা করতে কোনো সমস্যা হবে না।’

নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ডা. দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন বলেন, ‘যে স্বাস্থ্যবিধি মানবে না, তার দোকান বন্ধ করে দেয়া হবে।’

মৌচাক মার্কেট এলাকায় সেঞ্চুরি পাঞ্জাবির স্বত্বাধিকারী সনি বালা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঈদ ও পয়লা বৈশাখকে কেন্দ্র করে আমাদের ব্যবসা করতে হবে। গতবার এই সময় আমাদের অনেক বেশি ক্ষতি হয়েছে। এবারও যদি তাই হয়, তবে ব্যবসা করা কঠিন হয়ে যাবে।’

ক্রেতা নিয়ে চিন্তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সরকার যদি লকডাউন দেয় তবে একটা ভীতির সৃষ্টি হয়। আমাদের বেশির ভাগ ক্রেতা মধ্যবিত্ত শ্রেণির। করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়াতে অনেকেই কর্মহীন হয়ে পড়েন। তাই কেনাকাটাকে এবারও অনেকে গুরুত্ব দেবে না। আবার অনেকেই নিজের কাছে টাকা রেখে দিতে চাইবে।’

পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে বাজারে ক্রেতা থাকবে না বলে জানান ব্যবসায়ীরা।একদম বন্ধ করে দেয়ার চেয়ে সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা থাকলে তাদের সুবিধা হয়।

রাজধানীর শান্তিনগর এলাকায় টুইন টাওয়ার শপিং কমপ্লেক্স সকাল ৯টায় খোলা হলেও ক্রেতা নেই। দোকানের কর্মচারীদের স্যাভলন ও ব্লিচিং পাউডার দিয়ে দোকানের সামনে পরিষ্কার করতে দেখা গেছে। শপিং কমপ্লেক্সের মুনতাহা শাড়ি দোকানের মালিক মো সুমন জানালেন ভিন্ন কথা।

ব্যবসায় মন্দা তুলে ধরে সুমন বলেন, ‘আমাদের সবকিছু সরকারের হাতে। এমন লকডাউন ভীতি না তৈরি করে যদি আগের মতো স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব নিয়ম করা যায় তবে ব্যবসায়ীদের কোনো ঝামেলা হবে না। আপাতত দুই-চার দিন পর অবস্থা বুঝতে পারব।’

লকডাউনে টানা চার দিন বন্ধ রাখার পর শুক্রবার সকালে খুলেছে রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেট। ছবিটি বসুন্ধরা শপিং মল থেকে তোলা। ছবি: সাইফুল ইসলাম

বড় বড় শপিং মল ও দোকানের পাশাপাশি ব্যবসা করা নিয়ে চিন্তিত রয়েছেন রাস্তার ছোট ব্যবসায়ীরা। তাদের ক্ষেত্রে দিন বুঝে ব্যবসা করতে হবে।

মেয়েদের পোশাক একদরে বিক্রি করা ব্যবসায়ী মোস্তফা কামাল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা দিন গেলে হিসেব করি। মাল আনি আর বিক্রি করি। চার দিনে অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। দোকান নিয়ে বসলে তাও একটু সান্ত্বনা লাগে।

লকডাউনে টানা চার দিন বন্ধের মাঝে প্রতিদিনই বিক্ষোভ করেছেন ব্যবসায়ীরা। রাজধানীর নিউমার্কেট, গুলিস্তান এলাকায় বিক্ষোভের সময় পুলিশের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ব্যবসায়ীরা তখন জানান, করোনায় প্রথম ধাপের ‘লকডাউনে’ অর্থনৈতিকভাবে মার্কেট ও শপিং মলের ব্যবসায়ীদের মেরুদণ্ড ভেঙে পড়ে। তখন ক্ষতি হয়েছে প্রতিদিন প্রায় ১ হাজার ৭৪ কোটি টাকা।

এ বিভাগের আরো খবর