বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দাম বেড়েছে খেজুর-বেগুনের, কমেছে পেঁয়াজ-মুরগির

  •    
  • ৯ এপ্রিল, ২০২১ ১১:০৮

ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘কোনো পরিবহন বন্ধ না থাকলেও লকডাউনের কিছুটা প্রভাব বাজারে পড়েছে। আসছে পবিত্র রমজান। তা ছাড়া মাসের শুরুতে চাকরিজীবীদের পকেটে বেতনও এসেছে। তারা রোজার বাজার শুরু করেছেন।’

রোজার আর মাত্র পাঁচ দিন বাকি। বাজারে বেড়েছে ক্রেতার চাপ। যা কিছুটা অস্থিরতা এনেছে নিত্যপণ্যের দামে। তবে রোজায় ব্যাপক চাহিদার মুখে দাম বেড়েছে খেজুর, বেগুন, রসুন, আদার। আর পেঁয়াজের দাম আরও কমেছে। স্বস্তি ফিরছে মুরগির দামে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, পরিবহন বন্ধ না থাকলেও লকডাউনের কিছুটা প্রভাব বাজারে পড়েছে। আসছে পবিত্র রমজান। তা ছাড়া মাসের শুরুতে চাকরিজীবীদের পকেটে বেতনও এসেছে। তারা রোজার বাজার শুরু করেছেন।

সাধারণত অন্য সময় এক-দুই দিন বা সপ্তাহের বাজার করলেও অনেকেই রোজার পুরো মাসের বাজার একসঙ্গে করেন। এতে চাপ তৈরি হয় বাজারে, দামও কিছুটা বাড়ে।

সারা বছরের মধ্যে খেজুরের সবচেয়ে বেশি চাহিদা বাড়ে রোজায়। আর চাহিদার চাপ বুঝে প্রায় সব ধরনের খেজুরের দাম কেজিতে ২০ টাকা বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাব বলছে, গত সপ্তাহে সাধারণ মানের খেজুর বিক্রি হয়েছিল ১২০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি দরে। আর এখন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ৩৫০ টাকায়।বিক্রেতারা জানান, বাজারের সবচেয়ে কম দামের খেজুর জাহেদি আসে তিউনিশিয়া ও আলজেরিয়া থেকে। কিছুদিন আগেও এ খেজুরের কেজি ছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকা। এখন তা বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায়। একই দেশ থেকে আসা ধাবাস খেজুরও ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছে ২৪০ থেকে ২৫০ টাকায়।

সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে আসা নাগাল খেজুরসহ বিভিন্ন মানের আম্বার, আজোয়া, মরিয়ম খেজুরও আগের চেয়ে দাম বেড়ে ৫৫০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে শুক্রবার সকালে দেখা যায়, খুচরা ও পাইকারি বাজারে দামের কিছুটা হেরফের হয়েছে। তবে দামের হেরফের কাঁচাবাজারের পণ্যের চেয়ে মুদিপণ্যেই বেশি। তবে বাজারে অনেক খুচরা ক্রেতা হাজির হয়েছেন পাইকারি দামে সবজি কিনতে।

খেজুর বিক্রিতা নূর হোসেন বলেন, ‘পাইকারি বাজারে আগের চেয়ে দাম বেড়েছে। রোজার সময় ইফতারে মানুষ অন্য কিছু না নিলেও, খেজুর ছাড়া ইফতার চলে না। সারা বছর যত খেজুর বিক্রি হয়, রোজায় তার ১০ গুণ বেশি বিক্রি হয়। তাই রোজার আগে চাহিদা বাড়ে, দামও কিছুটা বেড়েছে।’

বাজারে সবজির মধ্যে খুচরায় দাম বেড়েছে বেগুনের। রোজার আরও কয়েক দিন বাকি থাকলেও এরই মধ্যে কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে গোল ও লম্বা বেগুনের দাম। আগের সপ্তাহ লম্বা বেগুন ৩৮ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হলেও তা ৫০ টাকায় ঠেকেছে। ৫০ থেকে ৫৫ টাকার গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়।

খুচরার পাশাপাশি পাইাকারিতেও বেগুনের দাম চড়া। মানভেদে লম্বা বেগুনের পাল্লা (৫ কেজি) ১১০ থেকে ১২০ টাকা থেকে ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩৫ টাকায়। গোল বেগুনের পাল্লায় ১০ টাকা বেড়ে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

পাইকারিতে বেড়েছে টমেটোর দামও। প্রতি পাল্লায় ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। বাড়তি রয়েছে মরিচের দামও। পাইকারিতে সপ্তাহখানেক আগে প্রতি পাল্লা ৯০ থেকে ১০০ টাকা থাকলেও তা বেড়ে ১০০ থেকে ১২০ টাকা হয়েছে। প্রতি কেজি ২৫ টাকা।

অন্য সবজির মধ্যে আগের মতোই পাইকারিতে প্রতি পাল্লা শসা ১১০ থেকে ১৩০, চিচিঙ্গা ৮০ থেকে ৯০, বরবটি ১৮০ থেকে ২০০, শিম ১০০ থেকে ১১০, ঢ্যাঁড়শ ১৬৫ থেকে ১৭০, টমেটো ৬০ থেকে ৭০, করলা ১৩০ থেকে ১৪০, উচ্ছে ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি গোল টমেটো ৩০ থেকে ৩৫, উচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০, করলা ৪০ থেকে ৪৫, ঢ্যাঁড়শ ৩৮ থেকে ৪০, শিম ৪০ থেকে ৪৫, বরবটি ৫৫ থেকে ৬০, চিচিঙ্গা ৩২ থেকে ৩৫, শসা ৩৮ থেকে ৪০, পেঁপে ৩০ থেকে ৩৫, পটোল ৪০ থেকে ৪৫, চিচিঙ্গা, ঝিঙ্গা ও ধুন্দল ৪৫ থেকে ৫০, মুলা ৩০ থেকে ৩৫ এবং মরিচ ৬০ টাকা।

সবজি বিক্রেতা আলতাফ বলেন, ‘রোজায় চাহিদা অনুযায়ী কিছু সবজির দাম বেড়েছে, কিন্তু খুব বেশি নয়। বাজারে খুচরা সবজির ব্যবসায়ীর পাশাপাশি অনেক খুচরা ক্রেতাও এসেছেন। বেশি দিন ঘরে রেখে খাওয়া যায়, এমন সবজি পাল্লায় কিনে নিচ্ছেন অনেকে। এখনও সবজির সরবরাহ ভালো রয়েছে। লকডাউন বাড়লে দাম আরও বাড়তে পারে।’

কারওয়ান বাজারে ক্রেতা আশারাফ আহমেদ বলেন, ‘রোজা রেখে প্রিতিদিন বাজার করা কষ্টকর। তাই কিছু জিনিস একসঙ্গে কিনে রাখছি। কিন্তু খুচরায় দাম অনেক। বিশেষ করে সবজির দাম প্রায় দ্বিগুণ। তাই টমেটো, পেঁয়াজ, বেগুন এক পাল্লা করে নিচ্ছি। এগুলো তো সারা রোজায় কাজে লাগবে। আবার খরচ কিছুটা কম হচ্ছে।’

এদিকে অস্বাভাবিক দাম বেড়েছে লেবুর। লেবুর পাইকারি বিক্রেতা আবদুল হাই বলেন, ‘পাইকারিতে ছোট আকারের লেবু প্রতি শ ৩৫০ থেকে ৪০০, মাঝারিগুলো ৪৫০ থেকে ৫০০ এবং বড় লেবু ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

‘খুচরায় দাম দ্বিগুণের বেশি। ছোট লেবু প্রতি হালি ৪০ টাকা, মাঝরিগুলো ৫৫ থেকে ৬০ টাকা এবং বড় লেবু ৮০ টাকায় কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের।’

আগের চেয়ে কমেছে পেঁয়াজের দাম। পাইকারিতে প্রতি পাল্লায় ১০ টাকা কমে দেশি পেঁয়াজ ১৫৫ থেকে ১৬০, ভারত থেকে আমদানির পেঁয়াজ ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর খুরচায় ৩ থেকে ৪ টাকা কমে দেশি পেঁয়াজ ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা এবং ভারতের পেঁয়াজ ৩২ থেকে ৩৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলুর পাল্লা পাইককারিতে ৯০ থেকে ৯৫ এবং খুচরায় ২০ থেকে ২২ টাকা।

মুদিপণ্যের মধ্যে রোজার প্রয়োজীয় পণ্য ছোলার দাম অপরিবর্তিত থাকলেও কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়। তবে আমদানি করা মাঝরি আকারের মসুর ডালের দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি মসুর ডাল আগের মতোই ১১৫ থেকে ১২০ টাকা। মানভেদে মুগডাল বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকায়। কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে দেশি রসুনের কেজি ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, তবে আমদানি করা রসুন আগের মতোই ১১৫ থেকে ১২০ টাকাতেই রয়েছে। দাম বেড়ে ৮০ থেকে ১০০ টাকার দেশি আদা ১০০ থেকে ১২০ টাকা এবং ৭০ থেকে ১১০ টাকার আমদানি করা আদা বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১৪০ টাকা। প্যাকেট আটার কেজি ৩২ থেকে ৩৫ টাকা।

চিনি ৬৮ থেকে ৭০ টাকা, কোম্পানি ও মান ভেদে লবণ ২৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মসলার মধ্যে ২০ টাকা বেড়ে জিরা ৩২০ থেকে ৪০০ টাকা, মান ভেদে ১০০ থেকে ২০০ টাকা বেড়ে ছোট এলাচ ২৪০০ থেকে ৩৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ভোজ্যতেলের দাম না বাড়লেও তা আগে থেকেই বেশ চড়া। প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১২৫ থেকে ১৩০, খোলা পাম অয়েল ১১০ থেকে ১১৫, সয়াবিনের এক লিটারের বোতল ১৪০, পাঁচ লিটারের বোতল ৬৪০ থেকে ৬৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

রাজধানীর কাওরান বাজারের মুরগির দোকানে কর্মীদের ব্যস্ততা। নিউজবাংলা

বেশ কিছুদিন ধরে মুরগির চড়া দাম খানিকটা কমেছে। কেজিতে ১০ টাকা কমে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা এবং ২০ টাকা কমে সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৯০ থেকে ৩০০ টাকায়। এ নিয়ে দুই সপ্তাহে কমেছে ৫০ টাকার মতো। তবে আগের মতোই ডিম পাড়া লাল ও সাদা লেয়ার মুরগি ২১০ থেকে ২২০ টাকায় এবং দেশি মুরগির প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকায়। মাংসের মধ্যে গরু ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা এবং বকরি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, খাসি ৮২০ থেকে ৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

লেয়ার মুরগির ডিম ডজন বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকায়, হালি ৩২ থেকে ৩৩ টাকা।

এ বিভাগের আরো খবর