বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মার্চে রপ্তানি আয়ে উল্লম্ফন, আগামী নিয়ে শংকা

  •    
  • ৬ এপ্রিল, ২০২১ ১৮:৩৪

মার্চের উল্লম্ফনে চলতি অর্থবছরের সার্বিক রপ্তানি আয়ও ঘুরে দাঁড়িয়েছে। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) গত ২০১৯-২০ অর্থবছরের একই সময়ের প্রায় সমান রপ্তানি আয় দেশে এসেছে।

করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেও রপ্তানি আয়ে উল্লম্ফন হয়েছে। সদ্য শেষ হওয়া মার্চ মাসে ৩০৭ কোটি ৬০ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। এই অংক গত বছরের মার্চের চেয়ে ১২ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। ২০২০ সালের মার্চে ২৭৩ কোটি ২০ লাখ ডলার আয় হয়েছিল।

মার্চের এই উল্লম্ফনে চলতি অর্থবছরের সার্বিক রপ্তানি আয়ও ঘুরে দাঁড়িয়েছে। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) গত ২০১৯-২০ অর্থবছরের একই সময়ের প্রায় সমান রপ্তানি আয় দেশে এসেছে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) মঙ্গলবার রপ্তানি আয়ের হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, এই অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে মোট ২ হাজার ৮৯৩ কোটি ৮৩ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ২ হাজার ৮৯৭ কোটি ৩৮ লাখ ডলার।

ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, তিন মাস ধরে টানা কমছিল দেশের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচক। তবে মার্চে তা ঘুরে দাঁড়িয়ে বেশ ভালো প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

করোনাভাইরাস মহামারিতে গত বছরের এপ্রিলে রপ্তানি আয় তলানিতে পৌঁছলেও এরপর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। তবে ডিসেম্বরে পৌঁছে ফের ধাক্কা খায়, সেই ধারা ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অব্যাহত ছিল।

টানা তিন মাসের ওই ধাক্কায় অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) গত ২০১৯-২০ অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে সার্বিক রপ্তানি কমে ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ।

রপ্তানিকারক ও অর্থনীতির গবেষকেরা বলছেন, ইউরোপ-আমেরিকায় কোভিড-১৯ সংক্রমণ পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হওয়ায় মার্চে রপ্তানি আয় বেড়েছে। তবে বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এর তৃতীয় ঢেউ শুরু হওয়ায় আগামীতে রপ্তানি আয় কমতে পারে বলেও আশঙ্কা তাদের।

ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, জুলাই-মার্চ সময়ে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে দুই হাজার ৩৪৮ কোটি ৭৯ লাখ ডলার, যা মোট রপ্তানি আয়ের ৮১ দশমিক ১৬ শতাংশ।

এই নয় মাসে নিট পোশাক রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে এক হাজার ২৬৫ কোটি ৪২ লাখ ডলার। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ৮৫ শতাংশ।

তবে ওভেন পোশাক রপ্তানি বেশ কমেছে। এই নয় মাসে এই খাত থেকে আয় হয়েছে এক হাজার ৮৩ কোটি ৩৭ লাখ ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১০ দশমিক ৮৩ শতাংশ কম।

করোনাভাইরাস মহামারিতে বিশ্বের অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়ায় গত বছরের এপ্রিলে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় তলানিতে ঠেকেছিল; ওই মাসে সব মিলিয়ে মাত্র ৫২ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছিল। পোশাক রপ্তানি থেকে আয় হয়েছিল মাত্র ৩৬ কোটি ডলার।

রপ্তানি আয়ের গত নয় মাসের চিত্র বিশ্লেষণ করে অর্থনীতির গবেষক পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের রপ্তানি আয় ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছিল। কিন্তু বাংলাদেশের প্রধান বাজার ইউরোপ-আমেরিকায় কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয়-তৃতীয় ঢেউয়ে ডিসেম্বরে ফের ধাক্কা খায়। ওই দেশগুলোতে পরিস্থিতির এখন কিছুটা উন্নতি হওয়ায় মার্চে রপ্তানি বেড়েছে। তবে আমাদের দেশের অবস্থা বেশ খারাপ। প্রতিদিনই মৃত্যু ও আক্রান্ত বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে পণ্য উৎপাদন কার্যক্রম ব্যাহত হলে আগামীতে রপ্তানিও কমবে।’

রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ সাবেক সভাপতি বাংলাদেশ চেম্বারের সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা এখন অতি প্রয়োজনীয় কম দামি পোশাক বেশি রপ্তানি করছি। সে কারণেই নিট খাতে রপ্তানি বাড়ছে। আর ওভেনে কমছে।’

অন্য খাতগুলোর মধ্যে জুলাই-মার্চ সময়ে পাট ও ওষুধ রপ্তানি বাড়লেও চামড়া, হিমায়িত মাছসহ অন্যান্য খাতে আয় কমেছে

করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে চলতি অর্থবছরে ৪৮ বিলিয়ন (৪ হাজার ৮০০ কোটি) ডলারের পণ্য ও সেবা রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেছে সরকার, যা গত অর্থবছরের রপ্তানি আয়ের চেয়ে ১৯ দশমিক ৭৯ শতাংশ বেশি।

গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ ৩ হাজার ৩৬৭ কোটি ৪০ লাখ (৩৩.৬৭ বিলিয়ন) ডলার আয় করে, যা ছিল আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৭ শতাংশ কম। আর লক্ষ্যের চেয়ে আয় কম ছিল ২৬ শতাংশ।

এ বিভাগের আরো খবর