ডি-এইট দেশগুলোর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (সিসিআই) সভাপতি হলো ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই)।
সোমবার বিকালে ডি-এইট বিজনেস ফোরামের ভার্চ্যুয়াল বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বৈঠকে বক্তৃতা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন।
ডি-এইট উন্নয়নশীল আটটি দেশের একটি জোট। এ জোটে বাংলাদেশ ছাড়াও আছে মিশর, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান ও তুরস্ক।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ডি-৮ সদস্য রাষ্ট্রগুলো বিশ্ব জিডিপির পাঁচ ভাগের মালিক এবং এই আট রাষ্ট্রের নিজস্ব জনসংখ্যা বিশ্ব জনসংখ্যার ১৫ ভাগেরও বেশি।
মোমেন বলেন, দেশগুলো কেবল তাদের নিজস্ব বাজার কাঠামো ও সেবাখাতের সমন্বয় করেই বিশাল জনসংখ্যার ভাগ্যোন্নয়ন করতে পারে, কারণ এটা বড় এক বাজার, যা নিয়ন্ত্রণে অন্যের সহযোগিতার দরকার নেই। আট দেশই তাদের বাজার ও ভাগ্য ঠিক করতে পারে।
তিনি বলেন, ডি-এইট সিসিআই (চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ) তাদের নিজস্ব নেটওয়ার্কিং ব্যবস্থা ছাড়াও দেশগুলোর সরকারি খাতের সঙ্গেও কার্যকর সহযোগিতা এবং অংশীদারিত্বের মাধ্যমে মূল ভূমিকা নিতে পারে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ডি-এইট সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে আন্তঃবাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে মনোযোগী হওয়ার আহবান জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের পারস্পারিক বিনিয়োগের সুযোগসহ সাধারণ বিনিয়োগ নীতি, গাইডলাইন এবং কৌশলগুলি দরকার; এবং শুল্ক এবং নন-শুল্ক বাধা হ্রাস করার জন্য কাজ করা উচিত। এসএমই এবং সুনীল অর্থনীতি খাতসহ বিভিন্ন সংস্থা ও সেবা খাতের কেন্দ্রগুলির জন্য আমাদের উন্নয়ন, গবেষণা ও উন্নয়ন, প্রযুক্তি স্থানান্তর, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সহায়তার জন্য তহবিল তৈরি করতে হবে। আমরা বিশেষত উদ্ভাবনের ক্ষেত্র এবং তাদেরকে আমাদের উন্নয়নমূলক কৌশল সার্কিটের মূলধারায় নিয়ে জোর দিতে চাই।’
মন্ত্রী ডি-এইট সিসিআইয়ের নতুন চেয়ার, ফেডারেশন অফ বাংলাদেশ চেম্বারস অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিকে (এফবিসিসিআই) অভিনন্দন জানান এবং চেম্বারস এবং কমোডিটির ইউনিয়ন, সদ্য বিদায়ী চেয়ার তুরস্কের এক্সচেঞ্জকে (টিওবিবি) ধন্যবাদ জানান।
ডি-এইটের দশম শীর্ষ সম্মেলন বিজনেস ফোরামের বৈঠকের মাধ্যমে শুরু হয় সোমবার, ৮ এপ্রিল রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের শীর্ষ সম্মেলনের মাধ্যমে যা শেষ হবে। সেদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৭ সালে প্রথম ডি-এইট শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন। তারপর ১৯৯৯ সালে ঢাকায় দ্বিতীয় ডি-এইটি শীর্ষ সম্মেলনটি সফলভাবে আয়োজন করে বাংলাদেশ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দশম ডি-এইটি শীর্ষ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করবেন এবং বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেবেন। এ ছাড়া অন্যান্য ডি-এইটি রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানেরা ভার্চুয়াল মাধ্যমে এ শীর্ষ সম্মেলনে বক্তব্য দেবেন।
এই সম্মেলনের স্বাগতিক দেশ হিসেবে বাংলাদেশ আগামী দুই বছর ডি-এইটেরচেয়ারের দায়িত্ব পালন করবে।
এবারের শীর্ষ সম্মেলনে বর্তমান চেয়ার তুরস্ক, বাংলাদেশকে ডি-এইট চেয়ারের দায়িত্ব হস্তান্তর করবে।
৮ এপ্রিলের শীর্ষ সম্মেলনের প্রস্তুতিমূলক সভা ভার্চুয়ালি হবে ৭ এপ্রিল। সেদিন ১৯তম ডি-এইট কাউন্সিল অফ মিনিস্টারস এবং তার আগে ৫ ও ৬ এপ্রিল ৪৩তম ডি-এইট কমিশনের সেশন হবে।
কাউন্সিল অফ মিনিস্টারসের সভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন।
চতুর্থ শিল্পবিল্পবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে খাপ খাইয়ে ডি-এইট দেশগুলোতে যুবসমাজ যাতে তাদের সম্ভাবনাকে বিকশিত করতে পারে, সে জন্য সম্মেলনের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এবারের প্রতিপাদ্য ‘রূপান্তরিত বিশ্বের অংশীদার: যুব ও প্রযুক্তির শক্তিকে বিকশিত করা।’
সম্মেলনে ‘ঢাকা ঘোষণা ২০২১’ শীর্ষক ডকুমেন্ট গৃহীত হবে।