বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ফ্লোর প্রাইস, ডিএসইর ভুলে শাহজালালের শেয়ারধারীদের ক্ষতি

  •    
  • ৫ এপ্রিল, ২০২১ ১৭:২১

ফ্লোর প্রাইস অনুযায়ী, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার দর কমতে থাকলে কখনও তা ১৯ টাকা ২০ পয়সায় নিচে নামবে না। কিন্তু এটি হওয়ার কথা ১৯ টাকা ৯০ পয়সা। এ হিসাবে ব্যাংকটির শেয়ারধারীরা শেয়ারপ্রতি ৭০ পয়সা লোকসান গুনতে হবে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েব সাইটে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ফ্লোর প্রাইস দেয়া আছে ১৯ টাকা ২০ পয়সা। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সংশোধিত ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণের যে নির্দেশনা দিয়েছে তাতে ব্যাংকটির ফ্লোর প্রাইস হওয়ার কথা ১৯ টাকা ৯০ পয়সা।

অর্থাৎ শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার দর কমতে থাকলে কখনও তা ১৯ টাকা ২০ পয়সায় নিচে নামবে না। কিন্তু এটি হওয়ার কথা ১৯ টাকা ৯০ পয়সা। এ হিসাবে ব্যাংকটির শেয়ারধারীরা শেয়ারপ্রতি ৭০ পয়সা লোকসান গুনতে হবে।

রেকর্ড ডেটের পর দিন লেনদেনে সোমবার ব্যাংকটির শেয়ার দর নেমে এসেছে ১৯ টাকা ৬০ পয়সায়। সর্বশেষ সংশোধন হওয়া বিএটিবিসির ক্ষেত্রেও শুধু বোনাস লভ্যাংশের ভিত্তিতে ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ হয়েছিল।

শাহজালাল ব্যাংকের লভ্যাংশ

২০২০ সালের সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য শেয়ারধারীদের জন্য ৭ শতাংশ (শেয়ারপ্রতি ৭০ পয়সা) নগদ ও ৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে শাহজালাল ব্যাংক। ২০২০ সালের তুলনায় শেয়ারপ্রতি ২০ পয়সা বেশি দেবে তারা।

আগের বছর কোম্পানিটি ৫ শতাংশ করে বোনাস ও নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল।

গত ডিসেম্বরে সমাপ্ত অর্থবছরে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ১ টাকা ৯৫ পয়সা, যা আগের বছরের তুলনায় ২৫ পয়সা বেশি।

লভ্যাংশের বিপরীতে নতুন ফ্লোর প্রাইস

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বিএসইসি ৭৬১তম সভায় ফ্লোর প্রাইস সংক্রান্ত নতুন সিদ্ধান্তটি নেয়া হয়। এতে বলা হয়েছে, তালিকাভুক্ত কোম্পানির ঘোষিত বোনাস বা রাইট শেয়ারের রেকর্ড ডেটের পরবর্তী সর্বনিম্ন দরকে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির সংশোধিত ফ্লোর প্রাইস হিসাবে বিবেচনা করা হবে।

এ হিসেবেই ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো বাংলাদেশ লিমিটেডের (বিএটিবিসি) সংশোধিত ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করা হয় ৫১৮ টাকা। বিএটিবিসি তার শেয়ারধারীদের জন্য নগদের পাশাপাশি ২০০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করেছিল। রেকর্ড ডেটের আগে কোম্পানিটির সর্বশেষ দর ছিল ১ হাজার ৫৫৪ টাকা। বিএসইসির নির্দেশনার পর এটাই ছিল প্রথম ফ্লোর প্রাইস সংশোধন।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত অন্যান্য কোম্পানিগুলো যারা বোনাস ও রাইট শেয়ার ইস্যু করবে তাদের ক্ষেত্রে এভাবেই ফ্লোর প্রাইস সংশোধন করা হবে বলে জানানো হয়।

কিন্ত শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ক্ষেত্রে দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। ব্যাংকটির রেকর্ড ডেটের আগের সর্বনিম্ম দর ছিল ২২ টাকা। যেমনটি ছিল বিএটিবিসির ক্ষেত্রে, ১ হাজার ৫৫৪ টাকা। এ হিসাবে ব্যাংকটি ৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করায় ব্যাংকটির ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ হওয়ার কথা ১৯ টাকা ৯০ পয়সা।

কিন্তু ব্যাংকটির ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করা হয়েছে ১৯ টাকা ২০ পয়সা।

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বিএসইসি। ছবি: নিউজবাংলা

কী বলছে বিএসইসি ও ডিএসই

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করার দায়িত্ব ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই)। আমরা যে নির্দেশনা দিয়েছি সে অনুযায়ীই সংশোধিত ফ্লোর প্রাইস হওয়ার কথা। তারপরও যদি কোনো সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে তা যাচাই করা হবে।’

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের উপ মহাব্যবস্থাপক শফিকুর রহমান সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে কথা বলে নিউজবাংলাকে জানান, ‘ফ্লোর প্রাইস সংশোধনের ক্ষেত্রে বিএসইসির যে নীতিমালা আছে সে অনুযায়ীই করা হয়েছে।’

সংশোধিত ফ্লোর প্রাইসে নগদ লভ্যাংশ বিবেচনায় না নিয়ে শুধু বোনাস লভ্যাংশ অনুযায়ী হওয়ার কথা থাকলেও সেভাবে করা হয়েছে কি না এমন প্রশ্নে শফিকুর বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট বিভাগ জানিয়েছে শাহজালাল ব্যাংকের ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণে কোনো ভুল হয়নি।’

ভুল ছিল দুই কোম্পানির ক্ষেত্রে

এর আগে বোনাস দিয়ে মুন্নু এগ্রোর শেয়ার সংখ্যা ১০ শতাংশ আর ন্যাশনাল পলিমার ১০০ শতাংশ (একটির বিপরীতে একটি) রাইট শেয়ার দেয়ার পরেও ফ্লোর প্রাইস সমন্বয় হয়নি। ফ্লোর প্রাইস সমন্বয় না হওয়ায় এই দুই কোম্পানির শেয়ারধারীরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে মুনাফা পেয়েছেন।

করোনা সংক্রমণের পর পুঁজিবাজারে মূল্য পতন ঠেকাতে গত বছরের ২২ মার্চ একটি নির্দিষ্ট দরের নিচে দর নামতে পারবে না বলে ঠিক করে দেয় বিএসইসি। এটি পরিচিতি পায় ফ্লোর প্রাইস হিসেবে।

মুন্নু এগ্রোর ফ্লোর প্রাইস ঠিক করা ছিল ৭৯৪ টাকা ৮০ পয়সা। ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার সমন্বয় করা দাম হওয়ার কথা ছিল ৭২০ টাকা। কিন্তু ফ্লোর প্রাইস এখনও আগের দরেই আছে।

গত ৬ জানুয়ারি রাইট শেয়ারের জন্য ক্লোজিং ডেতে ন্যাশনাল পলিমারের দাম ছিল ৭১ টাকা ৬০ পয়সা। প্রতি ১০ শেয়ারে পাঁচ টাকা প্রিমিয়াম নেয়া হয়েছে। ফলে রাইট শেয়ার যোগ হওয়ার পর মূল্য সমন্বয় হওয়ার কথা ছিল ৪৩ টাকা ৩০ পয়সা। কিন্তু এই শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস ঠিক করা আছে ৫৬ টাকা ৬০ পয়সা।

এ দুটি কোম্পানির বিষয়ে বিএসইসির মুখপাত্র রেজাউল করিম জানিয়েছিলেন, ফ্লোর প্রাইস সংশোধনের নির্দেশনার আগে যেসব কোম্পানির বোনাস বা রাইট ইস্যুর কারণে ফ্লোর প্রাইস সংশোধন হয়নি সেগুলোর আর পরিবর্তন হবে না। তবে নির্দেশনার পর যেসব কোম্পানির রাইট ইস্যু ও বোনাস প্রদান করবেন তাদের ক্ষেত্রে সংক্রিয়ভাবে ফ্লোর প্রাইস সংশোধন হবে।

এ বিভাগের আরো খবর