বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

লকডাউন আতঙ্কে হারানো সূচকের অর্ধেক উদ্ধার

  •    
  • ৫ এপ্রিল, ২০২১ ১৩:৩৩

লকডাউনের প্রথম দিন সোমবার লেনদেনে সূচকের কী হাল হয়, তা দেখার অপেক্ষায় ছিলেন বিনিয়োগকারীরা। আশঙ্কা নিয়ে লেনদেন শুরু হলেও দেখা গেল উল্টো চিত্র। দুই ঘণ্টার লেনদেনের পুরো সময়টিতে ছিল সূচকের উত্থান। আর লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের।

করোনা মহামারিতে পুঁজিবাজারের লেনদেন নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা ছিল গত মার্চের মাঝামাঝি সময় থেকে। যখন করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করছিল তখনও গুজব উঠেছিল পুঁজিবাজারের লেনদেন বন্ধ করে দেয়া হবে।

শেষ পর্যন্ত করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় সরকার লকডাউনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়, যা সোমবার সকাল থেকে কার্যকর হয়েছে।

গণপরিবহন বন্ধ, জনসমাগ নিষিদ্ধ করে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ১৮ দফা নির্দেশনার পর আবারও আলোচনায় আসে পুঁজিবাজারের লেনদেন কী হবে? লকডাউনের এক দিন আগে রোববার আতঙ্কে শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়ে পুঁজিবাজারে। সেদিন সাড়ে চার ঘণ্টার লেনদেনে সূচকের পতন হয় ১৮১ পয়েন্ট।

এমন অবস্থায় সোমবার লেনদেনে সূচকের কী হাল হয়, তা দেখার অপেক্ষায় ছিলেন বিনিয়োগাকরীরা।

কিন্তু উল্টো চিত্রে শেষ হলো লকডাউনের মধ্যে সোমবার পুঁজিবাজারের লেনদেন। দুই ঘণ্টার লেনদেনে পুরো সময়টিতে ছিল সূচকের উত্থান। আর লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের।

লকডাউনে লেনদেন দুই ঘণ্টা

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ঘোষণা অনুযায়ী ব্যাংকের লেনদেনের সময়সীমার সঙ্গে সমন্বয় করে চালানো হবে পুঁজিবাজারের কার্যক্রম। রোববার বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, করোনা প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় সরকার ঘোষিত লকডাউনে ব্যাংকের কার্যক্রম সকাল ১০ টাকা থেকে শুরু হয়ে চলবে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত।

সে অনুযায়ী বিএসইসি পুঁজিবাজারের লেনদেন সময়সীমা নির্ধারণ করা হয় সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত, যা সোমবার থেকে কার্যকর হয়।

ফলে লকডাউন চলাকালীন পুঁজিবাজারের লেনদেন দুই ঘণ্টা করে নির্ধারণ করা হয়।

ফেরত এলো সূচক

লকডাউনের মধ্যেও সূচকের উত্থানে শেষ হয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেন। দিন শেষে ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৮৮ দশমিক ৪৯ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ১৭৭ পয়েন্টে।

আগের দিন রোববার ডিএসইর এই সূচকের পতন হয়েছিল ১৮৮ পয়েন্টে। ফলে লকডাউনের মধ্যে সূচকের উত্থানে অর্ধেক ফেরত আসলো পুঁজিবাজারে।

শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস সূচক ১৬ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৮২ পয়েন্টে। বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক ৪৩ দশমিক ৫৩ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯৪৪ পয়েন্টে।

এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২৩১টির, কমেছে ১৪টির। দর পাল্টায়নি ৭৬টির। মোট লেনদেন হয়েছে ২৩৬ কোটি টাকা।

গত বছরে যখন করোনা প্রথম ঢেউ শুরু হয় তখন মার্চ মাস থেকেই মন্দাবস্থায় পতিত হয় পুঁজিবাজার। এ সময় লেনদেন সর্বনিম্ম ৪৯ কোটি টাকায় নেমে আসে। তারপর কয়েকদিন লেনদেন চালু থাকলেও ২৬ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ করে দেয়া হয় লেনদেন।

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই ২৯৮ দশমিক ৮৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ১৩ পয়েন্টে। লেনদেন হওয়া কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১২৮টির, কমেছে ২৩টির ও দর পাল্টায়নি ৩৪ টির। মোট লেনদেন হয়েছে ১৬ কোটি টাকা।

বিশেষজ্ঞ মন্তব্য

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ব্র্যাক ইপিএল এর সাবেক প্রধান গবেষণা কর্মকর্তা দেবব্রত কুমার সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সবার মধ্যেই আতঙ্ক ছিল, লকডাউনে লেনদেন কীভাবে চলবে। কিন্তু লেনদেন শেষে যখন সূচক পজেটিভ দেখা গেল তখন কিন্তু সেই আতঙ্ক অনেকটাই কেটে গেছে বলে ধরে নেয়া যায়।’

তিনি বলেন, ‘দুই ঘণ্টার লেনদেনের সে সিদ্ধান্ত সেটি ভালো হয়েছে। লেনদেন বন্ধ করে দিলে সবার জন্যই ক্ষতির কারণ হতো। এখন পুঁজিবাজার যেহেতু খোলা আছে, সেহেতু একদিন লেনদেন বাড়বে আরেকদিন কমবে, এর মাঝেই বিনিয়োগকারীরা তাদের মুনাফা উত্তলন করে নেয়ার সুযোগ পাবে।’

আস্থায় মার্জিন ঋণের অনুপাত

সোমবার থেকে কার্যকর হয়েছে নতুন মার্জিন ঋণের অনুপাত। শেয়ারের দর কমে গেলে বিনিয়োগকারীদের ফোর্স সেল বা বিনিয়োগকারীদের অনিচ্ছাকৃত শেয়ার বিক্রিতে বাধ্য করবে ব্রোকারেজ হাউজ বা মার্চেন্ট ব্যাংক।

নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, পুঁজিবাজারের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৭ হাজার পয়েন্ট পর্যন্ত ১:০.৮ অনুপাতে ঋণ পাবেন বিনিয়োগাকরীরা। অর্থাৎ বিনিয়োগকারীর বিনিয়োগ ১০০ টাকা হলে তাকে শেয়ার কেনার জন্য ৮০ টাকা পর্যন্ত ঋণ দিতে পারবে সংশ্লিষ্ট ব্রোকারেজ হাউজ বা মার্চেন্ট ব্যাংক।

এর আগে যা ছিল ১:০.৫ অনুপাত। অর্থাৎ বিনিয়োগকারী ১০০ টাকা বিনিয়োগ করলে ৫০ টাকা ঋণসুবিধা পেতেন।

এ সময়টিতে ফোর্স সেলের আতঙ্ক না থাকায়ও অনেক বিনিয়োগকারী আবারও বাজারমুখী হয়েছেন বলে জানিয়েছেন দেবব্রত কুমার।

তিনি বলেন, ‘এ সময়ে এ সিদ্ধান্ত বিনিয়োগাকরীদের পুঁজিবাজারের প্রতি আস্থাশীল করবে। নতুন বিনিয়োগে উৎসাহী করবে। কারণ যারা লোন নিয়ে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করেন তাদের আতঙ্ক হচ্ছে ঋণ পরিশোধ। শেয়ারের দর কমে গেলে তারাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন।

ব্যাংক-বিমায় আগ্রহ

সোমবার লেনদেনে ব্যাংক, নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বিমা খাতের শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ ছিল সবচেয়ে বেশি।

লেনদেনে এ প্রতিষ্ঠানগুলোর সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ারের দর বেড়েছে।

ব্যাংক খাতে তালিকাভুক্ত ৩১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দর ২৩ ব্যাংকের শেয়ার দর বেড়েছে। কমেছে তিনটির। দর পাল্টায়নি পাঁচটির।

নন-ব্যাংক আর্থিক খাতে তালিকাভুক্ত ২৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দর বেড়েছে ১৭টির। কমেছে দুটির। আর ফ্লোর প্রাইসে আছে চারটি প্রতিষ্ঠান।

বিমা খাতে তালিকাভুক্ত ৫০টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৩৯টি কোম্পানির। দর কমেছে ছয়টির। আর ফ্লোর প্রাইসে আছে পাঁচটি কোম্পানি।

৩৭টি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে সোমবার দর বেড়েছে ২৮টির। দর কমেছে দুটির আর দর পাল্টায়নি সাতটির।

প্রকৌশল খাতে তালিকাভুক্ত ৪২টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ২০টির। দর পাল্টায়নি ১৬টির আর ফ্লোর প্রাইসে আছে ছয়টি কোম্পানি।

এ বিভাগের আরো খবর