করোনা মহামারির মধ্যে সরকার ঘোষিত এক সপ্তাহের লকডাউনে ব্যাংক খোলা থাকবে।
তবে পূর্ণকালীন নয়, সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত অর্থাৎ আড়াই ঘন্টা লেনদেন হবে। অফিসের অন্যান্য কার্যক্রম চলবে দুপুর দুইটা পর্যন্ত।
রোববার বাংলাদেশ ব্যাংক লকডাউনে ব্যাংক খোলা রাখার বিষয়ে এক সার্কুলার জারি করে এই নির্দেশনা দিয়েছে। তবে ব্যাংকের সব শাখা খোলা না রাখলেও চলবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীর কাছে পাঠানো সার্কুলারে বলা হয়েছে, ৫ এপ্রিল থেকে ১১ এপ্রিল সীমিত আকারে ব্যাংকিং কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। সব ক্ষেত্রে দৈনিক ব্যাংকিং লেনদেনের সময়সূচি হবে সকাল ১০ থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা।
লেনদেন পরবর্তী আনুষঙ্গিক কার্যক্রম সম্পাদনে সংশ্নিষ্ট শাখা এবং প্রধান কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ দুপুর ২টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে।
এক্ষেত্রে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ও শাখাগুলোতে জরুরি ব্যাংকিং সেবা প্রদানের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় জনবলের বিন্যাস ও উপস্থিতির বিষয়টি প্রত্যেক ব্যাংক নিজ বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নেবে।
নিকটবর্তী স্থানে বসবাসরত কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের উপস্থিতির বিষয়টি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনা করতে হবে।
অফিসের কর্মপরিবেশে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ সংক্রান্ত সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা যথাযথভাবে পরিপালনের বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে।
সার্কুলারে বলা হয়, গ্রাহকদের হিসাবে সব ধরনের জমা এবং উত্তোলন, ডিমান্ড ড্রাফট/পে-অর্ডার ইস্যু ও জমা গ্রহণ, ট্রেজারি চালান গ্রহণ, সরকারের বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমের আওতায় প্রদত্ত ভাতা/অনুদান বিতরণ, বৈদেশিক রেমিট্যান্সের অর্থ পরিশোধ, অভ্যন্তরীণ ও আন্তঃশাখা অর্থ স্থানান্তর, এনআরবি বন্ডে এবং বিভিন্ন প্রকার জাতীয় সঞ্চয় সার্টিফিকেটের মেয়াদপূর্তীতে নগদায়ন ও কুপনের অর্থ পরিশোধ, ইউটিলিটি বিল (গ্যাস/পানি/বিদ্যুৎ/টেলিফোন) গ্রহণসহ বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক চালু রাখা বিভিন্ন পেমেন্ট সিস্টেমের/ক্লিয়ারিং ব্যবস্থার আওতাধীন অন্যান্য লেনদেন সুবিধা চালু থাকবে।
নগদ জমা ও উত্তোলনের জন্য অনলাইন সুবিধা সম্বলিত ব্যাংকের গ্রাহকদের লেনদেনের সার্বিক সুবিধা নিশ্চিত করে এক শাখা থেকে আরেক শাখার দূরত্ব বিবেচনায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক শাখা খোলা রাখতে হবে।
এক্ষেত্রে সিটি কর্পোরেশন ও জেলা সদরে কার্যরত যে সকল ব্যাংকের দুই কিলোমিটারের মধ্যে একাধিক শাখা রয়েছে, সেক্ষেত্রে সুবিধাজনক একটি শাখা (অথরাইজড ডিলার শাখা ব্যতীত) হতে গ্রাহক সেবা নিশ্চিত করার শর্তে অভ্যন্তরীণ সমন্বয়ের মাধ্যমে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে।
তবে বন্ধ শাখার গ্রাহকদের গ্রাহক সেবা প্রাপ্তি বিষয়ে অবহিত করতে উক্ত শাখার দৃশ্যমান স্থানে তা বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রদর্শন নিশ্চিত করতে হবে।
অনলাইন সুবিধা বহির্ভূত ব্যাংকের অন্যান্য শাখা খোলা রাখতে হবে।
বিশেষ ব্যবস্থায় ইতোপূর্বে মঞ্জুরিকৃত এবং বিতরণের অপেক্ষায় থাকা ঋণের অর্থ ছাড়করণ, বিভিন্ন প্রণোদনার কার্যক্রম, শ্রমঘন শিল্প এলাকায় শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ এবং রপ্তানি বিল ক্রয়, ঋণ মঞ্জুর ও বিতরণ অব্যাহত রাখতে হবে।
গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি বৈদেশিক লেনদেনের ক্ষেত্রে বৈদেশিক বাণিজ্য (অথরাইজড ডিলার) শাখাগুলোতে লেনদেন অব্যাহত রাখতে হবে।
সমুদ্র/স্থল/বিমান বন্দর এলাকায় (পোর্ট ও কাস্টমস এলাকা) অবস্থিত ব্যাংকের শাখা/ উপ-শাখা/বুথগুলো সার্বক্ষণিক খোলা রাখার বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনসহ বন্দর/কাস্টমস কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনাক্রমে স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিতপূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের লেনদেন সময়সূচি ও কার্যক্রম বিষয়ে প্রত্যেক ব্যাংক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন চালু রাখার সুবিধার্থে এটিএম বুথগুলোতে পর্যাপ্ত নোট সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।
ইন্টারনেট ব্যাংকিং সুবিধা সার্বক্ষণিক চালু রাখা এবং এটিএম বুথগুলোতে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সুরক্ষা বা স্যানিটাইজেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ব্যাংকের সান্ধ্যকালীন কার্যক্রম বন্ধ থাকবে বলে সার্কুলারে উল্লেখ করা হয়েছে।