বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

লেনদেন ভারসাম্যে উদ্বৃত্ত কমছে, বাড়ছে বাণিজ্য ঘাটতি

  •    
  • ২ এপ্রিল, ২০২১ ২৩:৪৮

বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে (ব্যালেন্স অব পেমেন্ট) বড় উদ্বৃত্ত আর ধরে রাখতে পারছে না বাংলাদেশ।

বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে (ব্যালেন্স অব পেমেন্ট) বড় উদ্বৃত্ত আর ধরে রাখতে পারছে না বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ ব্যাংক বৃহস্পতিবার হালানাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) অর্থনীতির অন্যতম প্রধান এই সূচকের উদ্বৃত্ত দেড় বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। অথচ ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) এই উদ্বৃত্ত ছিল প্রায় সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার।

আমদানি বাড়ায় লেনদেন ভারসাম্যে উদ্বৃত্ত কমছে বলে জানিয়েছেন অর্থনীতির গবেষক জায়েদ বখত।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, গত ২০১৯-২০ অর্থবছর শেষ হয়েছিল ৪৮৪ কোটি ৯০ লাখ (প্রায় ৫ বিলিয়ন) ডলারের বড় ঘাটতি নিয়ে। কিন্তু ২০২০-২১ অর্থবছর শুরু হয় উদ্বৃত্ত দিয়ে। প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) এই উদ্বৃত্তের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩৫৩ কোটি ৪০ লাখ (৩ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন) ডলার।

এর পরের তিন মাস ধারাবাহিকভাবে বাড়তে বাড়তে জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে তা ৪৩২ কোটি ২০ লাখ (৪ দশমিক ৩২ বিলিয়ন) ডলারে উঠে। কিন্তু দেশে করোনাভাইরাস মহামারির প্রথম ঢেউয়ের প্রকোপ কমতে থাকলে আমদানি বেড়ে যায়। সে কারণে জানুয়ারি শেষে অর্থাৎ জুলাই-জানুয়ারি সময়ে সেই উদ্বৃত্ত ২২৩ কোটি ৫০ লাখ ডলারে নেমে আসে।

ফেব্রুয়ারি শেষে যা আরও কমে ১৫৫ কোটি ৭০ লাখ (১ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন) ডলারে নেমে এসেছে।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিতষ্ঠানের (বিআইডিএসস) গবেষক রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান জায়েদ বখত বলেন, অর্থবছরের বাকি মাসগুলোতে আমদানি বাড়লে গত অর্থবছরের মতো এবারও লেনদেন ভারসাম্যে ঘাটতি নিয়ে অর্থবছর শেষ হবে।

‘তবে গতবারের মতো অত বড় ঘাটতি হবে না।’

২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশের লেনদেন ভারসামেম্য ঘাটতি ছিল ৫১০ কোটি ২০ লাখ ডলার। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ঘাটতি ছিল ৯৫৬ কোটি ৭০ লাখ ডলার।

নিয়মিত আমদানি-রপ্তানিসহ অন্যান্য আয়-ব্যয় চলতি হিসাবের অন্তর্ভুক্ত। এই হিসাব উদ্বৃত্ত থাকার অর্থ হলো নিয়মিত লেনদেনে দেশকে কোনো ঋণ করতে হচ্ছে না। আর ঘাটতি থাকলে সরকারকে ঋণ নিয়ে তা পূরণ করতে হয়।

বাড়ছে বাণিজ্য ঘাটতি

প্রায় ১৮ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ে গত অর্থবছর শেষ করেছিল বাংলাদেশ। চলতি অর্থবছরের ছয় মাসে অর্থাৎ জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে তা কমে ৬৪৬ কোটি ৫০ লাখ ডলারে নেমে এসেছিল। গত বছরের একই সময়ে এই ঘাটতি ছিল ৮২২ কোটি ৩০ লাখ ডলার। জুলাই-জানুয়ারি সময়ে সেই ঘাটতি বেড়ে ৯৭৮ কোটি ৭০ লাখ ডলারে ওঠে।

সর্বশেষ জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে তা আরও বেড়ে এক হাজার ১৭৯ কোটি ৫০ লাখ (১১ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন) ডলারে উঠেছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে এই ঘাটতি ছিল ১০ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার।

এই আট মাসে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ দুই হাজার ৫২৭ কোটি ২০ লাখ ডলার আয় করেছে। আর আমদানিতে ব্যয় করেছে তিন হাজার ৭০৬ কোটি ৭০ লাখ ডলার।

এই সময়ে রপ্তানি আয় কমেছে ১ দশমিক ২৮ শতাংশ। আমদানি ব্যয় বেড়েছে ১ দশমিক ৯ শতাংশ।

অথচ সাত মাসে অর্থাৎ জুলাই-জানুয়ারি সময়ে রপ্তানি আয় বেড়েছিল ১ দশমিক ০২ শতাংশ। আর আমদানি কমেছিল দশমিক ২৬ শতাংশ।

জুলাই-ডিসেম্বর পর্যন্ত রপ্তানি বেড়েছিল দশমিক ৪৪ শতাংশ। আমদানি ব্যয় কমেছিল ৬ দশমিক ৮০ শতাংশ।

সেবা খাতের বাণিজ্য ঘাটতিও বাড়ছে। জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে এ খাতে ঘাটতি ছিল ১০৫ কোটি ৮০ লাখ ডলার। জুলাই-জানুয়ারি সময়ে তা বেড়ে ১৩৭ কোটি ডলারে ওঠে।

জুলাই-জানুয়ারি সময়ে তা আরও বেড়ে ১৭০ কোটি ৫০ লাখ ডলার হয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে এই ঘাটতি ছিল ২১৮ কোটি ১০ লাখ ডলার।

মূলত বিমা, ভ্রমণ ইত্যাদি খাতের আয়-ব্যয় হিসাব করে সেবা খাতের বাণিজ্য ঘাটতি পরিমাপ করা হয়।

রেমিট্যান্সের উল্লম্ফন অব্যাহত

অর্থবছরের আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) ১ হাজার ৬৬৮ কোটি ৭০ লাখ ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। গত বছর এই আট মাসে পাঠিয়েছিলেন ১ হাজার ২৪৯ কোটি ৯০ লাখ ডলার। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৩ দশমিক ৫১ শতাংশ।

তবে, বৃহস্পতিবার রেমিট্যান্স প্রবাহের অর্থাৎ জুলাই-মার্চ সময়ের তথ্য প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাতে দেখা যায়, এই ৯ মাসে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে অর্থনীতির এই সূচকটি বেড়েছে ৩৫ শতাংশ।

সামগ্রিক লেনদেন ভারসাম্য

তবে সামগ্রিক লেনদেন ভারসাম্যে (ওভারঅল ব্যালেন্স) এখনও বড় উদ্বৃত্ত রয়েছে। অর্থবছরের আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) এই উদ্বৃত্তের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৮৮ কোটি ২০ লাখ ডলার। গত বছরের একই সময়ে উদ্বৃত্ত ছিল মাত্র ২১ কোটি ৪০ লাখ ডলার।

আর্থিক হিসাবেও উদ্বৃত্ত

আর্থিক হিসাবেও (ফাইন্যানশিয়াল অ্যাকাউন্ট) বড় উদ্বৃত্ত ধরে রেখেছে বাংলাদেশ।

অর্থবছরের তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ৭৫ কোটি ৫৫ লাখ ডলারের ঘাটতি ছিল। জুলাই-নভেম্বর সময়ে তা ৯৪ কোটি ৯০ লাখ ডলার উদ্বৃত্তে চলে আসে। ছয় মাসে সেই উদ্বৃত্ত বেড়ে হয় ২২০ কোটি ১০ লাখ ডলার।

সাত মাসে তা আরও বেড়ে ৪৪৫ কোটি ৬০ লাখ ডলার হয়। আট মাসে হয়েছে আরও, বেশি ৫৬১ কোটি ৮০ লাখ ডলার।

গত বছরের এই আট মাসে ২৩৪ কোটি ৪০ লাখ ডলারের উদ্বৃত্ত ছিল।

এ বিভাগের আরো খবর