বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

হবিগঞ্জ বিসিকে পানির হাহাকার, অরক্ষিত চার ধার

  •    
  • ২ এপ্রিল, ২০২১ ০৮:৩৪

হবিগঞ্জ শিল্পনগরীতে সমস্যার শেষ নেই। রাস্তা ভাঙা, পানির ব্যবস্থা নেই, বিসিকের চারপাশের সীমানা প্রাচীর নেই। যখন তখন গরু-ছাগল ঢুকে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে রয়েছে চোরের উপদ্রব।

হবিগঞ্জের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) শিল্পনগরীতে আছে ছোটবড় ৫১ কারখানা। এর একটি ‘কাশফুল ফুড প্রোডাক্টস’।

এই কারখানায় তৈরি হয় বিভিন্ন খাদ্যপণ্য। কারখানা মালিক জামিলুন্নবী ফয়সল নিউজবাংলাকে জানান, পণ্য উৎপাদনের জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় উপকরণ পানি। তবে বিসিকের একমাত্র পাম্পটি নষ্ট থাকায় নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পানির জোগান পেতে হচ্ছে। এতে বেড়ে যাচ্ছে ব্যয়, গুণতে হচ্ছে লোকসান।

জামিলুন্নবী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘২০১২ সাল থেকে হবিগঞ্জ বিসিক শিল্পনগরীর পানির নিজস্ব পাম্পটি অকেজো। আমরা প্রত্যেকে পানির জন্য ছোট পাম্প বসিয়েছি। একই স্তরে অনেকগুলো ছোট পাম্প বসানোর কারণে ঠিকমতো পানি উঠছে না। ’

শুধু পানির সংকট নয়, অবকাঠামোগত নানা সংকটে জর্জরিত হবিগঞ্জের বিসিক শিল্পনগরী।

সেখানকার একটি কারখানার মালিক শংকর পাল বলেন, ‘শিল্পনগরীর ভেতর রাস্তা-ঘাটের অবস্থা নাজুক। একাধিক কালভার্ট ভাঙা, নেই সীমানা প্রাচীর। যে কারণে প্রায়ই ঘটে চুরির ঘটনা। ’

শিল্পনগরীর ভেতরের রাস্তাঘাট

১৯৮৬ সালে হবিগঞ্জের ধুলিয়াখাল এলাকায় ১৫ একর জায়গা নিয়ে বিসিক শিল্পনগরী গড়ে উঠে। সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, সেখানে ৬৮টি প্লটের মধ্যে ৫১টিতে কারখানা গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে চালু আছে ৪৪টি কারখানা।

বিসিক কর্মকর্তারা জানান, প্লট বরাদ্দ পাওয়া বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের কাছে ৩৪ লাখ ২ হাজার টাকা বকেয়া জমেছে। এর মধ্যে আছে জমির কিস্তি বাবদ ১৫ লাখ ৬৪ হাজার ৩৮৮ টাকা, সার্ভিস চার্জ ১৭ লাখ ১৯ হাজার ১৮৭ টাকা এবং খাজনা বাবদ ১ লাখ ১৮ হাজার ২৫৮ টাকা।

তবে উদ্যোক্তারা বলছেন, অবকাঠামোগত সমস্যায় তারা শিল্প কারখানা গড়ে তুলতে আগ্রহ হারাচ্ছেন। যারা এর মধ্যে কারখানা করেছেন তাদের পড়তে হচ্ছে লোকসানে। তাই প্লট বরাদ্দ নিয়েও অনেকে ফেলে রাখছেন।

বিসিক শিল্প মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফয়সল মিয়া বলেন, ‘হবিগঞ্জ বিসিক বলতে গেলে একরকম অভিভাবকহীন। এখানে সমস্যার কোনো শেষ নেই, এসব সমস্যা দেখারও কেউ নেই। রাস্তা ভাঙা, পানির ব্যবস্থা নেই, বিসিকের চারপাশের সীমানা প্রাচীর নেই। যখন তখন গরু-ছাগল ঢুকে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে রয়েছে চোরের উপদ্রব।

Caption

‘এতসব প্রতিকূলতার মধ্যেই আমাদেরকে এখানে ব্যবসা করতে হচ্ছে। যে কারণে বছরের পর বছর গেলেও আমরা লাভের মুখ দেখতে পারছি না। এ বিষয়ে ব্যবসায়ী এবং সংগঠনের পক্ষ থেকেও বারবার পরিচালনা কমিটির সঙ্গে কথা হয়েছে, কিন্তু কোনো সমাধান হয়নি।’

এসব অভিযোগ স্বীকার করেছে কর্তৃপক্ষ। শিল্পনগরীর সহকারী ব্যবস্থাপক নাজমুল হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রায় এক যুগ আগে বিসিকের পানির পাম্পটি নষ্ট হয়। এরপর আর সেখানে পাম্প বসানো হয়নি। রাস্তা-ঘাট সংস্কার ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে। তারা জানিয়েছে ব্যবসায়ীরা লিখিতভাবে আবেদন করলে বিষয়টি দেখা যাবে।’

পনির পাম্প না বসানোর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা চাইলেই পাম্প বসাতে পারব না। এর জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করতে হবে। আমরা ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি, তবে কর্তৃপক্ষ চাইছে ব্যবসায়ীরা যেন লিখিত আবেদন করেন।’

অন্যদিকে, ভূমি বরাদ্দ নেয়ার পর কারখানা দৃশ্যমান হয়নি এমন প্লট মালিকদের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থাও নেয়নি বিসিক।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি সপ্তাহখানেক আগে হবিগঞ্জে যোগ দিয়েছি। যে কারণে এখানকার বিসিকের বিষয়ে আমার ধারণা নেই। আশা করি বিসিকে যদি কোনো সমস্যা থাকে সেটি খুব দ্রুত সমাধান করতে পারব।’

এ বিভাগের আরো খবর