জনগণের সামষ্টিক উন্নয়ন, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের জন্য কানেক্টিভিটির ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে আঞ্চলিক জোট বিমসটেক।
বঙ্গপোসাগরের উপকূলীয় সাতটি দেশের মধ্যে কানেক্টিভিটি বাড়াতে একটি মাস্টার প্ল্যানও তৈরি করেছে বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেক্টরাল, টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কোঅপারেশন, সংক্ষেপে বিমসটেক।
বৃহস্পতিবার বিমসটেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের ভার্চুয়াল বৈঠকে এই পরিকল্পনা অনুমোদন পায়। পঞ্চম শীর্ষ সম্মেলনে তা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।
এই জোটের সদস্য রাষ্ট্রগুলো হলো বাংলাদেশ, ভুটান, নেপাল, ভারত, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কা।
ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিনেস শুনাবর্ধনে বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে অনুষ্ঠিত এ ভার্চুয়াল বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে যুক্ত হন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন। পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন তাকে সহায়তা করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নিরবচ্ছিন্ন বহুমুখী যোগাযোগ ব্যবস্থা (মাল্টি মোডাল কানেক্টিভিটি) না হলে বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং মানুষে মানুষে সংযোগ বৃদ্ধি পায় না। এর জন্য আইনি চুক্তি ও একটি কাঠামো দাঁড় করানো দরকার। তা দ্রুততম সময়ের মধ্যে করার জন্য উদ্যোগ নিতে হবে।
এই অঞ্চলের মানুষের আয় ও কর্মসংস্থানের জন্যও অধিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
২০১৬ সালে ভারতের গোয়ায় অনুষ্ঠিত শীর্ষ সম্মেলনে বিমসটেক কানেক্টিভিটি মাস্টার প্ল্যান তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। এশিয়ান ডিভেলপমেন্ট ব্যাংকের সহযোগিতায় এটি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবারের বৈঠকে দেশের মধ্যে আইনগত সহায়তা (মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স) সংক্রান্ত চুক্তি, সব দেশের ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমির মধ্যে সহযোগিতা চুক্তি ও প্রযুক্তি হস্তান্তর সহায়তা সেন্টার স্থাপন চুক্তি সংক্রান্ত বিষয়াদী গৃহীত হয়।
এ বছর কলম্বোতে শীর্ষ সম্মেলন হওয়ার কথা। তবে পুরো বিষয়টি নির্ভর করেছে করোনা পরিস্থিতির ওপর।
আগামী শীর্ষ সম্মেলনে বিমসটেক চার্টার, কয়েকটি চুক্তি, পরিবহন খাতে মাস্টার কানেক্টিভিটি পরিকল্পনাসহ অন্যান্য বিষয়াদি উপস্থাপনে সব দেশের ঐক্যমত্যের প্রয়োজন।
বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বিমসটেক সদস্য দেশগুলোর মধ্যে পরিবহন কানেক্টিভিটি বাড়ানোর ওপর জোর দেন। এ লক্ষ্যে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে ট্রানজিট-ট্রান্সশিপমেন্ট ও মোটর ভ্যাহিক্যাল এগ্রিমেন্ট করার কথা বলেন তিনি।
তিনি আরও জানান, বিমসটেক নৌ-জাহাজ চলাচল চুক্তি প্রায় চূড়ান্ত হয়েছে।
বৈঠকে বিমসটেক সদস্য দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। একই সঙ্গে করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বাড়াতে হবে বলে মন্তব্য করেন।
২০১৮ সালে কাঠমান্ডুতে শেষ শীর্ষ সম্মেলনটি হয়েছিল।