পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আরও একটি ব্যাংক সঞ্চয়পত্র ছাড়া যে কোনো সঞ্চয়ী স্কিমের চেয়ে বেশি হারে নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করল।
প্রাইম ব্যাংক তার শেয়ারধারীদের জন্য ২০২০ সালের ৩১ জুলাই সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য শেয়ার প্রতি ১৫ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বুধবার শেয়ারটির দাম ছিল ১৫ টাকা ২০ পয়সা। রেকর্ড ডেটে এই দাম থাকলে শেয়ারের দামের অনুপাতে বিনিয়োগকারীদের প্রাপ্তি (ইল্ড) হবে ১০ শতাংশ।
- আরও পড়ুন: কমেছে পরিচালন, বেড়েছে চূড়ান্ত মুনাফা
বুধবার বিকালে প্রাইম ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ এই লভ্যাংশ ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেয় বলে জানিয়েছেন ব্যাংকটির একজন কর্মকর্তা।
তিনি জানান, মহামারির বছরে তাদের কোম্পানির আয় আগের বছরের চেয়ে বেশি হয়েছে। তাই লভ্যাংশও বাড়ানো হয়েছে।
২০২০ সালে প্রাইম ব্যাংকের শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ১ টাকা ৫৯ পয়সা।
আগের বছর ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি আয় ছিল ১ টাকা ৪৭ পয়সা। অর্থাৎ মহামারির বছরে শেয়ারপ্রতি আয় বেড়েছে ১২ পয়সা।
২০১৯ সালে ব্যাংকটি তার শেয়ারধারীদেরকে এক টাকা ৩৫ পয়সা করে লভ্যাংশ দিয়েছিল।
প্রাইম ব্যাংক যে পরিমাণ লভাংশ দিতে যাচ্ছে, তা ব্যাংকে সঞ্চয়ী স্কিম সুদ হারের প্রায় দ্বিগুণ। ১৫ টাকা বিনিয়োগ করলে একজন দেড় টাকা পাবেন। তবে ১৫ টাকা এক বছর ব্যাংকে রাখলে একজন পাবেন অর্ধেক টাকা মাত্র।
বর্তমানে এফডিআরের সুদহার সাড়ে চার থেকে সর্বোচ্চ ৬ শতাংশ।
এর আগে এফডিআরের সুদ হারের চেয়ে বেশি হারে লভ্যাংশ বিতরণ করেছে মার্কেন্টাইল ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক।
এ ছাড়া ব্যাংক এশিয়া, ওয়ান ব্যাংকও যে হারে নগদ লভ্যাংশ বিতরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার ইল্ড ব্যাংকের সুদহারের সমান। ওয়ান ব্যাংক আবার এর বাইরে ৫.৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দেবে। মার্কেন্টাইল প্রিমিয়ার, সিটি ব্যাংকও ৫ শতাংশ করে বোনাস শেয়ার দেবে।
- আরও পড়ুন: বহুজাতিক থেকেও ব্যাংকে লভ্যাংশ ‘বেশি’
এর মধ্যে মার্কেন্টাইল কেবল আগের বছরের তুলনায় শেয়ার প্রতি ১০ পয়সা করে কম লভ্যাংশ ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর ব্যাংক এশিয়ার লভ্যাংশ আগের বছরের সমান।
এর বাইরে ডাচ বাংলা, শাহজালালসহ এখন পর্যন্ত লভ্যাংশ ঘোষণা করা বাকি সব ব্যাংকই আগের বছরের চেয়ে বেশি হারে লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
করোনার বছরে লভ্যাংশ কমে আসবে ভেবে বিনিয়োগকারীরা ব্যাংকের শেয়ারে আগ্রহ হারিয়েছিলেন আর এ কারণে শেয়ারের দামও কমে গেছে গত তিন মাসে।
কোন ব্যাংক কত লভ্যাংশ দিয়েছে
ঘোষণা করা লভ্যাংশ পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, কেবল প্রিমিয়ার ও ওয়ান ব্যাংকের আয় গত বছরের তুলনায় কমেছে। মার্কেন্টাইলের আয় গত বছরের সমান ছিল। আর বাকি সব ব্যাংকই গত বছরের চেয়ে বেশি আয় করেছে।
ডাচ বাংলা ব্যাংক ২০২০ সালের জন্য তার শেয়ারধারীদের ১৫ শতাংশ বোনাস ও শেয়ার প্রতি দেড় টাকা নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।
আগের বছর দেড় টাকা নগদের পাশাপাশি ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার পেয়েছিলেন বিনিয়োগকারীরা।
শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক এবার শেয়ার প্রতি ৭০ পয়সা নগদের পাশাপাশি ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার দিতে যাচ্ছে। আগের বছর শেয়ার প্রতি ৫০ পয়সা নগদের পাশাপাশি ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার দিয়েছিল।
মার্কেন্টাইল ব্যাংক এবার শেয়ার প্রতি এক টাকা নগদের পাশাপাশি ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার দিতে যাচ্ছে। আগের বছর শেয়ার প্রতি এক টাকা ১০ পয়সা নগদের পাশাপাশি ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার দিয়েছিল।
ব্যাংক এশিয়ার এবার শেয়ার প্রতি এক টাকা বা ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিতে যাচ্ছে। আগের বছরও তারা সম পরিমাণ লভ্যাংশ দিয়েছিল।
- আরও পড়ুন: মহামারির বছরে চমক দেখাল ব্যাংক এশিয়াও
প্রিমিয়ার ব্যাংক এবার শেয়ার প্রতি এক টাকা ২৫ পয়সা নগদের পাশাপাশি ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার দিতে যাচ্ছে। আগের বছর শেয়ার প্রতি ৫০ পয়সা নগদের পাশাপাশি ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার দিয়েছিল।
সিটি ব্যাংক এবার শেয়ার প্রতি এক টাকা ৭৫ পয়সা নগদের পাশাপাশি ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার দিতে যাচ্ছে।
যমুনা ব্যাংক ২০২০ সালের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে শেয়ার প্রতি এক টাকা ৭৫ পয়সা নগদ লভ্যাংশ দিতে যাচ্ছে। আগের বছর শেয়ার প্রতি দেড় টাকা নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল।
- আরও পড়ুন: যমুনা ব্যাংকের আবার চমক জাগানিয়া লভ্যাংশ
ওয়ান ব্যাংক মহামারির বছরে আগের বছরের তুলনায় ১৩ শতাংশ মুনাফা কম করেও শেয়ারধারীদেরকে ১৫ শতাংশ বেশি লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত দিয়েছে।
- আরও পড়ুন: মুনাফা কমলেও লভ্যাংশ বাড়াচ্ছে ওয়ানব্যাংক
আইসিবি ইসলামী ব্যাংক শেয়ারধারীদের কোনো লভ্যাংশ দেবে না বলে জানিয়েছে। বুধবার ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।