বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

করোনা ভীতিতে পুঁজিবাজার

  •    
  • ৩১ মার্চ, ২০২১ ১৬:১৫

কদিন আগেও সংক্রমণ ধরা পড়ার পর যাওয়ায় গুজব উঠে পুঁজিবাজারের লেনদেন বন্ধ হচ্ছে। কিন্ত এমন খবরের কোনো ভিত্তি নেই উল্লেখ করে পুঁজিবাজারে নিয়ন্ত্রক সংস্থা জানায়, ব্যাংকের কার্যক্রম চলবে তত দিন পুঁজিবাজারে লেনদেন হবে। লেনদেন আবার স্থগিত হবে-এমন কথা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আবার ছড়িয়েছে। এ কারণে শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে হাতে নগদ টাকা রেখে দিতে চাইছেন বহুজন।

করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হানার পরিপ্রেক্ষিতে ১৮ দফা নির্দেশনা জারির পর প্রথম কার্যদিবসে পুঁজিবাজারে ব্যাপক দরপতন হলো।

সোমবার নির্দেশনার জারির পর মঙ্গলবার শবেবরাতের ছুটিতে বন্ধ ছিল লেনদেন। বুধবার সকাল ১০টায় লেনদেন শুরুর ৫ মিনিটে সূচক পড়ে যায় ৪০ মিনিটের বেশি। এক পর্যায়ে তা ১০০ পয়েন্টের বেশি কমে যায়। তবে দিন শেষে সূচক হারায় ৯৪ পয়েন্ট।

বিনিয়োগকারীরা কতটা আতঙ্কে, সেটি বোঝা যায় লেনদেনের চিত্রে। হাতবদল হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে কেবল ১১টির, দর কমেছে ২৫৭টির। আর দর পাল্টায়নি ৮০টির। এর মধ্যে সিংহভাগই লেনদেন হচ্ছে বেঁধে দেয়া সর্বনিম্ন দাম বা ফ্লোর প্রাইসে। গত বছর করোনা সংক্রমণ দেখা দেয়ার পর এই ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেয়া হয় সব কটি শেয়ারের।

বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এমন আতঙ্কের কারণ গত বছর করোনা সংক্রমণ পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ। সে সময় বাজারে ধসের এক পর্যায়ে স্থগিত হয়ে যায় লেনদেন। ফলে যারা মার্জিন ঋণ নিয়ে ব্যবসা করেন, তাদেরকে ঠিকই সুদ গুণতে হয়।

কদিন আগেও সংক্রমণ ধরা পড়ার পর যাওয়ায় গুজব উঠে পুঁজিবাজারের লেনদেন বন্ধ হচ্ছে। কিন্ত এমন খবরের কোনো ভিত্তি নেই উল্লেখ করে পুঁজিবাজারে নিয়ন্ত্রক সংস্থা জানায়, ব্যাংকের কার্যক্রম চলবে তত দিন পুঁজিবাজারে লেনদেন হবে।

করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় ১৮ দফা নির্দেশনা জারির পর পুঁজিবাজারে দর পতন হয়েছে সব খাতে

লেনদেন আবার স্থগিত হবে-এমন কথা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আবার ছড়িয়েছে। এ কারণে শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে হাতে নগদ টাকা রেখে দিতে চাইছেন বহুজন।

মন্দা বাজারে দর বাড়ার শীর্ষে মিউচ্যুয়াল ফান্ড

সূচকের বড় পতনের পরও পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোর দর বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। এদিন লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে মাত্র ১৫টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দর বেড়েছে। এর মধ্যে ছয়টি ছিল মিউচ্যুয়াল ফান্ড। ব্যাংকের ছিল তিনটি।

দর বৃদ্ধি পাওয়া মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে সিএপিএম আইবিবিএল মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৪৫ শতাংশ। ভ্যানগার্ড এএমএল রূপালি ব্যাংক ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দর বেড়েছে ৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ।

ভ্যানগার্ড এএমএল বিডি ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দর বেড়েছে ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ। সিএপিএম বিডিবিএল মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দর বেড়েছে ১ দশমিক ২৬ শতাংশ। আইসিবি এএমসিএল সোনালী ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড, এআইবিএল ফার্স্ট ইসলামী মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দর বেড়েছে।

হাইডেলবার্গ সিমেন্টের দর বেড়েছে ১ দশমিক ০৭ শতাংশ, ব্যাংক এশিয়ার শেয়ার দর বেড়েছে দশমিক ৫৮ শতাংশ, ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার দর বেড়েছে দশমিক ৩৫ শতাংশ।

নতুন বিমার শেয়ার দ্বিতীয় দিনেও সর্বোচ্চ দরে

আতঙ্কের দিনও বিমা খাতের নতুন তালিকাভুক্ত দেশ জেনারেল ইন্সুরেন্সের দাম বেড়েছে সর্বোচ্চ যত বাড়া সম্ভব তত।

গত সোমবার প্রথম কার্যদিবসে ৫০ শতাংশ বেশি দরে ১৫ টাকায় হাতবদল হয়েছিল কেবল দুটি শেয়ার। দ্বিতী দিন আরও ৫০ শতাংশ দাম বাড়ার সুযোগ ছিল। বেড়েছেও তা। সর্বোচ্চ দাম ২২ টাকা ৫০ পয়সাতেই হাতবদল হয়েছে শেয়ার। তাও বেশিরভাগ বিনিয়োগকারীই এই দামে শেয়ার ছাড়তে রাজি হননি। কেবল ২৫ হাজার ২৮৩ শেয়ার বিক্রি হয়েছে।

নিয়ন্ত্রক সংস্থা কী বলছে

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পতনের জন্য কোনো কারণ দেখনি না, করোনা ছাড়া। সরকার ইতোমধ্যে স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কিত নির্দেশনা জারি করা হয়েছে, বিনিয়োগকারীদের সে অনুযায়ী মেনে চলা উচিত।’

করোনা পরিপ্রেক্ষিতে বিএসইসি কোনো সিদ্ধান্ত নেবে কি না জানাতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে কমিশনের কোনো সিদ্ধান্ত নেই। আগে যেমন বলা হয়েছিল সেটিই থাকবে, যতদিন ব্যাংক খোলা থাকবে ততদিন পুঁজিবাজারের লেনদেন চলবে। আর এ নিয়ে গুজবে কান দেয়ার কিছু নেই।’

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘করোনা প্রকোপের কারণেই এমনটি হয়েছে। সবারই স্বাস্থ্য বিধি মেনে লেনদেনের জন্য ব্রোকার হাউজে আসা উচিত।

‘সরকার ইতোমধ্যে স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কিত নতুন নির্দেশনা জানিয়েছে। সেটি বিনিয়োগকারীসহ ব্রোকার হাউজগুলোকেও পরিপালন করা উচিত। তবে আগামীতে কী হবে সেটা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’

সূচক ও লেনদেন

বুধবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৯৪ দশমিক ৯৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ২৭৮ পয়েন্টে।

শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস ১৬ দশমিক ৯০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২০৪ পয়েন্টে। বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯৯৪টি পয়েন্টে।

লেনদেন হয়েছে মোট ৫৬০ কোটি টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৬৩৪ কোটি টাকা। ফলে আগের কার্যদিবসের তুলনায় ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ৭৪ কোটি টাকা।

করোনা নির্দেশনা উপেক্ষিত

করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার যেসব নির্দেশনা জারি করেছে, তার মধ্যে মাস্ক মাস্ক পরা ছাড়া ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে বাড়তি কোনো সতর্কতা দেখা যায়নি।

বুধবার মতিঝিলের ব্রোকার হাউজগুলোতে ঘুরে দেখা গেছে এখনও সেভাবে পরিপালন করা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। আগে যেভাবে বিনিয়োগকারীদের বসার জন্য চেয়ার রাখা হয়েছিল এখনও সেভাবেই আছে।

একটি ব্রোকার হাউজে উপস্থিত বিনিয়োগকারী রিয়াজ আলম জানান, স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি হাউজ থেকে। তবে মাস্ক ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘বসার জন্য চেয়ারগুলোর সংখ্যার কমিয়ে আনা প্রয়োজন। যেন সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বিনিয়োগকারীরা লেনদেন করতে পারে।’

এ বিভাগের আরো খবর