জনগণের সেবা নিশ্চিত করতে কর বিভাগে দৃশ্যমান পরিবর্তন আসছে। আগামী বাজেটে এর প্রতিফলন দেখা যাবে বলে জানিয়েছেন অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।
কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে আসন্ন বাজেটে দেশীয় শিল্পে বেশি সহায়তা দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার এনবিআরের সঙ্গে অর্থনৈতিক রিপোর্টারদের সংগঠন ইকনোমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) প্রাক-বাজেট আলোচনায় এ কথা বলেন রহমাতুল মুনিম।
তিনি আরও বলেন, এমন একটি রাজস্ববান্ধব পরিবেশ তৈরি করা হবে যাতে করদাতারা নির্বিঘ্নে-নির্ভয়ে আয়কর দিতে পারেন। এ লক্ষ্যে নানা ধরনের সংস্কারমুখী কার্যক্রম চলছে বলে জানান তিনি।
অন্যদিকে, কর আদায় প্রক্রিয়া আরও সহজ এবং আওতা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন ইআরএফ প্রতিনিধিরা। সংগঠনের নেতারা মনে করেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির আকারের সঙ্গে রাজস্ব আহরণ সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
কাজেই, রাজস্ব আদায় আরও বাড়ানোর সুযোগ আছে। কার্যকর সংস্কার, এনবিআরের পুনর্গঠন ও পুরো রাজস্ব বিভাগকে অটোমেশন করতে পারলে কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব আহরণ সম্ভব।
অধিক কর্মসংস্থান ও কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব আয় বাড়ানোর লক্ষ্যে ২০২১-২০২২ অর্থবছরের বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা বর্তমানে ৩ লাখ টাকার পরিবর্তে ৪ লাখ টাকাসহ বেশ কিছু প্রস্তাব দিয়েছে ইআরএফ।
ভার্চুয়ালি সভায় সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান। এতে যুক্ত হন এনবিআরের আয়করনীতির সদস্য মো. আলমগীর হোসেন, শুল্কনীতি সদস্য সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া, ভ্যাটনীতির সদস্য মো. মাসুদ সাদিকসহ বাজেট প্রণয়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
ইআরএফের পক্ষে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সভাপতি শারমীন রিনভী, সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলাম, সহসাধারণ সম্পাদক কুতুব উদ্দিন জসিম ও কোষাধ্যক্ষ রেজাউল হক কৌশিকসহ আরও অনেকে।
ইআরএফের প্রস্তাবগুলো পর্যালোচনা করে যৌক্তিক দাবিগুলো আসন্ন বাজেটে প্রতিফলনের আশ্বাস দেন এনবিআর চেয়ারম্যান।
রহমাতুল মুনিম বলেন, ‘রাজস্ব আহরণে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি, অটোমেশন, করসেবা বাড়ানো ইত্যাদি কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। আমরা চাই মানুষ যাতে নির্ভয়ে কর দিতে এগিয়ে আসেন।’ যারা কর দেবেন তাদের সহায়তা দেয়া এবং যারা রাজস্ব ফাঁকির সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
করের আওতা বাড়াতে উপজেলায় এজেন্ট ব্যাকিংয়ের মতো কর প্রতিনিধি নিয়োগের প্রস্তাব করেন ইআরএফ সভাপতি শারমীন রিনভী।
করদাতাদের সুবিধার্থে সেবা আরও সহজীকরণের পরামর্শ দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলাম ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন (ভার্চুয়ালি) এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আপনারা বরাবর আমাদের সঙ্গে থেকে রাজস্ব আদায়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন। আমাদের লক্ষ্য রাজস্ব আদায়ে স্বচ্ছতা ও অটোমেশন ইত্যাদি অব্যাহত রাখা। আশা করছি করদাতারা এর সুফল পাবেন।
ভার্চুয়াল সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সহসাধারণ সম্পাদক কুতুব উদ্দিন জসিম ও কোষাধ্যক্ষ রেজাউল হক কৌশিকসহ আরও অনেকে। সভায় যুক্ত ছিলেন এনবিআরের আয়করনীতির সদস্য মো. আলমগীর হোসেন, সদস্য সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া, ভ্যাটনীতির সদস্য মো. মাসুদ সাদিকসহ বাজেটসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।