বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

যমুনা ব্যাংকের আবার চমক জাগানিয়া লভ্যাংশ

  •    
  • ২৪ মার্চ, ২০২১ ২১:৩১

৫ শতাংশ আয় বাড়ার পর ১৬ শতাংশ লভ্যাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংকটি। যে হারে লভ্যাংশ দিতে যাচ্ছে তারা, তা ব্যাংকে এফডিআরের হারের প্রায় দ্বিগুণ। গত পাঁচ বছরে এক বছর ছাড়া প্রতিবারই এই ব্যাংকটির শেয়ারধারীরা আমানতের সুদহারের চেয়ে বেশি হারে নগদ লভ্যাংশ পেয়ে আসছেন। যে বছর পাননি, সে বছর বোনাস শেয়ার দিয়েছিল ব্যাংকটি। এবারও তারা ১৭.৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

মহামারির বছরে আগের পাঁচ বছরের তুলনায় বেশি আয় করার পর শেয়ারধারীদের জন্য লভ্যাংশও বাড়াতে যাচ্ছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত যমুনা ব্যাংক।

২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর সামপ্ত অর্থবছরের জন্য শেয়ারধারীদেরকে এক টাকা ৭৫ পয়সা করে লভ্যাংশ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ২৫ পয়সা করে বেশি।

বুধবার ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে ব্যাংকটির বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বুধবার ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি দাম দাঁড়িয়েছে ১৮ টাকা ৬০ পয়সা। এই হিসাবে শেয়ার দরের ৯.৪০ শতাংশ লভ্যাংশ হিসেবেই পেয়ে যাবেন বিনিয়োগকারীরা।

বর্তমানে আমানতের সুদহার ৪.৫ থেকে সর্বোচ্চ ৬ শতাংশ। এই হিসাবে ব্যাংকে একই পরিমাণ টাকা রাখলে লভ্যাংশের অর্ধেক টাকাও সুদ হিসেবে পাওয়া যাবে না।

ব্যাংকটির বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০২০ সালে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৩ টাকা ৫৬ পয়সা। কেবল গত বছর নয়, আগের পাঁচ বছরেও এত বেশি আয় করতে পারেনি ব্যাংকটি।

২০১৯ সালে ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি আয় ছিল ৩ টাকা ৩৮ পয়সা। তার আগের বছর এই আয় ছিল ৩ টাকা ৮ পয়সা। ২০১৭ সালেও আয় ছিল ৩ টাকা ৩৮ পয়সা। ২০২৬ সালে ছিল ২ টাকা ৯২ পয়সা আর ২০২৫ সালে ২ টাকা ৬৮ পয়সা।

এই লভ্যাংশ নিতে চাইলে শেয়ারধারীদেরকে আগামী ২০ এপ্রিল পর্যন্ত শেয়ার ধরে রাখতে হবে। এই লভ্যাংশ চূড়ান্ত হবে আগামী ৩১ মে বার্ষিক সাধারণ সভায়। করোনাকালে এই সভা হবে ডিজিটাল প্লাটফর্মে।

করোনার বছরে ব্যাংকগুলোর পরিচালন মুনাফা ব্যাপকভাবে কমে যাওয়ার যে ঘটনা ঘটে, তাতে আগের বছরের চেয়ে কম আয় করার শঙ্কা তৈরি হয় যমুনা ব্যাংকের ক্ষেত্রেও।

গত ৩১ ডিসেম্বরের পর অনিরীক্ষিত যে প্রতিবেদন গণমাধ্যমে আসে, তাতে দেখা যায়, গত বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকটির আয় হয় ৬৪০ কোটি টাকা। আগের বছর যা ছিল ৭২৫ কোটি টাকা।

তবে চূড়ান্ত মুনাফা বেড়েছে ১৮ পয়সা বা ৫ শতাংশ।

এর আগে লভ্যাংশ ঘোষণা করা ডাচ বাংলা, শাহজালাল ইসলামী, সিটি ও ব্যাংক এশিয়ার ক্ষেত্রে একই প্রবণতা দেখা গেছে।

ডাচ বাংলার পরিচালন মুনাফা ৯০ কোটি বা ৮ শতাংশ কমে গেলেও চূড়ান্ত মুনাফা বাড়ে ২৭ শতাংশ।

শাহজালালের পরিচালন মুনাফা ২০০ কোটি বা ৩৩ শতাংশ কমলেও চূড়ান্ত মুনাফা বাড়ে প্রায় ১৫ শতাংশ।

সিটি ব্যাংকের পরিচালন মুনাফার হিসাব গণমাধ্যমে আসেনি। তবে তাদের চূড়ান্ত মুনাফা আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে ৬৫.৬৪ শতাংশ।

মার্কেন্টাইল ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা ৪০ শতাংশ কম হওয়ার পরেও চূড়ান্ত মুনাফা একই রকম রয়েছে।

আরও পড়ুন: এফডিআরের চেয়ে বেশি মুনাফা দেবে মার্কেন্টাইলের শেয়ার

তবে পরিচালন মুনাফা ২ শতাংশ বাড়ার পরেও চূড়ান্ত মুনাফা কম হয়েছে প্রিমিয়ার ব্যাংকের। তবে তারা লভ্যাংশ বাড়িয়েছে।

ব্যাংক এশিয়ার পরিচালন মুনাফা আগের বছরের চেয়ে ২৪০ কোটি টাকা বা ২৫ শতাংশ কমে গেলেও চূড়ান্ত মুনাফা বাড়ে ৪ শতাংশের মতো।

ব্যাংকে টাকা রাখার চেয়ে যমুনার শেয়ারে বিনিয়োগ লাভজনক

কেবল ২০২০ সালের জন্য নয়। এর আগের পাঁচ বছর ধরেই ব্যাংকটি যে হারে নগদ লভ্যাংশ দিয়ে আসছে, তা ব্যাংকের আমানতের সুদ হারের চেয়ে বেশি।

যমুনা ব্যাংক ২০১৯ সালে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে, অর্থাৎ শেয়ার প্রতি দেড় টাকা।

রেকর্ড ডেট, অর্থাৎ যে তারিখে শেয়ার থাকলে লভ্যাংশ পাওয়া যায়, সেই ১৭ জুন শেয়ারের দাম ছিল ১৬ টাকা। অর্থাৎ শেয়ার মূল্যের তুলনায় বিনিয়োগকারী এই বছরে মুনাফা পেয়েছেন ৯.৩৭ শতাংশ।

শেয়ারের মূল্যের সঙ্গে তুলনা করে যে আর্থিক মুনাফা তাকে পুঁজিবাজারে বলে ইল্ড।

২০১৮ সালে এই ব্যাংকে বিনিয়োগ করে মুনাফার ইল্ড পাওয়া গেছে ১১ দশমিক ৩৬ শতাংশ। অর্থাৎ ব্যাংকের সুদহারের প্রায় দ্বিগুণ।

২০১৭ সালে এই ব্যাংকটি ২২ শতাংশ বোনাস শেয়ার দেয়। অর্থাৎ ১০০টি শেয়ার থাকলে বিনিয়োগকারী ২২টি শেয়ার লভ্যাংশ হিসেবে পেয়েছেন। ফলে ওই বছর আর আর্থিক লভ্যাংশের ইল্ড হিসাবটি হবে না।

২০১৬ সালের মুনাফা ছিল বর্তমান সঞ্চয়ের সুদহারের দ্বিগুণের চেয়ে বেশি, ১৩ দশমিক ১৪ শতাংশ। ওই সময় অবশ্য ব্যাংকের সুদহার ছিল বর্তমানের চেয়ে বেশি।

এই ব্যাংকের বিনিয়োগকারীরা সবচেয়ে বেশি মুনাফা পেয়েছেন ২০১৫ সালে। ওই বছর শেয়ারের দামের তুলনায় ১৬ দশমিক ২৫ শতাংশ লভ্যাংশ পেয়েছেন তারা।

কেবল এই ব্যাংকটি নয়, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৩১টি ব্যাংকের মধ্যে সদ্য তালিকাভুক্ত একটি ছাড়া বাকি ৩০টি ব্যাংকের মধ্যে অন্তত ১০টি ব্যাংক আছে যেগুলো বেশ ভালো হারে নগদ লভ্যাংশ দিয়ে আসছে গত পাঁচ বছর ধরে।

চলতি বছর এখন পর্যন্ত যেসব ব্যাংক লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে, তার মধ্যে কেবল একটি গত বছরের তুলনায় শেয়ার প্রতি ১০ পয়সা কম লভ্যাংশ দেয়ার প্রস্তাব করেছে। একটি গত বছরের সমান লভ্যাংশ দেয়ার প্রস্তাব করেছে। বাকি সব কটি গত বছরের চেয়ে বেশি হারে নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে।

এখন পর্যন্ত যে ছয়টি ব্যাংক লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে, তার মধ্যে তিনটিই যে হারে লভ্যাংশের প্রস্তাব করেছে তা যে কোনো সঞ্চয়ী স্কিম বা এফডিআরের হারের চেয়ে বেশি। সঙ্গে কোনো কোনো ব্যাংক আবার বোনাস শেয়ার দেয়ার প্রস্তাবও করেছে।

এ বিভাগের আরো খবর