মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগে রাজধানীর গুলশানে অভিজাত ব্র্যান্ডের দোকান জারা ফ্যাশনে বুধবার অভিযান চালিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের-এনবিআরের ভ্যাট নিরীক্ষা ও গোয়েন্দা অধিদপ্তরের একটি বিশেষ দল।
প্রতিষ্ঠানটি এক ক্রেতার কাছ থেকে ভ্যাট নিলেও, তা সরকারি কোষাগারে জমা দেয়নি। পরে ওই ক্রেতা গোয়েন্দা অফিসে অভিযোগ করেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে অভিযান চালানো হয়। এতে নেতৃত্ব দেন অধিদপ্তরের উপপরিচালক নাজমুন্নাহার কায়সার।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গুলশানের ১৪ নম্বর সড়কের ৭ নম্বর হাউসে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানটিতে বিদেশি ব্র্যান্ডের জামাকাপড়, ঘড়ি, জুতা, ব্যাগ ও অলংকারসহ নানা ধরনের দামি পণ্য বিক্রি করা হয়। তারা যা বিক্রি করে, মাসিক দাখিল করা ভ্যাট রিটার্নে তা দেখায় না।
অভিযান চলাকালে গোয়েন্দা দল জারা ফ্যাশন থেকে প্রয়োজনীয় হিসাবপত্র জব্দ করে। তাতে দেখা যায়, গত পাঁচ বছরে প্রতিষ্ঠানটি ৩৯ কোটি টাকার বিক্রয় হিসাব গোপন করে ব্যবসা পরিচালনা করছে। এতে প্রাথমিক পর্যায়ে ৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি পাওয়া গেছে।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলেছেন, জারা ফ্যাশন ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৫২ কোটি ৩৪ লাখ টাকার পণ্য বিক্রি করলেও ভ্যাট রিটার্নে ১৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকার বিক্রি দেখিয়েছে।
রিটার্ন ও প্রকৃত বিক্রয়ের পার্থক্য ধরা পড়ে ৩৮ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এভাবে বিক্রির তথ্য গোপন করে সরকারের বিপুল পরিমাণ ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
মাসিক ভ্যাট রিটার্নের ভিত্তিতে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ভ্যাট আদায় করা হয়। বর্তমানে নামী-দামি ব্র্যান্ডের দোকানে যেসব পোশাক পণ্য বিক্রি হয় তার ওপর সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট প্রযোজ্য।
মোট বিক্রয় মূল্যের সঙ্গে ক্রেতারা এই ভ্যাট দেন। নিয়ম অনুযায়ী, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সেই ভ্যাট আদায় করে সরকারি কোষাগারে জমা দেয়।
ভ্যাট নিরীক্ষা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান নিউজবাংলাকে বলেন, প্রতিষ্ঠানটি যে পরিমাণ বিক্রি করে, সে অনুযায়ী ভ্যাট দেয় না, যা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। গভীর তদন্ত শেষে আরও ফাঁকি উদ্ঘাটনের কাজ চলছে। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে শিগগিরই মামলা হবে।