বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দ্বিতীয় দিনই দর হারাল নতুন ব্যাংকের শেয়ার

  •    
  • ২৩ মার্চ, ২০২১ ১৭:২১

এক যুগ পর সোমবার প্রথম ব্যাংক হিসেবে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় চতুর্থ প্রজন্মের ব্যাংক এনআরবিসি। কিন্তু দ্বিতীয় দিনেই ব্যাংকটির শেয়ার দর হারানোয় হতাশ সবাই।

পুঁজিবাজারে নতুন কোম্পানি লেনদেন শুরু হলেই শুরু হয় হুলস্থুল। প্রথম দুদিন দিনের সর্বোচ্চ দর বাড়ার পর তৃতীয় দিন থেকে পর্যায়ক্রমে ১০ শতাংশ করে দর বেড়ে শেষে হয় অতিমূল্যায়িত। কিন্তু সে ধারা ভেঙে নেতিবাচক দৃষ্টান্ত দেখাল সদ্য তালিকাভুক্ত এনআরবিসি ব্যাংক লিমিটেড।

ব্যাংকটির প্রাথমিক গণ প্রস্তাবে (আইপিও) প্রায় ১২ গুণের বেশি আবেদন জমা পড়ে। আইপিওতে আগ্রহ থাকলেও লেনদেন শুরু হওয়ার পর সে আগ্রহ আর দেখা যাচ্ছে না।

ফলে লেনদেন শুরুর দিন সোমবার ব্যাংকটির শেয়ার দর সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়া বা কমার সুযোগ থাকলেও বাড়ে মাত্র ৩২ শতাংশ। ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের প্রতিটি শেয়ারের দর দাঁড়ায় ১৩ টাকা ৬০ পয়সায়।

দ্বিতীয় দিনের লেনদেনে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ দর বাড়ার সুযোগ ছিল ব্যাংকটির। কিন্তু সেটিও হয়নি। বরং দিন শেষে ৬ দশমিক ৬০ শতাংশ দর কমেছে।

এক যুগ পর সোমবার প্রথম ব্যাংক হিসেবে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় চতুর্থ প্রজন্মের ব্যাংক এনআরবিসি। কিন্তু দ্বিতীয় দিনেই ব্যাংকটির শেয়ার দর হারানোয় হতাশ সবাই।

প্রথম দুদিনের লেনদেন

সোমবার ১০ টাকায় তালিকাভুক্ত এনআরবিসি কমার্শিয়াল ব্যাংকের লেনদেন শুরু হওয়ার পর দিনের সর্বোচ্চ দর উঠে ১৫ টাকায়। তবে পরে দাম কমে যায়। এক পর্যায়ে দাম কমে ১১ টাকা ৯০ পয়সায় নেমে যায়। তবে শেষ পর্যন্ত ১৩ টাকা ২০ পয়সায় লেনদেন শেষ হয়।

দ্বিতীয় দিনে ৫০ শতাংশ দর বাড়া বা কমার সুযোগ ছিল ব্যাংকটির। সে হিসাবে মঙ্গলবার ব্যাংকটির সর্বোচ্চ দর হতে পারতো ১৯ টাকা ৮০ পয়সা। আর কমলে হতো ৬ টাকা ৬০ পয়সা।

কিন্তু দর কমে আসলেও দিন শেষে ব্যাংকটির শেয়ার দর ১২ টাকা ৪০ পয়সা বা ৬ দশমিক ০৬ শতাংশ কমেছে।

এক যুগ পর সোমবার প্রথম ব্যাংক হিসেবে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হলো চতুর্থ প্রজন্মের ব্যাংক এনআরবিসি।

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির নীতিমালা অনুযায়ী লেনদেন শুরু হলে প্রথম দুই কার্যদিবসে কোনো প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দর ৫০ শতাংশ করে এবং পরের কার্যদিবসে ১০ শতাংশ করে বাড়তে বা কমতে পারে।

বুধবার থেকে ব্যাংকটির স্বাভাবিক ১০ শতাংশ পর্যন্ত দর বাড়তে বা কমতে পারবে।

মিউচ্যুয়াল ফান্ড ছাড়া গত এক বছর তালিকাভুক্ত সব কোম্পানির শেয়ার প্রথম দিন ৫০ শতাংশ বেড়েছে। তবে এই দামে বেশির ভাগ কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা শেয়ার ছাড়তে রাজি হয়নি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দ্বিতীয় দিনও ৫০ শতাংশ দাম বেড়েছে। এমনও দেখা গেছে টাকা ৯ দিন এমনকি ১৫ দিন সর্বোচ্চ পরিমাণ দাম বেড়ে আকাশচুম্বি হয়েছে দাম।

সম্প্রতি তালিকাভুক্ত ই জেনারেশনের শেয়ার প্রথম কার্যদিবসে হাতবদল হয় মাত্র ২০১টি। লুব রেফের শেয়ার হাতবদল হয় ৪২১টি। মীর আকতার শেয়ার প্রথম দিন লেনদেন হয় ৭৩০টি। অর্থাৎ সর্বোচ্চ দামেও বলতে গেলে কোনো বিক্রেতাই ছিল না এসব কোম্পানির।

যেখানে এনআরবিসি কমার্শিয়াল ব্যাংকের প্রথম দিনেই লেনদেন হয়েছে ৩ কোটি ২২ লাখ ৯৩ হাজার ৭০৫টি শেয়ার। আর দ্বিতীয় দিনে লেনদেন হয়েছে ৮৮ লাখ ৮৬ হাজার শেয়ার।

ব্যাংকটি মোট ১২ কোটি শেয়ার ছেড়ে ১২০ কোটি টাকা উত্তলন করেছে পুঁজিবাজার থেকে। এর মাধ্যমে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকের সংখ্যা দাঁড়াল ৩১টি।

পুঁজিবাজারে এনআরবিসি ব্যাংকের দুই দিনের লেনদেন

বিশেষজ্ঞরা বললেন আস্থার সঙ্কট

এনআরবিসির প্রথম দিনের লেনদেন শেষে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেছিলেন, প্রথম দিনে আগ্রহ না থাকলেও দ্বিতীয় দিনেও ব্যাংকটির ৫০ শতাংশ শেয়ারের দর বাড়ার সুযোগ আছে। তখনই বোঝা যাবে ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ কেমন।

মঙ্গলবার লেনদেন শেষে আবু আহমেদ বলেন, ‘ব্যাংকের শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের যে অনীহা তা প্রকাশ পেল। কিন্তু অন্য যেকোনো খাতের চেয়ে ব্যাংকের শেয়ারে আস্থা রাখা ভালো।

তিনি বলেন, ‘১০ টাকার শেয়ার দর এখনই ১২ টাকায় নেমে এসেছে। এটাও আতঙ্কের। যারা আইপিও পেয়েছে তারা শেয়ার প্রতি মাত্র ২ টাকা মুনাফায় আছে। পরবর্তীতে শেয়ার দর আরও কমতে পারে এমন আতঙ্ককে অনেকে শেয়ারে ছেড়ে দিচ্ছেন। এটাও দর কমে আসার একটি কারণ।’

এনআরবিসির আর্থিক স্বাস্থ্য

লেনদেন শুরুর আগের দিন ব্যাংকটি তাদের জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর ২০ সময়ের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে ব্যাংকটির আয়ের উল্লম্ফন দেখা গেছে।

জানানো হয়েছে, এ সময়ে ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ২ টাকা ৪১ পয়সা। সেখানে আগের বছরের একই সময়ে ছিল মাত্র ৩৬ পয়সা।

২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত অর্থবছরে ব্যাংকটি বিনিয়োগকারীদেরকে শেয়ার প্রতি ৯০ পয়সা নগদ ও দুই শতাংশ অর্থাৎ প্রতি ১০০ শেয়ারে দুটি বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ হিসেবে দিয়েছে। ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণার তারিখ আসবে যেকোনো দিন।

নতুন কোম্পানির শেয়ারের অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শুরুতে দাম বেড়ে থাকে। কিন্তু উল্টো পথ দেখল এনআরবিসি ব্যাংক। ছবি: নিউজবাংলা

নতুন সব কোম্পানির দর বেড়েছিল দিনের সর্বোচ্চ

এনআরবিসি কমার্শিয়াল ব্যাংকের লেনদেন শুরু করার আগে সর্বশেষ ১০ টাকায় তালিকাভুক্ত ই জেনারেশনের শেয়ার টানা ৯ কার্যদিবসে সর্বোচ্চ পরিমাণে বেড়ে ৪২ টাকা ৮০ পয়সা হয়ে যাওয়ার পর শুরু হয় মূল্য পতন।

মঙ্গলবার দিন শেষে শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ২৯ টাকা ৭০ পয়সায়।

আরেক কোম্পানি লুব রেফ ২৭ টাকায় তালিকাভুক্ত হয়ে দুই কার্যদিবসে সর্বোচ্চ পরিমাণে বেড়ে ৬০ টাকা ৭০ পয়সা হওয়ার পর শুরু হয় মূল্য পতন।

মঙ্গলবার দিন শেষে শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ৩৯ টাকা ৯০ পয়সা।

কেবল এই দুটি শেয়ার নয়, গত কয়েক মাসে দেখা গেছে একই চিত্র। ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স, এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স, রবি, এসোসিয়েট অক্সিজেন, ডমিনোজ স্টিল, এনার্জি প্যাক, মীর আকতার, তাওফিকা ফুডসের শেয়ারের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে।

ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের লেনদেন শুরু হয়েছে ২১ ডিসেম্বর। লেনদেন শুরু হওয়ার ৯ কার্যদিবসে ১০ টাকার শেয়ারের সর্বোচ্চ দর উঠে ৫৩ টাকা ৮০ পয়সায়। বর্তমানে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হচ্ছে ৩৬ টাকা ৯০ টাকা।

ই-জেনারেশন লিমেটেড ২৩ ফেব্রুয়ারি। কোম্পানিটির শেয়ার দর মাত্র সাত কার্যদিবসে উঠে ৩৯ টাকা ৪০ পয়সায়। এক মাসেরও কম সময় লেনদেনে কোম্পানির শেয়ার দর এখন ৩০ টাকা ৯০ পয়সা।

এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের প্রতিটি শেয়ার বর্তমানে লেনদেন হচ্ছে ২৬ টাকা ২০ পয়সায়। কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু করে গত বছরের আগস্টে। সে সময় কোম্পানিটির শেয়ারের সর্বোচ্চ দর উঠেছিল ৪৪ টাকা ৭০ পয়সা।

এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেড পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু করে ১৯ জানুয়ারি। লেনদেন শুরু হওয়ার পাঁচ কার্যদিবসে প্রতিষ্ঠানটির সর্বোচ্চ দর উঠে ১০১ টাকা ৬০ পয়সা। বর্তমানে কোম্পানিটির শেয়ার দর ৪৫ টাকা।

মীর আকতার হোসেন লিমিটেডের লেনদেন শুরুর দুই কার্যদিবসে শেয়ার প্রতি দর উঠে ১১৭ টাকা। তারপর কোম্পানির শেয়ার দরের যে পতন তা আর ঠেকানো যায়নি। বর্তমানে কোম্পানির শেয়ার লেনদেন ৭১ টাকা ২০ পয়সায়।

রবি আজিয়াটা লিমিটেড পুজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে ২৪ ডিসেম্বর। ১০ টাকার অভিহিত মূল্যের প্রতিটি শেয়ার মাত্র ১৫ কার্যদিবসে উঠে ৭৭ টাকা। বর্তমানে লেনদেন হচ্ছে ৪৬ টাকা ৫০ পয়সায়।

তওফিকা ফুড অ্যান্ড এগ্যো ইন্ডাস্ট্রিস ১০ ফেব্রুয়ারি লেনদেন শুরু করার পর টানা বেড়ে ছাড়ায় ২৭ টাকা। বর্তমানে লেনদেন হচ্ছে ২১ টাকা ২০ পয়সায়।

এ বিভাগের আরো খবর