বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়ানোর চেষ্টায় থামল পতন, বাড়ল ভরসা

  •    
  • ২২ মার্চ, ২০২১ ১৬:৫২

গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার বড় পতন হয় লকডাউন ও লেনদেন স্থগিতের গুজবে। আর রোববার সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে আগের দিনের মতো পতন ত্বরান্বিত করে সাধারণ ছুটির আলোচনা। এই অবস্থায় মার্চেন্ট ব্যাংক ও স্টক ব্রোকারদের সঙ্গে বৈঠকে বসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়ানোর উপায়ের সন্ধানে নামে বিএসইসি। পরের দিন বাজারে দেখা গেল ইতিবাচক প্রভাব।

প্রথমদিন লকডাউনের গুজব, পরদিন সাধারণ ছুটির। পতনমুখি পুঁজিবাজারে পর পর বড় পতনে ছড়ায় আতঙ্ক। নড়েচড়ে বসে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। সরকারের পক্ষ থেকেও আসে বক্তব্য। জানানো হয়, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগে আইনি বাধা কাটানোর ব্যবস্থা হচ্ছে। আর এর প্রতিক্রিয়ায় কিছুটা আত্মবিশ্বাস ফিরে পেল বিনিয়োগকারীরা।

গত দুই দিন শেয়ার বিক্রি করে দেয়ার যে ঝোঁক দেখা গেছে গত দুই কার্যদিবসে, সোমবার এসে দেখা গেছে উল্টো চিত্র। কম দামে শেয়ার ছাড়তে রাজি না থাকায় বাড়ল শেয়ারের দর, বাড়ল মূল্য সূচক, বেড়েছে লেনদেন বাড়ল ভরসা।

সোমবার লেনদেন শুরুতেই বাড়ে সূচক। তারপর কিছুটা পড়লেও সময় যত গড়িয়েছে সূচক বেড়েছে তত।

দিন শেষে ডিএসইএক্স সূচক ৬২ দশমিক ৪১ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৪১২ পয়েন্টে। শারিয়াহভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস ৯ দশমিক ৪৬ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৩৫ পয়েন্টে।

বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএ-৩০ সূচক ৩২ দশমিক ২৮ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৬৬ পয়েন্টে।

লেনদেন হওয়া কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৮৮টির, কমেছে ৫৬টির ও পাল্টায়নি ১০৮টির।

মোট লেনদেন হয়েছে ৬৯৩ কোটি টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৬১৫ কোটি টাকা।

ব্যাংক, বহুজাতিক কোম্পানি ও বিমা খাতের বেশিরভাগ কোম্পানির দাম বেড়েছে। কমপক্ষে চার শতাংশ দাম বেড়েছে ৩৬টি কোম্পানির। আর যেসব কোম্পানি দর হারিয়েছে, সেগুলোর বেশিরভাগই স্বল্প মূলধনী কোম্পানি। আর দাম কমার হারও খুব বেশি নয়।

সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেনের চিত্র

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে-সিএসই প্রধান সূচক সিএএসপিআই ১৯১ দশমিক ২৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৬৭৭ পয়েন্টে।

লেনদেন হওয়া ২১৭টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১২২টির, কমেছে ৪৯টির ও পাল্টায়নি ৪৬টির। টাকার অংকে শেয়ার হাতবদল হয়েছে ৩২ কোটি টাকার।

গুজব কী নিয়ে

গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার বড় পতন হয় লকডাউন ও লেনদেন স্থগিতের গুজবে। আর রোববার সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে আগের দিনের মতো পতন ত্বরান্বিত করে সাধারণ ছুটির আলোচনা।

গত মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর লকডাউন ঘোষণাসহ ১২টি প্রস্তাব তৈরি করে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে বৈঠকে বসে। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে সে প্রস্তাব নাকচ করে দেয়া হয়। আর স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন স্পষ্ট করেই বলেছেন, সরকার লকডাউনে যাচ্ছে না।

তবু পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এ নিয়ে ছিল উৎকণ্ঠা। বিশেষ করে যারা মার্জিন ঋণ নিয়ে লেনদেন করে, তাদেরর দুশ্চিন্তা ছিল বেশি। লেনদেন স্থগিত হলে সুদের চাকা ঘুরবে এতে শেয়ার বিক্রির চাপ বেড়ে যাওয়া আশঙ্কা ছিল স্পষ্ট।

বৃহস্পতিবার ১৮ মার্চ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে-ডিএসই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ছিল ৫ হাজার ৪৩৪ পয়েন্টে। তারপর শুক্র ও শনিবার লেনদেন বন্ধ থাকার পর রোববার আবারও বড় পতনের মুখে পড়ে পুঁজিবাজার। এদিন সূচক আগের দিনের তুলনায় ৮৪ পয়েন্টের বেশি পতন হয়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৩৪৯ পয়েন্টে।

লেনদেনেও মন্দাবস্থা দেখা যায়। বৃহস্পতিবার লেনদেন হয়েছিল ৬৮৪ কোটি টাকা এবং রোববার লেনদেন হয় ৬১৫ কোটি টাকা।

প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়ানোর উদ্যোগ

সেদিন সন্ধ্যায় বিএসইসি বৈঠকে বসে মার্চেন্ট ব্যাংক অ্যাসোসিয়েশন এবং ডিএসই ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশন, ডিবিএর সঙ্গে। গুজবে কান না দেয়ার আহ্বানের পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়ানোর ওপর জোর দেয়া হয়।

প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়ানোর ক্ষেত্রে আইনি কী কী বাধা দূর করতে হবে, সেটি জানানো হয় বিএসইসিকে। আর বিএসইসি আশ্বাস দেয় ব্যবস্থা নেয়ার। কেবল এই প্রস্তাব নিয়েই আরেকটি বৈঠক করার কথা জানান কমিশনার শেখ শামুসিদ্দন আহমেদ।

ডিবিএ সভাপতি শরিফ আনোয়ার হোসেন বলে, তারা বলেন, ব্রোকারহাউজগুলো তাদের ডিলার অ্যাকাউন্টে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আইন অনুযায়ী আগে গ্রাহকের অর্ডার বাস্তবায়ন করতে হয়। পরে ডিলার একাউন্ট থেকে ক্রয় আদেশ দিতে হয়। ১৯৮৭ সালে প্রণীত এই আইনের কারণে ডিলারদের বিনিয়োগ ব্যাহত হচ্ছে।

বিএসইসি কমিশনার শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, আইনের এই শর্তটি লংঘন করার কারণে এখনও কারো বিরুদ্ধে নন-কমপ্লায়েন্স অভিযোগ আনা হয়নি, এবারও বিষয়টিকে নন-কমপ্লায়েন্স হিসেবে গণ্য করা হবে না।

তবে বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনার হওয়া উচিত জানিয়ে আরও একটি বৈঠক করার কথা জানান তিনি।

ডিবিএ সভাপতি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ নিয়ে একজন প্রস্তাব করেছিল। কিন্ত বিএসইসি পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এটি নিয়ে আলাদা একটি বৈঠকের প্রয়োজন হবে।’

ব্র্যাক ইপিএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের প্রধান গবেষণা কর্মকর্তা দেবব্রত কুমার সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, করোনা নিয়ে পুঁজিবাজারে যে গুজব ছিল সেটি কাটাতে বিএসইসি যে উদ্যোগ নিয়েছে সেটি প্রশংসার। তবে এই উদ্যোগের আগে কারা বাজারকে মন্দার দিকে ঠেলে দিয়েছিল সেটাও নিশ্চিত হওয়া উচিত।

তিনি বলেন, পুঁজিবাজার ভালো হলে বিনিয়োগকারীরাও বাজারের প্রতি আস্থাশীল হবে। পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়ানোর বিকল্প নেই।

আগ্রহ ও অনাগ্রহের কোম্পানি

সোমবার লেনদেনে সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে সদ্য লেনদেন শুরু করা এনআরবিসি কমার্শিয়াল ব্যাংক, যার শেয়ার দর বেড়েছে ৩২ শতাংশ। যদিও কোম্পাটির শেয়ার দর ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ার সুযোগ ছিল।

দ্বিতীয় স্থানে ছিল প্রিমিয়ার ব্যাংক, যার শেয়ার দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৫২ শতাংশ। লেনদেনে কোম্পানিটির শেয়ার ১২ টাকা ৬ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ১৩ টাকা ৮০ পয়সা।

এছাড়া এ তালিকায় থাকা গোল্ডেনসন কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে ৯ দশমিক ০৯ শতাংশ। মোজাফফর হোসেন স্টিল মিলস লিমিটেডের শেয়ার দর বেড়েছে ৮ দশমিক ৮০ শতাংশ।

আমান কটন ফেব্রিক্স লিমিটেড, এশিয়া প্যাসিফিক ইন্স্যুরেন্স, রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স, বিএটিবিসির ছিল এ তালিকায়।

দর কমার দিক দিয়ে শীর্ষে ছিল জিবিবি পাওয়ার, যার দর কমেছে ৪ দশমিক ৩১ শতাংশ। জুট স্পিনিংয়ের শেয়ার দর কমেছে ৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ।

আইসিবি এএমসিএল ফার্স্ট অগ্রণী ব্যাংক মিউচ্যুয়াল ফান্ড ২ দশমিক ৭৩ শতাংশ।

এ বিভাগের আরো খবর