মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগে রাজধানীর গুলশানের ইন্টেরিওর প্রতিষ্ঠান চারুতা প্রাইভেট লিমিটেডের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ৩০ কোটি টাকার বেশি ভ্যাট ফাঁকির ঘটনা প্রমাণিত হওয়ায় এনবিআরের ভ্যাট গোয়েন্দা ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর সোমবার এ মামলা করেছে।
ভ্যাট গোয়েন্দা ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, প্রকৃত তথ্য গোপন করে দীর্ঘ সময় ধরে প্রতিষ্ঠানটি ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে আসছে, এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ভ্যাট গোয়েন্দা অফিসের উপপরিচালক ফেরদৌসী মাহবুবের নেতৃত্বে একটি দল তদন্ত করে। ভ্যাট ফাঁকির ঘটনা প্রমাণিত হওয়ায় মামলা করা হয়।
তদন্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রতিষ্ঠানটির ২০১২-২০১৩ থেকে ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে প্রয়োজনীয় নথি জব্দ করা হয়। এ ছাড়া বার্ষিক অডিট রিপোর্ট, বিভিন্ন সময়ে প্রতিষ্ঠানটির ট্রেজারি চালানের কপি ও অন্যান্য দলিল যাচাই–বাছাই করে তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন আয়ের বিপরীতে ১৭ কোটি ৫১ লাখ টাকার ভ্যাট পরিশোধ করেছে। কিন্তু তারা যে আয় করেছে, তাতে সরকারকে ভ্যাট দেয়ার কথা ৩০ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। এ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটি প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করায় ১৩ কোটি ৪২ লাখ টাকা ভ্যাট থেকে বঞ্চিত হয়েছে সরকার।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলেছেন, যথাসময়ে সরকারি কোষাগারে ভ্যাট জমা না দেয়ায় আইন অনুযায়ী, প্রতিমাসে ২ শতাংশ করে জরিমানা আরোপ করায় আদায়যোগ্য ভ্যাট হবে ১৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।
এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটি উৎসে খাতে কোনো ভ্যাট দেয়নি। ফলে উৎসে জরিমানাসহ প্রতিষ্ঠানটির অপরিশোধিত ভ্যাটের পরিমাণ ১৪ কোটি ৮৪ লাখ টাকা এবং সুদ বাবদ ১৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা আসে। সব মিলিয়ে ৩০ কোটি ৩৬ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান বলেন, নিয়ম অনুযায়ী নিবন্ধিত যেকোনো প্রতিষ্ঠানকে প্রতিমাসে আয়–ব্যয়ের হিসাব ভ্যাট রিটার্নে দেখাতে হয়।
কিন্তু এই প্রতিষ্ঠান নিয়মিত ভ্যাট রিটার্ন জমা দেয়নি। এ ছাড়া ব্যবসার প্রকৃত তথ্য গোপন করা ভ্যাট আইন অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ। আইন ভঙ্গ করে বিপুল পরিমাণ ভ্যাট ফাঁকি দেয়ায় প্রচলিত আইনে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।