বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দর হারাল উড়তে থাকা বহুজাতিক কোম্পানি

  •    
  • ১১ মার্চ, ২০২১ ১৭:১১

‘বহুজাতিক কোম্পানিগুলো নিয়ে পুঁজিবাজারে গুজব আছে। এগুলোর পরিশোধিত মূলধন বাড়াতে হবে। কিন্তু যে হারে শেয়ারের দর বেড়েছে তারপর আর বাড়া উচিত না। এখন মূলত এসব কোম্পানি থেকে মুনাফা উত্তোলনের কারণেই দর কমেছে।’

চার কার্যদিবস দর বাড়ার পর থামল পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বহুজাতিক কোম্পানির শেয়ারের দৌরাত্ম্য। বড় মূলধনী কোম্পানির মধ্যে ব্যাংক খাতে বেশির ভাগের দাম বৃদ্ধির প্রভাবে সূচকেও যোগ হয়েছে পয়েন্ট। তবে বিনিয়োগকারীরা এখনও বাজার পর্যবেক্ষণে। এ কারণে কমেছে লেনদেন।

বুধবার দ্বিতীয় ব্যাংক হিসাবে লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক আর চতুর্থ আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে লংকাবাংলা ফিন্যান্স।

এই দুটি প্রতিষ্ঠানই আগের বছরের চেয়ে বেশি আয় করেছে মহামারিকালে। লংকা বাংলার লভ্যাংশ আগের বছরের সমান আর শাহজালাল সামান্য বেশি দিয়েছে।

লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে বিমা খাতের রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্সও। মহামারিকালে এই কোম্পানিও মুনাফা করেছে আকর্ষণীয়।

‘মুনাফা নিতে’ পতন বহুজাতিক ও দামি শেয়ারের

সপ্তাহের শুরু থেকে আলোচনায় থাকা বহুজাতিক ও দামি শেয়ারগুলোর দর বৃহস্পতিবার কমেছে।

রেকিটবেনকিউজার লিমিটেডের শেয়ারপ্রতি দর কমেছে ৫০ টাকা ৭০ পয়সা। গত ৩ মার্চ থেকে কোম্পানিটির শেয়ারদর ৪ হাজার ৫৪৫ টাকা থেকে বেড়ে ৪ হাজার ৭৫০ টাকায় উঠে। বৃহস্পতিবার দর কমে হয়েছে ৪ হাজার ৭০০ টাকা।

ইউনিলিভার কনজুমার কেয়ার লিমিটেডের শেয়ারপ্রতি দর কমেছে ৩৪ টাকা ১০ পয়সা। ২ হাজার ৮০০ টাকা থেকে দর বেড়ে উঠেছিল ২ হাজার ৯৬৩ টাকায়। বৃহস্পতিবার দরপতন হয়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৯২৯ টাকায়।

বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেনের চিত্র

ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেডের শেয়ারদরও গত চার কার্যদিবস বেড়েছে। এদিন কোম্পানিটির শেয়ারদর কমেছে দশমিক ১৮ শতাংশ। লেনদেন শেষে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৩৫ টাকায়। তবে এ সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর সর্বোচ্চ ২ হাজার ১৪৬ টাকায় উঠেছিল।

বার্জার পেইন্ট বাংলাদেশ লিমিটেডের শেয়ারদর কমেছে ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ বা ১২০ টাকা। আগের দিন কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি দর ছিল ১ হাজার ৯৩০ টাকা। বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে হয়েছে ১ হাজার ৮০৫ টাকা।

লিন্ডে বাংলাদেশ লিমিটেডে শেয়ারপ্রতি দর কমেছে ১ দশমিক ৩৯ শতাংশ বা ১৯ টাকা ৩০ পয়সা। দর বাড়তে থাকা ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের শেয়ারদর ১ দশমিক ৯৩ শতাংশ বা ২৫ টাকা ৫০ পয়সা কমেছে।

রেনেটা লিমিটেডের শেয়ারদরও কমেছে বৃহস্পতিবার। এদিন কোম্পানিটির শেয়ারদর দশমিক ৬৫ শতাংশ বা শেয়ারপ্রতি ৭ টাকা ৮০ পয়সা করে কমেছে।

বাজার বিশ্লেষকের বক্তব্য

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক দেবব্রত কুমার সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বহুজাতিক কোম্পানিগুলো নিয়ে পুঁজিবাজারে গুজব আছে। এগুলোর পরিশোধিত মূলধন বাড়াতে হবে। কিন্তু যে হারে শেয়ারের দর বেড়েছে তারপর আর বাড়া উচিত না। এখন মূলত এসব কোম্পানি থেকে মুনাফা উত্তোলনের কারণেই দর কমেছে।’

তিনি বলেন, ‘পুঁজিবাজারের সার্বিক অবস্থা ভালো। সূচক ও লেনদেনে যে স্থিতাবস্থা আছে তাতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। বিনিয়োগকারীরা চাইবেই শেয়ারের দর বাড়লে তা বিক্রি করে মুনাফা তুলে নেয়ার। এর জন্যই লেনদেন মাঝে মাঝে কমে আসে।’

একই বক্তব্য দিলেন পুঁজিবাজারের বিশ্লেষক আবু আহমেদও। তিনি বলেন, ‘ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ বিমা কোম্পানিগুলোর অর্থবছর শেষ হচ্ছে ডিসেম্বরে। ফলে বলা চলে এটা লভ্যাংশ ঘোষণার মাস। আগামী আরও দুই মাস এ ধারা অব্যাহত থাকবে। ফলে যারা দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ করেছে তারা এখন অপেক্ষা করবেন কোম্পানির লভ্যাংশের জন্য।’

তিনি বলেন, ‘বাজার ভালো যাচ্ছে। তবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের যে নির্দেশনা আছে সেটি অনেকটাই লভ্যাংশ প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত করছে বিনিয়োগকারীদের। সেটি দ্রুতই সমাধান করা উচিত।’

লেনদেনে এগিয়ে থাকা কোম্পানি

বৃহস্পতিবার ডিএসইতে লেনদেনে এগিয়ে ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড। এদিন কোম্পানিটির ১ কোটি ১৫ লাখ ১৭ হাজার শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৯৫ কোটি ৫৮ লাখ টাকায়।

দ্বিতীয় স্থানে ছিল লংকাবাংলা, যার ২ কোটি ২৮ লাখ ৪ হাজার শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৮৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকায়।

রবি আজিয়াটা লিমিটেডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১ কোটি ২৯ লাখ ৭৫ হাজার, যার বাজারমূল্য ছিল ৬৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকা।

লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪৬ কোটি ৩১ লাখ টাকা।

সামিট পাওয়ার লিমিটেডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৮৬ লাখ ৯৮ হাজার, যার বাজারমূল্য ছিল ৪৪ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।

সূচক ও লেনদেন

ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫ দশমিক ১৯ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৫৬৮ পয়েন্টে।

শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস ১ দশমিক ৯১ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৬৫ পয়েন্টে।

বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক ৪ দশমিক ৭৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৫৪ পয়েন্টে।

লেনদেন হওয়া কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১১০টির, কমেছে ১২২ টির ও পাল্টায়নি ১১৫টির।

লেনদেন হয়েছে ৮০৯ কোটি টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৮৭৯ কোটি টাকা। এ হিসেবে এক দিনের ব্যবধানে লেনদেন কমেছে ৭০ কোটি টাকা।

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৯ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ১৬৪ পয়েন্টে।

লেনদেন হওয়া ২১৯টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৬৭টির, কমেছে ৮৭টির ও পাল্টায়নি ৬৫টির।

লেনদেন হয়েছে মোট ৩৯ কোটি টাকা।

আগ্রহ ও অনাগ্রহের কোম্পানি

বৃহস্পতিবার লেনদেনে সবচেয়ে বেশি এগিয়েছিল তালিকাভুক্ত ‘বি‘ ক্যাটাগরির কোম্পানি। এদিন আনলিমা ইয়ার্ডের শেয়ারদর বেড়েছে ১০ শতাংশ। আগের দিনের ৩৯ টাকা থেকে দর বেড়ে হয়েছে ৪২ টাকা ৯০ পয়সা।

দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা সোনালী আঁশের শেয়ারদর বেড়েছে ৮ দশমিক ৭১ শতাংশ। এদিন কোম্পানিটির শেয়ারদর ৪৩৭ টাকা ৪০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৪৭৫ টাকা ৫০ পয়সা।

তৃতীয় অবস্থানে থাকা সালভো কেমিক্যালের শেয়ারদর বেড়েছে ৮ দশমিক ৬৬ শতাংশ।

দরপতনের দিক দিয়ে শীর্ষে ছিল সদ্য তালিকাভুক্ত কোম্পানি লুব রেফ (বাংলাদেশ) লিমিটেড। এক দিনে সর্বোচ্চ যত টাকা দর হারানো সম্ভব ততই কমেছে কোম্পানিটির।

লেনদেন শুরুর তৃতীয় কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ারদর ১০ শতাংশ বাড়া বা কমার কথা। কিন্তু শতাংশের হিসাবে ৯ দশমিক ৮৮ শতাংশ কমার সুযোগ ছিল। কমেছেও তা।

আগের দিনের ৬০ টাকা ৭০ পয়সা থেকে দর কমে হয়েছে ৫৪ টাকা ৭০ পয়সা।

দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বার্জার পেইন্ট বাংলাদেশ লিমিটেডের শেয়ারদর কমেছে ৬ দশমিক ২৪ শতাংশ।

তৃতীয় অবস্থানে থাকা ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর কমেছে ৬ দশমিক ১৫ শতাংশ।

এ বিভাগের আরো খবর