বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সামনে এগিয়ে যেতে পরিকল্পনা এখনই

  • মীর নাসির হোসেন   
  • ৫ মার্চ, ২০২১ ০৮:২৪

নিয়ম অনুযায়ী সিডিপির স্বীকৃতি অর্জনের পর তিন বছর অপেক্ষা করতে হয়, কিন্তু আমরা ২০২৬ সাল পর্যন্ত সময় পাচ্ছি। বাড়তি সময় আমাদের জন্য একটি বড় সুযোগ। প্রস্তুতি পর্বে এই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।

জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসির (সিডিপি) ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা সভায় এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে বাংলাদেশকে যে স্বীকৃতি দিয়েছে সেটা সম্মানের।

এই যোগ্যতা অর্জন যে সম্মানের সেটা অস্বীকার করার উপায় নেই। তবে উত্তরণের পর আমাদের কঠিন প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হতে হবে। এ জন্য পণ্যের উৎপাদন খরচ, বৈচিত্র্যকরণ, দক্ষ শ্রমিকের মাধ্যমে বিশ্বমানের শিল্প-কারখানা তৈরি করে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হবে।

পণ্যের উৎপাদন খরচ অনেকগুলো বিষয়ের উপর নির্ভর করে। দক্ষ শ্রমিক, অবকাঠামো, গ্যাস, বিদ্যুৎ নিশ্চিত করা গেলেই এটি করা সম্ভব।

এ অর্জনের সম্ভাবনা হচ্ছে দেশ এখন বিশ্বের কাছে একটি মডেল হিসেবে উপস্থাপিত হবে। আমাদের যখন কোনো ঋণের জন্য গ্যারান্টি প্রয়োজন হবে তখন বাড়তি সুবিধা দেবে।

জাতি হিসাবে আমরা যে সক্ষম জাতি সেটা অনেকবার প্রমাণ হয়েছে। দুর্যোগ, মহামারি, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সব ক্ষেত্রেই বাংলাদেশের অর্জন আছে।

সরকার ও বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদের এখন সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। সামনে এগিয়ে যেতে পরিকল্পনা প্রয়োজন এখনই। এই পরিকল্পনায়, কীভাবে এগিয়ে যেতে হবে তার বিস্তারিত রোডম্যাপ থাকতে হবে।

শিল্পের অবকাঠামো উন্নয়ন করতে হলে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রয়োজন। সরকার ইতিমধ্যে এটি নিয়ে কাজ করছে। গ্যাসের সমস্যা ছিল। সেটি সরকার এলপিজি (তরল গ্যাস) দিয়ে ঘাটতি পূরণের চেষ্টা করছে। এটি ভালো দিক।

এ ছাড়া শিল্প-কারখানায় বিদ্যুতের যে সমস্যা ছিল তা অনেকটাই পূরণ হয়েছে। ফলে উন্নয়নশীল দেশে যোগ্যতা অর্জন এখন শুধু উদ্যোগ নিলেই এগিয়ে যেতে হবে।

নিয়ম অনুযায়ী সিডিপির স্বীকৃতি অর্জনের পর তিন বছর অপেক্ষা করতে হয়, কিন্তু আমরা ২০২৬ সাল পর্যন্ত সময় পাচ্ছি। বাড়তি সময় আমাদের জন্য একটি বড় সুযোগ। প্রস্তুতি পর্বে এই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।

কীভাবে কাজে লাগাতে হবে সেটা সরকার নির্ধারণ করবে। তবে অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বাড়তি সুবিধা দেবে। সরকার এই পরিকল্পনা কীভাবে, কাদের সঙ্গে সমন্বয় করে বাস্তবায়ন করবে সেটি নির্ধারণ করতে হবে।

বাংলাদেশের জন্য বিনিয়োগ একটি বড় চ্যালেঞ্জ। উন্নয়নশীল দেশের যোগ্যতা অর্জনের মাধ্যমে বাড়তি বিনিয়োগ পাব এটা প্রত্যাশা করা যায়। কিন্তু কোনো বিদেশি প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি যখন বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আসে, তাকে যদি ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়, তাহলে এ অর্জন বিনিয়োগের বাধা হয়ে দাঁড়াবে।

এ জন্য বিনিয়োগের সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান করতে হবে। বর্তমানের সমস্যাগুলো থেকে গেলে প্রথম দিকে বিনিয়োগ আসলেও পরবর্তীতে তা স্থায়ী হবে না। তাই, প্রস্তুতিপর্বে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমাধানের দিকে যেতে হবে।

স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শুল্কমুক্ত সুবিধা পেয়েছে। উন্নয়নশীল দেশের যোগ্যতা অর্জন করায় এখন চাইলেই এ সুবিধাগুলো পাওয়া যাবে না। একই সঙ্গে স্বল্প সুদে ঋণ, দাতা গোষ্ঠীর কাছ থেকে সহায়তা, কোটা ও শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়া যাবে না। ফলে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এগুলো নিয়ে ভাবতে হবে।

যেসব দেশের বাণিজ্যসুবিধা হারাব সেসব দেশের সঙ্গে এখনই আলোচনা করতে হবে। তাদের সঙ্গে প্রয়োজনে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তিসহ বাণিজ্যসুবিধা পাওয়া যাবে, এমন বিষয়গুলো সামনে নিয়ে আসতে হবে।

এখন যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তা হচ্ছে দক্ষ শ্রমিক। দক্ষ শ্রমিক ছাড়া কোনোভাবেই উৎপাদন খরচ কমানো সম্ভব না। আমাদের দেশে গার্মেন্টসে প্রচুর শ্রমিক আছে। কিন্তু তাদের মধ্যে দক্ষ শ্রমিক নেই বললেই চলে। দক্ষ শ্রমিকের জন্য বিদেশিদের উপর নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে এখনও।

মীর নাসির হোসেন, সাবেক সভাপতি এফবিসিসিআই

সাক্ষাৎকার নিয়েছেন, সাখাওয়াত হোসেন সুমন

এ বিভাগের আরো খবর