স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ। স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশের সামনে আরও অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। যেসব চ্যালেঞ্জ সামনে আসবে সেগুলো সরকারের পক্ষে এককভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। সবাই সম্মিলিতভাবে কাজ করলেই সম্মানের এই অর্জনের সুফল পাওয়া যাবে বলে মন্তব্য করেছেন তৈরি পোশাক কারখানা মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী (পারভেজ)।
‘বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নতুনভাবে বিশ্বদরবারে তুলে ধরেছে এই অর্জন। স্বাধীনতার ৫০ বছরে উন্নয়নশীল দেশের তালিকাভুক্ত হওয়া আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। বিশ্বদরবারে বাংলাদেশের রেটিং বাড়বে। বৈদেশিক বিনিয়োগ বাংলাদেশে আনা সহজ হবে।’
টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস শিল্পের সঙ্গে যুক্ত আনোয়ার পারভেজ একাধারে ইভেন্স গ্রুপের চেয়ারম্যান।
দেশের গার্মেন্টস শিল্প এখনও অনেক দেশ থেকে কোটা ও শুল্কমুক্ত সুবিধা পেয়ে আসছে। উন্নয়নশীল দেশের যোগ্যতা অর্জনে বিদ্যমান সুবিধা থেকে বাংলাদেশ বঞ্চিত হলে সমাধান কী হতে পারে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘উন্নয়নশীল দেশের তালিকাভুক্ত হওয়ায় আমাদের অনেক সুযোগসুবিধা এখন ছাড় দিতে হবে। এ জন্য আমরা যেসব দেশ থেকে কোটামুক্ত, শুল্কমুক্ত সুবিধা পেয়ে আসছিলাম, সেসব দেশের সঙ্গে দ্রুত দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি করতে হবে। আমাদের জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তর করতে হবে।’
এ জন্য প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘একমাত্র প্রশিক্ষণের মাধ্যমেই এটা সম্ভব। সরকারকে এ জন্য অ্যাকশন-প্ল্যান তৈরি করতে হবে।’
‘আমরা ক্রমশ চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের দিকে যাচ্ছি। আমরা প্রতিযোগিতামূলক বাজারেও প্রবেশ করেছি। যেখানে টিকে থাকতে হলে উন্নত প্রযুক্তির প্রয়োজন। দক্ষ জনবল প্রয়োজন।’
বাংলাদেশ ২০১৮ সালে প্রথম দফায় স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের যোগ্যতা অর্জন করে। তারপর নিয়ম অনুযায়ী জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসির (সিডিপি) দুটি ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা সভায় উন্নয়নশীল দেশের যোগ্যতা অর্জনের স্বীকৃতি পেতে হয়।
তারই ধারাবাহিকতায় জাতিসংঘের সিডিপির দ্বিতীয় দফার বৈঠকেও বাংলাদেশ প্রতিটি সূচকেই প্রয়োজনীয় মানদণ্ডের যোগ্যতা অর্জন করেছে।
স্বীকৃতি পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির জন্য তিন বছর অপেক্ষা করতে হয়। সে অনুযায়ী ২০২৪ সালে এলডিসি থেকে বের হওয়ার কথা বাংলাদেশের।
করোনা মহামারির প্রভাব কাটিয়ে ওঠাসহ সব প্রক্রিয়া সহজভাবে সম্পন্ন করতে বাড়তি দুই বছর সময় পেয়েছে বাংলাদেশ।
আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী (পারভেজ) বলেন, এটা আমাদের জন্য খুবই ভালো হয়েছে যে আমরা বাড়তি দুই বছর সময় পেয়েছি। আমাদের এটা মনে রাখতে হবে সময় চলে যায়। তাই সময় পাওয়া গেছে এ জন্য অপেক্ষা করে বসে থাকলে হবে না। আমাদের কর্মপরিকল্পনাগুলো এখনই চূড়ান্ত করে বাস্তবায়নে নেমে যেতে হবে।’