মহামারির মধ্যে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা দিতে সরকারের প্রণোদনা তহবিল থেকে কম সুদে নেয়া ঋণ পরিশোধে পোশাকশিল্প মালিকদের আরও সময় দেয়া হয়েছে।
ছয় মাসের গ্রেস পিরিয়ডসহ দুই বছরে ১৮টি সমান কিস্তিতে এই টাকা পরিশোধ শুরু করার কথা ছিল চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে। এখন তারা আগামী আগস্ট পর্যন্ত সময় পেলেন।
বুধবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা হয়।
নির্দেশনাটি সব তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীর কাছে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু নির্দেশনাটি ১ মার্চ ২০২১ সাল থেকে কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে। অর্থাৎ চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত এ সুবিধা বহাল থাকবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এই নির্দেশনায় খুশি পোশাক কারখানা ডিজাইন অ্যান্ড সোর্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) জাহাঙ্গীর আলম। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘জানুয়ারি থেকেই ঋণ পরিশোধ শুরু করতে হয়েছিল কারখানার মালিকদের। অনেকেই ফেব্রুয়ারি মাসের কিস্তিও পরিশোধ করে দিয়েছেন। কিন্তু রপ্তানি পরিস্থিতি খারাপ থাকায় শিল্পমালিকদের পক্ষে এখনই এই ঋণ পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছিল না। আরও সময় দেয়াতে তাদের সুবিধা হলো।’
তবে মোট ১২ মাস গ্রেস পিরিয়ড ছাড়া ১৮টি মাসিক কিস্তিতে ঋণ পরিশোধের শর্ত বহাল থাকবে। এই ঋণের অন্যান্য শর্তও অপরিবর্তিত থাকবে।
এর আগে ঋণ পরিশোধের জন্য গ্রেস পিরিয়ডের সময় ছয় মাস থেকে বাড়িয়ে এক বছর করতে সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি পাঠায় অর্থ মন্ত্রণালয়।
করোনা মহামারির মধ্যে গত বছর বড় ধরনের ধাক্কা খায় অর্থনীতি। সেই ধাক্কা সামলে উঠতে বিভিন্ন খাতের জন্য প্রণোদনা ঘোষণা করে সরকার।
অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের জন্য সরকার এখন পর্যন্ত ১ লাখ ১১ হাজার ১৩৭ কোটি টাকার ২০টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে।
এর মধ্যে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রথম প্যাকেজটিই ছিল রপ্তানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানের শ্রমিক-কর্মচারীদের মজুরি ও বেতন দেয়ার জন্য।
এ প্যাকেজের আওতায় নেয়া ঋণের জন্য মাত্র দুই শতাংশ সার্ভিস চার্জ নির্ধারণ করে দেয় সরকার।
১ হাজার ৯৯২ পোশাকশিল্পের ৩৫ লাখ শ্রমিক-কর্মচারীকে এ তহবিল থেকে ৪ হাজার ৯৩৫ কোটি ১৯ লাখ টাকা ঋণ দেয়া হয়।