তথ্য গোপন করে ৩৫ কোটি টাকার বেশি মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বড় ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি ডেল্টা লাইফের বিরুদ্ধে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট নিরীক্ষা ও তদন্ত অধিদপ্তরের এক তদন্তে এ ফাঁকি উদঘাটন করা হয়। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির বিরুদ্ধে মামলা করেছে ভ্যাট গোয়েন্দা অফিস কর্তৃপক্ষ।
ভ্যাট নিরীক্ষা ও তদন্ত অধিদপ্তরের ডিজি ড. মইনুল খান নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ ওঠার পরিপ্রেক্ষিতে গুলশানে কোম্পানির প্রধান কার্যালয় ডেল্টা লাইফ টাওয়ারে ভ্যাট গোয়েন্দা অফিসের একটি বিশেষ দল অভিযান চালায়।
ভ্যাট গোয়েন্দার সহকারী পরিচালক সায়মা পারভীন অভিযানে নেতৃত্ব দেন। গোয়েন্দা কর্মকর্তরা বলেন, অভিযান চলাকালে ডেল্টা লাইফের ২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জব্দ করা হয়।
এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক প্রতিবেদন, ভ্যাট চালান এবং বিভিন্ন সময়ে প্রতিষ্ঠান কর্তৃক জমাকৃত ট্রেজারি চালানের কপি ও অন্যান্য দলিল আটক করা হয়। এসব ডুকমেন্ট যাচাই করে ভ্যাট ফাঁকি উদঘাটন করা হয়।
তদন্ত দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি স্বাস্থ্য বিমার উপর মাত্র ৪০ লাখ ৫৫ হাজার টাকা ভ্যাট পরিশোধ করেছে। অথচ পরিশোধের কথা ছিল ১০ কোটি ২১ লাখ টাকা। প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করে ওই পরিমাণ ভ্যাট ফাঁকি দেওয়া হয়েছে।
কোম্পানির বার্ষিক প্রতিবেদন পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, উৎসে ভ্যাট বাবদ ৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা ফাঁকি দেয়া হয়েছে। সময়মতো সরকারি কোষাগারে ভ্যাট জমা না দেয়ায় দুই শতাংশ জরিমানা দেয়ার বিধান রয়েছে। সে হিসাবে উৎসে ভ্যাট বাবদ মোট ফাঁকি দেয়া হয়েছে ৫ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।
এ ছাড়া কোম্পানিটি স্থাপনার ভাড়ার বিপরীতেও ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে বলে জানান কর্মকর্তারা। তদন্তে দেখা যায়, ভাড়া বাবদ ২ কোটি টাকার বেশি ভ্যাট ফাঁকি দেয়া হয়েছে।
ভ্যাট কর্মকর্তরা বলেন, জরিমানাসহ কোম্পানি মোট ৩৫ কোটি ১৭ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। এর মধ্যে আসল ১৬ কোটি ১৭ লাখ টাকা। বাকি ১৮ কোটি টাকা জরিমানা।
ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের ডিজি ড. মইনুল খান জানান, ডেল্টা লাইফ ভ্যাট ফাঁকির উদ্দেশ্যে নানা ধরণের জালিয়াতি ও মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে, যা ভ্যাট আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।