চলতি সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেন শুরু হয়েছে পতন দিয়ে।
সোমবার শুরুর কয়েক মিনিটের মধ্যে সূচক কমেছে ১৪ পয়েন্ট। সপ্তাহের শুরুতে রোববার গত দুই বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৪২ পয়েন্ট কমে পুঁজিবাজারে। আজও সেই ধারা অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে সোমবার তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর দিকে নজর ছিল বিনিয়োগকারীদের। রোববার রাতে এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তফসিলি ব্যাংকগুলোর তারল্য রক্ষায় লভ্যাংশ দেয়ার সীমা বেঁধে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সেই সীমা অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের ব্যাংক ২০২০ সালের আর্থিক হিসাবের ভিত্তিতে সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ নগদ ও ৩০ শতাংশ বোনাস শেয়ার দিতে পারবে। এ জন্য ব্যাংকের প্রভিশন সংরক্ষণসহ অন্যান্য খরচ বাদে ১৫ শতাংশ বা তার বেশি মূলধন সংরক্ষণ করতে হবে।
এ ছাড়া ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে ব্যাংকের ন্যূনতম মূলধন ক্যাপিটাল কনজারভেশন বাফার বিবেচনায় সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ নগদ ও ৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পারবে। তবে এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন লাগবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।
গত বছরের মে মাসে আরেক প্রজ্ঞাপনে ব্যাংকগুলোর মুনাফা যথাসম্ভব অবণ্টিত রেখে মূলধন শক্তিশালী করতে বলা হয়েছিল।
সচরাচর পুঁজিবাজারে বিমা বা অন্য খাতের জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার কোনো বিজ্ঞপ্তি দেয়ার পরের দিন পুঁজিবাজারে সেই খাতের শেয়ারের দাম বাড়তে দেখা যায়। কিন্তু বিপরীত অবস্থায় ব্যাংক খাত। সোমবার লেনদেন শুরুর ১ ঘণ্টায় এ খাতের প্রতি অতিরিক্ত কোনো আগ্রহ দেখা যায়নি বিনিয়োগকারীদের।
লেনদেনের প্রথম এক ঘণ্টায় তালিকাভুক্ত ৩০ ব্যাংকের মধ্যে মাত্র ৯টির শেয়ারের দর বেড়েছে। কমেছে ১৯টির।
লেনদেনের শুরুর পর বিনিয়োগকারী আব্দুর রহমান নিউজবাংলাকে জানান, করোনার কারণে ব্যাংকের প্রচুর তারল্য জমে আছে। ব্যাংকগুলো চাইলে এ বছর বিনিয়োগকারীদের আরও বেশি হারে লভ্যাংশে দিতে পারত।
তিনি বলেন, ‘ব্যাংকের বোনাস লভ্যাংশের চেয়ে নগদ লভ্যাংশ এখন বেশি জরুরি। এমনিতেই বিনিয়োগকারীদের ব্যাংকের শেয়ারের প্রতি অনীহা। তারপর ভালো লভ্যাংশ দিতে না পারলে বিনিয়োগে আগ্রহ আরও কমবে।’
এ বিষয়ে ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পুঁজিবাজার খুবই সংবেদনশীল জায়গা। যেকোনো খবর খুব দ্রুত পুঁজিবাজারকে প্রভাবিত করে।’
যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, তা দেশের সার্বিক ব্যাংক খাতকে সুরক্ষা দেয়ার জন্যই করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
সোমবার লেনদেনের শুরুতে এগিয়ে রয়েছে বেক্সিমকো লিমিটেড, যার ৪০ লাখের বেশি শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩০ কোটি টাকায়। ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ লিমিটেডের ১ লাখ ১১ হাজার শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৭ কোটি টাকায়।
এ ছাড়া রবির ৩১ লাখ শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৩ কোটি টাকায়। এ তালিকায় রয়েছে লংকাবাংলা ফিন্যান্স, বেক্সিমকো ফার্মা ও মীর আকতার হোসাইন লিমিটেড।
সূচক ও লেনদেন
লেনদেনের প্রথম এক ঘণ্টায় ডিএসই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৪ দশমিক ২৮ পয়েন্ট কমে ঠেকেছে ৫ হাজার ৪৯০ পয়েন্টে।
শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস ২ দশমিক ৬৫ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৩৮ পয়েন্টে। বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক ১০ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫৯ পয়েন্টে।
এ সময়ে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ৯৩টির, কমেছে ১১৭টির। অপরিবর্তিত রয়েছে ৯৭টি। লেনদেন হয়েছে ১৮৪ কোটি টাকা।
এদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৯০ দশমিক ৯২ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৮২৫ পয়েন্টে। লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১১টির, কমেছে ৪৯টির; পাল্টায়নি ১১টির। এ সময়ে মোট লেনদেন হয়েছে ছয় কোটি টাকা।