করোনাভাইরাসের মধ্যে কঠিন এক পরিস্থিতিতে হতে যাচ্ছে দেশের ব্যবসায়ীদের প্রভাবশালী সংগঠন পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি বা বিজিএমইএর নির্বাচন।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাবে এখনও অনিশ্চয়তা রয়েছে পোশাক শিল্পে। ফলে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এ নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। এ ছাড়া এবারের নির্বাচনটি হবে অত্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। কারণ অতীতের সমঝোতা প্রথা পরিহার করে অনেক বছর পর সদস্যদের সরাসরি ভোট হবে।
মূলত ২০১৫ সালের পর থেকে সমঝোতার ভিত্তিতে বিজিএমইএর নেতা নির্বাচিত হয়ে আসছে। আসন্ন নির্বাচনে বিজিএমইএর সদস্যরা সরাসরি ভোট দিয়ে তাদের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন। ৪ এপ্রিল হবে নির্বাচন।
নির্বাচনকে সামনে রেখে জমে উঠেছে প্রচারণা। তারই অংশ হিসেবে শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ব্যবসায়ীদের জোট ফোরাম।
এতে সংগঠনের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট এ বি এম শামসুদ্দিনকে ফোরামের প্যানেল নেতা হিসেবে আনুষ্ঠিকভাবে ঘোষণা করা হয়। বর্তমান প্রেসিডেন্ট ড. রুবানা হক ফোরামের প্যানেল সদস্য হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
যোগাযোগ করা হলে ফোরামের প্যানেল নেতা এ বি এম শামসুদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাবে রপ্তানি আয়ের সবচেয়ে বড় খাত পোশাক শিল্প বড় ধরনের অনিশ্চয়তায় পড়েছে। এই সংকট কাটিয়ে উঠে পোশাক খাতকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই হবে আমাদের প্রধান কাজ।’
অনুষ্ঠানে বিজিএমইএর সাবেক প্রেসিডেন্ট আনোয়ার উল আলম পারভেজ চৌধুরী, আনিসুর রহমান সিনহা, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট বেনজীর আহমেদ, বিজিএমইএর পরিচালক খন্দকার বেলায়েত হোসেনসহ ফোরামের শীর্ষ নেতা, বিজিএমইএ সদস্য এবং শিল্প উদ্যোক্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ নির্বাচনে পোশাক ব্যবসায়ীদের জোট ফোরাম ছাড়াও আরও দুটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এগুলো হলো সম্মিলিত পরিষদ এবং স্বাধীনতা পরিষদ।
সম্মিলিত পরিষদকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন জিয়ান্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক হাসান।
অন্যদিকে স্বাধীনতা পরিষদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ডিজাইন অ্যান্ড সোর্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম।
অনুষ্ঠানে এ টি এম শামসুদ্দিন বলেন, ‘দেশের পোশাক খাত ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। তবে আশার কথা হলো করোনা টিকা চলে এসেছে। ঝড় সামলাতে সামলাতে ২০২১ সাল পেরিয়ে যাবে। এসব মোকাবিলা করতে গিয়ে আমাদের কিছু বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হবে। সংঘবদ্ধ হয়ে এই প্রতিকূলতা মোকাবিলা করতে হবে।’
প্রতি দুই বছর পর বিজিএমইএর নির্বাচন হয়। এর সদস্য প্রায় সাড়ে ৪ হাজার। ৪ এপ্রিল সাধারণ সদস্যের ভোটে ৩৫ জন পরিচালক নির্বাচিত হবেন। পরিচালকেরা একজন সভাপতি এবং সাত জন সহসভাপতি নির্বাচন করবেন।
প্রথম বারের মতো এবার ঢাকা অঞ্চলের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে সংগঠনের অফিসের বাইরে। হোটেল র্যাডিসনে ভোট হবে। উত্তরায় বিজিএমইএর নতুন ভবনের অবকাঠামো নির্মাণ এখনও শেষ হয়নি। এ কারণে অফিসের বাইরেই নির্বাচন করতে হচ্ছে। চট্টগ্রাম অঞ্চলে যথারীতি সংগঠনের নিজস্ব ভবনেই নির্বাচন হবে।
অনুষ্ঠানে ড. রুবানা হকের নেতৃত্বাধীন বিজিএমইএ বোর্ডের বিভিন্ন সাফল্য নিয়ে ভিজ্যুয়াল প্রেজেন্টেশন দেয়া হয়।