ভারতের পাশাপাশি স্বাদে গন্ধে অতুলীয় বাসমতি চালের ওপর জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন (জিআই) বা ভৌগোলিক নির্দেশকের স্বীকৃতি পেয়েছে পাকিস্তানও।
এতে বিশেষ ধরনের এই চালের ওপর পাকিস্তানের মেধাসত্ব প্রতিষ্ঠিত হলো। বিশ্ব বাজারে পণ্যটির ওপর নিজেদের মেধাসত্ব নিশ্চিতে আইনী উদ্যোগও নিতে পারবে দেশটি।
এতদিন বাসমতিকে কেবল নিজেদের উৎপাদিত চাল বলে দাবি করে আসছিল ভারত। আন্তর্জাতিক বাজারে এই চালের দাম বেশি হওয়ায় ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে তা রপ্তানিতে ইসলামাবাদকে ব্লক করার চেষ্টা চালায় তারা।
নয়াদিল্লি বলে আসছিল, বাসমতি চালের ভৌগোলিক উৎপত্তি কেবল তাদের দেশেই।
ভারতের এসব দাবির চ্যালেঞ্জ জানায় পাকিস্তান। দেশটি থেকে জানানো হয়, শুধু ভারত নয় বাসমতি চাল পাকিস্তানেও উৎপাদিত হয়। পরে এই চালের জিআই স্বীকৃতি পেতে আবেদন করে ইসলামাবাদ।
বাসমতি চালের জিআই স্বীকৃতি পাওয়া নিয়ে টুইট করেছেন পাকিস্তান সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা আব্দুল রাজ্জাক দাউদ।
তিনি লিখেছেন, ‘এটা জানাতে পারায় আমি আনন্দিত যে, জিওগ্র্যাফিক্যাল ইন্ডিকেশন অ্যাক্ট ২০২০ অনুযায়ী, বাসমতি চালের জিওগ্র্যাফিক্যাল ইন্ডিকেশন (জিআই) নিবন্ধন করেছে পাকিস্তান।’
পৃথক আরেকটি টুইটারে দাউদ জানান, এই স্বীকৃতি তাদের পণ্যের অপব্যবহার বা অনুকরণ এবং আন্তর্জাতিক বাজারে সুরক্ষা নিশ্চিত করবে। পাকিস্তানের আরও কোনো পণ্যের মেধাসত্ব নিশ্চিতে জিআই নিবন্ধনভুক্ত করা যায় কি না এ ব্যাপারে জনগণের কাছে পরামর্শও চান তিনি।
বাসমতি চালের ভৌগোলিক স্বীকৃতি পেয়ে আনন্দিত পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ।
বাসমতি চালের ভৌগোলিক নির্দেশকের স্বীকৃতি পেতে পাকিস্তানের সব মহল একত্রে কাজ করেছে। দেশটির চাল রপ্তানি অ্যাসোসিয়েশন (আইএপি) জানিয়েছে, এ ব্যাপারে সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হয়েছে।
বাসমতি চালের জিআই স্বীকৃতি পেতে পাকিস্তানের বাণিজ্য ও উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (টিডিএপি) আবেদনকারী হিসেবে নিযুক্ত করে কেন্দ্রীয় সরকার।
এরপর ইন্টেলেকচ্যুয়াল প্রোপার্টি অর্গানাইজেশনে (আইপিও) আবেদন করে টিডিএপি। তথ্য যাচাইয়ে আইপিও পাকিস্তানের ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ও আইএপি থেকে তথ্য নেয়।
পাকিস্তানে কোন কোন অঞ্চলে বাসমতি চাল উৎপাদিত হয় সেসব এলাকা নির্দেশিত করা হয়েছে সবগুলো প্রদেশ থেকে মতামত নিয়ে। সবার অংশগ্রহণে এই চালের জিআই সনদ নিশ্চিত প্রক্রিয়া খুব নিখুঁত ছিল বলে জানিয়েছে দেশটির চাল রপ্তানিকারকদের সংগঠন।