বিনিয়োগকারীদরে জন্য নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করে তা বণ্টন করেনি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রকৌশল খাতের কোম্পানি সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ।
কোম্পানিটি ২০১৯ সালে ৩০ জুনে সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য যে ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছিল।
২০১৪ সালে তালিকাভুক্তির বছরে লভ্যাংশ ঘোষণা করলেও পরের তিন বছর লোকসানের কারণে কোনো লভ্যাংশ দিতে পারেনি কোম্পানিটি।
এরপর পরিচালনা পর্ষদে পরিবর্তন আনার পর মুনাফা দেখিয়ে ২০১৮ সালে ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার দেয় সুহৃদ।
ওই বছর কোম্পানির শেয়ার দরে উল্লম্ফন হয়। আট টাকার শেয়ারের দর উঠে ৪০ টাকার বেশি। পরের বছরের ২০১৯ সালের ৩ নভেম্বর ঘোষণা করা হয় ১০ শতাংশ অর্থাৎ শেয়ার প্রতি এক টাকা নগদ লভ্যাংশ।
কিন্তু সেই টাকা বিনিয়োগকারীদেরকে আয় দেয়নি সৃহৃদ। যদিও ডিএসইর ওয়েসাইটে কোম্পানিটি ২০২০ সালের ২৮ জানুয়ারি বিনিয়োগকারীদেরকে কুরিয়ার সার্ভিসে করে ডিভিডেন্ড ওয়ারেন্ট পাঠানোর কথা জানায়।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো এখন নগদ লভ্যাংশ বিএফটিএনের মাধ্যমে সরাসরি ব্যাংকে পাঠিয়ে দেয়। সেখানে সুহৃদ সনাতন পদ্ধতিতে কুরিয়ারে করে কেন লভ্যাংশ পাঠালো, তা নিয়ে সে সময়ই প্রশ্ন উঠে।
পরে জানা যায়, আসলে কোম্পানিটি লভ্যাংশ পাঠায়নি।
এজন্য ডিপজিটরি আইন ১৯৯৯ এর ১৩ ধারা অনুযায়ী তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন-বিএসইসি।
বুধবার বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের সভাপতিত্বে ৫৭৯তম নিয়মিত সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
পরে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে বিএসইসি সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজের ৩০ জুন ২০১৯ এবং ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ সময়ের আর্থিক প্রতিবেদন বিশেষ অডিটের সিদ্ধান্ত নেয়। একই সঙ্গে কোম্পানির ব্যাংক হিসাব ও পরিচালকদের বিও হিসেব জব্দ করা হয়।
বিষয়টি নিয়ে জানতে সুহৃদের ওয়েবসাইটে দেয়া ফোন নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও কেউ ফোন ধরেননি।
পুঁজিবাজারের সবশেষ হিসাবে চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিতে সুহৃদের শেয়ার প্রতি মুনাফা হয়েছে এক টাকা ৮৯ পয়সা।
বুধবার কোম্পানিটির শেয়ারের মূল্য দাঁড়ায় ২১ টাকা ৭০ পয়সা।
৫৭ কোটি ৩৬ লাখা পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানিটিতে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের শেয়ার সংখ্যা মাত্র ১২.০১ শতাংশ। যদিও এসইসির নির্দেশনা আছ ৩০ শতাংশ শেয়ার রাখার।
প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে আছে ১৮ দশমিক ৯৫ শতাংশ শেয়ার এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ৬৯.০৪ শতাংশ শেয়ার আছে।