পুঁজিবাজারের তারল্য বাড়াতে এবার এক বিলিয়ন ডলার বা আট হাজার পাঁচশ কোটি টাকার বন্ড আনছে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশকে-আইসিবি।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন-বিএসইসি ও আইসিবির একাধিক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তারা জানান, সুইজারল্যান্ডভিত্তিক একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান এ বন্ডে বিনিয়োগ করবে।
এই বন্ডের মাধ্যমে উত্তোলন করা টাকা দিয়ে পুঁজিবাজারে যেসব ব্রোকার হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংক মার্জিন ঋণ সুবিধা দিচ্ছে তাদের ঋণ সহায়তা প্রদান করা হবে।
ঋণের সুদের হার হবে আট থেকে নয় শতাংশ।
সিকিউরিটিজ মার্কেটের উন্নয়নে আইসিবি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। বর্তমানে আইসিবির তিনটি সাবসিডিয়ারি কোম্পানি মাধ্যমে সেবা প্রদান করা থাকে।
এগুলো হচ্ছে আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড-আইসএমএল, আইসিবি এ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড-আইএএমসিএল, আইসিবি সিকিউরিটিজ ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেড-আইএসটিসিএল।
পুঁজিবাজারে কারসাজি বন্ধ করতে সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে আইসিবিকে শক্তিশালী করার উদ্যোগের কথা জানান বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল- ইসলাম।
এক দশক আগে ধসের পর পুঁজিবাজারকে চাঙ্গা করতে বিএসইসির নেতৃত্ব নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। বাজারে তারল্য বাড়াতে তারা সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ১৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল চেয়ে চিঠি দেয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।
বিএসইসি আরও বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে যার মধ্যে আছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির অবণ্টিত মুনাফা ব্যবহার। বছরের পর বছর স্থগিত বিভিন্ন বিও হিসাবের বিপরীতে প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকার মুনাফা অবণ্টিত আছে। এই অর্থ পুঁজিবাজার উন্নয়নে ব্যবহার করতে চায় বিএসইসি।
বিএসইসি চেয়ারম্যান জানান, মুনাফার অর্থ তারা ব্যবহার করবেন। বিনিয়োগকারীদের কেউ সঠিক কাগজপত্র নিয়ে এলে তিনি তার টাকা নিয়ে যেতে পারবেন।
বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল- ইসলাম ২০২২ সালের মধ্যে শক্তিশালী পুঁজিবাজারের প্রত্যাশা করছেন
এই তহবিল সঠিকভাবে ব্যবহার করার জন্য ‘ফাইনানসিয়াল টুলস’ও তৈরি করা হয়েছে।
২০১০ সালের মহাধসের পর গত ডিসেম্বর থেকে পুঁজিবাজারে আবার চাঙ্গাভাব নিয়ে আশাবাদী হয়ে উঠেছে বিনিয়োগকারীরা। বিএসইসির বেশ কিছু সিদ্ধান্তের পর এক মাসেরও বেশি সময় ধরে টানা এক হাজার কোটি টাকার বেশি লেনদেন হচ্ছে ডিএসইতে।
মাঝে পাঁচ দিন লেনদেন হয়েছে দুই হাজার কোটি টাকার। ২০১০ সালের পর এত বেশি লেনদেন এর আগে কখনও হয়নি।
চলতি সপ্তাহে বাজার অনেকটা গতি হারালেও পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ আবু আহমেদের মতে, এটি বাজারের স্বাভাবিক সংশোধন।
গত ডিসেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত পুঁজিবাজারের সূচক বেড়েছে এক হাজার সাতশ পয়েন্টেরও বেশি।